দেশবিরোধী-ধর্মীয় উস্কানিতে অনলাইন সোশ্যাল মিডিয়া ফেসবুকের মতো শক্তিশালী প্রযুক্তি ব্যবহার না করারর আহ্বান জানিয়েছেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। তিনি বলেছেন, কোনো চক্রান্তে নয়; উইমেন অ্যান্ড ই-কমার্সের মতো ফেসবুক ব্যবহার করুন।
রবিবার নাটোরের সিংড়া উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে নাটোর আইটি/হাইটেক পার্কের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় বক্তব্য দেয়ার সময় এই আহ্বান জানান তিনি। এসময় দেশের প্রতিটি হাইটেক পার্ককে কেন্দ্র করে যেন অন্তত এক হাজার নারী ই-কমার্স উদ্যোক্তা তৈরি হতে পারে সে লক্ষ্যে বিদ্যমান প্রকল্পে একটি প্রশিক্ষণ কর্মসূচি চালুর ইচ্ছে প্রকাশ করেন প্রতিমন্ত্রী।
সততা, সাহসিকতা ও দূরদর্শিতা দিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত ১৩ বছরে দেশকে ডিজিটাল বাংলাদেশে পরিণত করেছেন উল্লেখ করে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি আরো বলেন, আইসিটি উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়ের তত্ত্বাবধানে আইসিটিখাতে বিভিন্ন কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণের ফলে দেশে সাড়ে ৬ লক্ষ ফ্রিল্যান্সার তৈরি হয়েছে। আইটি /আইটিএস খাতে ২০ লক্ষ তরুণ, তরুণীর কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে। বর্তমানে এ খাত থেকে ১. ৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার আয় হচ্ছে। দেশের তরুণ ফ্রিল্যান্সাররা ঘরে বসেই বৈদেশিক মুদ্রা আয় করছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা সকল সম্প্রদায়ের মানুষকে মেধা কাজে লাগানোর সুযোগ সৃষ্টি করে দিয়েছেন। যার পরিপ্রেক্ষিতে নাটোরের কিছু শিক্ষার্থী মঙ্গল গ্রহ থেকে মাটি আনার জন্য বোবটিংয়ের নকশা তৈরি করতে সক্ষম হয়েছেন।
হাইটেক পার্ক এর মাধ্যমে কীভাবে দেশে মানসম্পদ তৈরি হবে এবং রেমিটেন্স বাড়বে তার ব্যাখ্যা দিয়ে পলক বলেন, এখন আমাদের দেশের অনেক তরুণই ইউরোপ-আমেরিকা বা মধ্যপ্রাচ্যে গিয়ে গাড়ি চালায় কিংবা হোটেলে কাজ করে। তবে এই পার্কগুলোতে প্রশিক্ষণ দিয়ে আমরা তাদের এমনভাবে দক্ষ করবো যেনো তারা গাড়ি না চালিয়ে এখানে বসেই গাড়ির সফটওয়্যার বানাতে পারে। হোটেলের সার্ভার না হয়ে লন্ডন-আমেরিকার ম্যানেজমেন্ট সফটওয়্যার বানাবেন।
এই সুযোগ করে দিতেই সরকার হাইটেক পার্কের মাধ্যমে কাজ উদ্ভাবনী ও মেধাবী প্রজন্ম গড়ে তুলতে কাজ করছে উল্লেখ করে পলক আরো বলেন, আমার বিশ্ববিদ্যালয়ে যাওয়ার সুযোগ হয়নি। কিন্তু গত ১৩ বছরে জয় ভাই আমাকে হাতে-কলমে শিখিয়েছেন। ফলে জ্ঞানীদের সঙ্গে কাজ করার সুযোগ পাচ্ছি। কিন্তু আমার জন্ম চলন বিলে না হয়ে বোস্টনে হলে আমি হার্ভার্ড বা বোস্টনে পড়ে পলিটিশিয়ান না হয়ে বিজ্ঞানীও হতে পারতাম!
অনুষ্ঠানে সম্মানিত অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতের হাইকমিশনার বিক্রম কুমার দোরাইস্বামী বলেন, এই হাইটেক পার্ক দক্ষ মানবসম্পদ তৈরিতে অনবদ্য ভূমিকা পালন করবে। বাংলাদেশ -ভারত দুই দেশের সম্পর্ক আরো উন্নত ও সম্পর্ক সুদৃঢ় হবে। সেই লক্ষ্যে আইসিটি সেক্টরসহ অন্যান্য খাতে বাংলাদেশের সঙ্গে অংশীদারি বাড়ানোর বিষয়ে গুরুত্ব দিয়ে কাজ করার দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেন তিনি।
অদূর ভবিষ্যতে ভারত বাংলাদেশে তাদের সহযোগিতার ক্ষেত্র আরো প্রসারিত করবে বলে তিনি মন্তব্য করেন।
আইসিটি বিভাগের সিনিয়র সচিব এন এম জিয়াউল আলমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষ এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ডা. বিকর্ণ কুমার ঘোষ, নাটোর জেলার জেলা প্রশাসক শামীম আহমেদ ,প্রকল্প পরিচালক ফজলুল হক প্রমুখ।
বক্তব্য পর্ব শেষে স্থানীয় ভাবে ফ্রিল্যান্সিংয়ে বিশেষ অবদান রাখা ১১ তরুণকে একটি করে ল্যাপটপ দেয়া হয়। এসময় বাউয়েট উপাচার্য ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোস্তফা কামাল, রেজিস্ট্রার ড. মোশাররফ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।