বাংলাদেশকে সাইবার টুলস ও সল্যুশনে বিশ্বে নেতৃত্বে নিয়ে যেতে কাজ শুরু করেছে বাংলাদেশ। এ জন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এবং ইন্ডাস্ট্রিকে সহযোগিতায় প্রধানমন্ত্রীর আইসিটি উপদেষ্টার নিদের্শনায় ৪টি ডোমেইনে কাজ করছে আইসিটি বিভাগ। সাইবার সিকিউরিটি, আর্টিফিশিয়াল ইন্টিলিজেন্স, রোবটিকস ও মাইক্রো প্রসেসিং ডিজাইনে দেশে দক্ষ জনবল গড়ে তুলতে সর্বাধিক গুরুত্ব দিচ্ছে। এরই অংশ হিসেবে এমআইএসটিতে দেশের প্রথম সাইবার রেঞ্জ স্থাপন করা হলো বলে জানিয়েছেন আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক।
রবিবার (১০ এপ্রিল) রাজধানীর মিরপুর সেনানিবাসের মিলিটারি ইনস্টিটিউট অফ সায়েন্স এ্যান্ড টেকনোলজি (এমআইএসটি) ক্যাম্পাসে স্থাপিত এই রেঞ্জের উদ্বেধানী অনুষ্ঠানে দেয়া বক্তব্যে এমনটাই জানিয়েছেন প্রতিমন্ত্রী।
তিনি বলেন, দেশের সাইবার আকাশ ও ডিজিটাল অবকাঠামোর নিরাপত্তায় আত্মনির্ভরশীল হতে গত ২০ মার্চ একটি এক্সক্লুসিভ মিটিংয়ে মাননীয় উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয় ভাই ২০৪১ সাল নাগাদ বাংলাদেশ যেনো সাইবার টুলস ও সল্যুশনে বিশ্বে নেতৃত্ব দিতে পারে সেজন্যে একটি নির্দেশনা দিয়েছেন। এজন্য চারটি মূল ডোমেইনে আমরা সরকার-একাডেমিয়া-ইন্ডাস্ট্রি একসঙ্গে কাজ শুরু করেছি।
সাইবার নিরাপত্তা নিশ্চিতে আত্মতুষ্টিতে ভোগার সুযোগ নেই উল্লেখ করে পলক বলেন, এটা প্রতিক্ষণের যুদ্ধ। নিয়মিত সক্ষমতা অর্জনের বিকল্প নেই। তাই ২০১৯ সালে এমআইএসটিতে আমরা একটি সাইবার রেঞ্জ স্থাপনের পরিকল্পনা নেই। আজ এই রেঞ্জ উদ্বোধনের আগে আমরা এমআইএসটি টিমের সঙ্গে বৈঠক করে আমরা আমাদের বেশ কিছু সম্ভাবনা এবং ভবিষ্যত প্রয়োনীয়তার জায়গাগুলো চিহ্নিত করেছি।
এসময় আগামী ২০ বছরের মধ্যে সাইবার বিশ্বে নেতৃত্ব দিতে শিক্ষা ও প্রযুক্তিবিদদের প্রতি এখনই সাইবার এড্যুকেশন-কে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেয়ার আহ্বান জানান প্রতিমন্ত্রী।
তিনি বলেন, এখনই আমাদের এখনই কোয়ান্টাম কম্পিউটিংয়ের জায়গায় আমাদের সক্ষম করে গড়ে তুলতে হবে। কেননা, আগামী ১০০ বছরের পরিবর্তনে নেতৃত্ব দেয়ার সুযোগ আমরা হারাতে চাই না। আমরা চাই আগামী ২০৪১ সাল নাগাদ তথ্যপ্রযুক্তি খাত থেকে মোট প্রবৃদ্ধির অংশীদারিত্ব ১ শতাংশ থেকে ২০ শতাংশে উন্নীত করতে। এজন্য অবশ্যই এমআইএসটির মতো প্রতিষ্ঠানকে নেতৃত্ব দিতে হবে। এজন্য পাঠ্যক্রমের বাইরে এমআইএসটি, বিওআইপি এবং ড্যাফোডিলের মতো যেসব প্রতিষ্ঠান সাইবার এড্যুকেশন শুরু করেছে তাদের সাইবার রেঞ্জ, সাইবার ড্রিল ও সাইবার জিম এর মতো সিম্যুলেশন সেন্টার স্থাপন করতে হবে।
বিশ্বে ২০২১ সালে ৩৫ লাখ সাইবার সিকিউরিটি এক্সপার্টের চাহিদা ছিলো জানিয়ে তা পূরণে আইসিটি বিভাগ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর পাশে আছে বলে জানান জুনাইদ আহমেদ পলক। এজন্য সিএসই’র পাশাপাশি কম্পিউটার অ্যান্ড ইনফরমেনশন সিকিউরিটি বিষয় চালু করতে বিশ্ববিদ্যলয়গুলোকে নজর দেয়ার আহ্বান জানান তিনি।
তিনি বলেন, এই সুযোগটা কাজে লাগালে আমাদের বৈদেশিক আয় ট্রিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে যেতে বেগ পেতে হবে না। আমি তখনই আনন্দিত ও সন্তুষ্ট হবো যখন আমি দেখবো এমআইএসটি থেকে পাশ করা শিক্ষার্থীরা সারা পৃথিবীকে নেতৃত্ব দেবে। ওয়াল অফ ফেমে আমাদের দেশের শিক্ষার্থীদের নাম থাকবে।
এমআইএসটি রেক্টর মেজর জেনারেল মোঃ ওয়াহিদ-উজ-জামানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলের নির্বাহী পরিচালক ডঃ আব্দুল মান্নান এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল অনুষদ প্রধান আব্দুর রাজ্জাক অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন।
এছড়াও জতীয় সংসদের সংরক্ষিত নারী আসন-২ থেকে নির্বাচিত জাতীয় সংসদ সদস্য নাহিদ ইজাহার খান, হাইটেক কর্তৃপক্ষের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বিকর্ণ কুমার ঘোষ, বিজিডি ই গভ সার্ট পরিচালক তারেক মোসাদ্দেক বরকতউল্লাহ, ডিজিটাল লিটারেসি সেন্টারের প্রকল্প পরিচালক সাইফুল ইসলাম, এনহেন্সিং ডিজিটাল গভঃ অ্যন্ড ইকোনোমি প্রকল্প পরিচালক ড. মেহেদী হাসান, বেসিস জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি সামিরা জুবেরি হিমিকা প্রমুখ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।