সরাকরি পৃষ্ঠপোষকতায় প্রভাব বিস্তার করে পট পরিবর্তনের মুখে বাংলাদেশ থেকে ব্যবসা গুটিয়ে নিচ্ছে ভারতীয় প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান উইপ্রো। হঠাৎ করে প্রায় দেড় শতাধিক কর্মীকে চাকরিচ্যুত করার নোটিশ দিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। তবে প্রতিষ্ঠানটির বেশ কয়েকজন কর্মীর এমন অভিযোগের বিষয়ে সরাসরি মন্তব্য করতে রাজি হননি প্রতিষ্ঠানের প্রধান মানবসম্পদ কর্মকর্তা শাহরিয়ার তুষার।
এমন পরিস্থিতিতে বিগত বছরগুলোর ন্যায্য পাওনা আদায়ে ও সরকারের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন ভুক্তভোগীরা। কর্মীদের অভিযোগ, তাদেরকে দেওয়া প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী লং টার্ম ক্যারিয়ার ও গ্লোবাল সুযোগের বিষয়টি সামনে আনলেও মানবসম্পদ বিভাগ তাতে কর্ণপাত করেনি। হঠাৎ করে প্রায় দেড় শতাধিক কর্মীকে চাকরিচ্যুত করার নোটিশে কর্মীরা আপত্তি জানালেও কোন কাজ হয়নি। কর্মীরা ক্ষতিপূরণ দাবি করলেও এ ব্যাপারে তারা কোন দায়িত্ব নেবে না বলে জানিয়েছে।
অপরদিকে বিষয়টি খতিয়ে দেখতে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের মাধ্যমে দায়িত্ব নেওয়া অন্তবর্তী সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন খাত সংশ্লিষ্টরা। আলোচিত প্রতিষ্ঠানটির এতদিন ধরে পরিচালনা করা ব্যবসা বৈধ ছিল কিনা, এর মাধ্যমে তারা অর্থ পাচারে জড়িত ছিল কি না এবং দেশে টেলিকম সেবার মাধ্যমে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাচার হয়েছে কিনা সেটা পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে যাচাই করার দাবিও তুলেছেন তারা।
নাম প্রকাশের অনিচ্ছুক প্রতিষ্ঠানটির একাধিক কর্মী ক্ষব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে জানিয়েছেন, এতদিন ক্ষমতা প্রয়োগ করে উইপ্রো বাংলাদেশি কর্মীদের তাদের প্রাপ্য আইনসংগত ইনক্রিমেন্ট ও বোনাস থেকেও বঞ্চিত করে আসছিল। তাদেরকে বারবার বাংলাদেশের শ্রম আইন অনুসারে কর্মীদের সুযোগ সুবিধা নিশ্চিত করতে বলা হলেও তারা তাতে কর্ণপাত করেনি। উল্টো ক্ষমতার পট পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে টেলিকম অপারেটরটি উইপ্রোর সঙ্গে চুক্তি বাতিলের ঘোষণা দিয়ে বসে এবং সেই একই কর্মকর্তারা বিগত সরকারের আইসিটি খাতে লুটপাটে থাকা শীর্ষ কোম্পানিটির সঙ্গে নতুন করে ম্যানেজ সার্ভিস প্রদানের চুক্তি সম্পাদন করে। ত্রিপক্ষীয় এই যোগসাজশে উইপ্রো সুযোগ পেয়ে যায় বাংলাদেশ থেকে তাদের ব্যবসা গুটিয়ে নেয়ার। তারা কর্মীদের সবাইকে টার্মিনেশন নোটিশ পাঠিয়ে দেয়।
কর্মীরা জানান, উইপ্রোর ইন্ডিয়ান ম্যানেজমেন্ট সেখানে বসেই বাংলাদেশের ব্যবসা পরিচালনা করছিল। যার ফলে কর্মীরা যোগাযোগ করার জন্যও কাউকে সামনাসামনি পাচ্ছেনা। কথা বলার জন্য উইপ্রোর গুলশানস্থ অফিসে গেলে দেখা যায় সেখানে কেউ নেই। নিরাপত্তা প্রহরীর ভাষ্যমতে ম্যানেজমেন্টের কেউ এখানে আসেন না।