বিশ্ব নারী দিবসে শুক্রবার (৮ মার্চ) নারায়ণগঞ্জের ২৬৫ নারী উদ্যোক্তার হাতে প্রধানমন্ত্রীর উপহার হিসেবে একটি করে ল্যাপটপ তুলে দিলেন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। নারায়ণগঞ্জ সদর, আড়াইহাজার ও রূপগঞ্জ উপজেলার নারী আইটি সেবাদাতা, নারী ফ্রিল্যান্সার ও নারী কল সেন্টার এজেণ্ট ক্যাটাগরিতে এই ল্যাপটপগুলো দেয়া হয়েছে।
এর মাধ্যমে এখন পর্যন্ত তথ্যপ্রযুক্তির সর্বোত্তম নিরাপদ ব্যবহার করে নারীদের আত্মকর্মসংস্থানের ব্যবস্থা ও উদ্যোক্তা হিসেবে তাদের টেকসই ক্ষমতায়ন নিশ্চিতকল্পে এবং লিঙ্গভিত্তিক ডিজিটাল বৈষম্য কমিয়ে আনতে আইসিটি বিভাগের অধীন ‘প্রযুক্তির সহায়তায় নারীর ক্ষমতায়ন’ প্রকল্পের আওতায় ২৫ হাজার ১২৫ জন নারী উদ্যোক্তা হলেন একটি করে ল্যাপটপের মালিক।
ল্যাপটপ বিতরণের উদ্দেশ্য তুলে ধরে পলক বলেছেন, বর্তমান সময়ে যদি আমরা আমাদের বোনদের দক্ষ করে গড়ে তুলতে পারি এবং তারা একটা স্টার্ট-আপ যদি ফান্ড পায়। সেটা দিয়ে যদি স্টার্ট-আপ করতে পারে। আর প্রযুক্তির জন্য জননেত্রী শেখ হাসিনার উপহার একটি ল্যাপটপ পায়। তাহলে তারা আত্মনির্ভরশীল হবে। তাদের কারও ওপর নির্ভর হতে হবে না।
এসময় নারী প্রশিক্ষণাথীদেরকে প্রধানমন্ত্রীর উপহার ল্যাপটপ নিয়ে দেশের কল্যাণে তাদের দায়িত্ব ভালোভাবে পালন করে নিজেদের আরো ১০ জন উদ্যোক্তা তৈরির জন্য আহ্বান জানান প্রতিমন্ত্রী।
বিকেলে নারায়ণগঞ্জ শহরের কালিরবাজারে অবস্থিত জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে “নারী প্রশিক্ষণার্থীদের মাঝে ল্যাপটপ বিতরণী” অনুষ্ঠানে যোগ দেয়ার আগে নারায়ণগঞ্জে নির্মিয়মান শেখ কামাল আইটি ইনস্টিটিউটের কাজ পরিদর্শন করেন প্রতিমন্ত্রী। পরিদর্শনের আপডেট তুলে ধরে ল্যাপটপ বিতরণী অনুষ্ঠানে দেয়া প্রধান অতিথির বক্তব্যে জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, আমি আজকে আসার সময় শেখ কামাল আইটি ইনস্টিটিউটের কাজটি পরিদর্শন করে এসেছি। আগামী ছয় মাসের মধ্যে এটা দৃশ্যমান হবে। ছয় বছরের মধ্যে এখানে বিল্ডিং হবে। তখন হাজার ছেলে-মেয়ের কর্মসংস্থান হবে এখানে। নারায়ণগঞ্জের মাটি থেকে বসে তারা বড় বড় দেশের আউটসোর্সিং করবে। সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়তে তারা নেতৃত্ব দেবে।
প্রতিমন্ত্রী পলক আরো বলেন, আমি আজকে আসার সময় আমি নারায়ণগঞ্জে শেখ কামাল আইটি ট্রেনিং ও ইনকিউবেশন সেন্টার স্থাপনের কাজটি পরিদর্শন করে এসেছি। আগামী ছয় মাসের মধ্যে এটা দৃশ্যমান হবে এবং আগামী ৩ বছরের মধ্যে ১০ তলা বিল্ডিং হবে। তখন সেখান থেকে প্রতিবছর কমপক্ষে ৫ হাজার ছেলে-মেয়ের কর্মসংস্থান হবে। নারায়ণগঞ্জের মাটি থেকে বসে তারা বড় বড় দেশের আউটসোর্সিং করবে। সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়তে তারা নেতৃত্ব দেবে
নারায়ণগঞ্জ জেলার জেলা প্রশাসক মো. মাহমুদুল হক-এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন নারায়ণগঞ্জ -৪ আসনের সংসদ সদস্য এ কে এম শামীম ওসমান এমপি, নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের সংসদ সদস্য এ কে এম সেলিম ওসমান এমপি, নারায়ণগঞ্জ জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান চন্দন শীল, নারায়ণগঞ্জ জেলার পুলিশ সুপার গোলাম মোস্তফা রাসেল, আইসিটি অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মোস্তফা কামালসহ আরও অনেকে।
প্রসঙ্গত, প্রকল্পের মাধ্যমে সারাদেশব্যাপী ফ্রিল্যান্সিংকে অগ্রাধিকার দিয়ে ৪৩টি জেলার সদর উপজেলাসহ মোট ৩টি উপজেলা ও রংপুর জেলার পীরগঞ্জ উপজেলাসহ মোট ১৩০টি উপজেলায় তথ্য প্রযুক্তিতে নারীদের সক্ষমতা বৃদ্ধিতে চারটি ক্যাটাগরিতে (নারী ফ্রিল্যান্সার, নারী আইটি সেবাদাতা, নারী ই-কমার্স প্রফেশনাল ও নারী কল সেন্টার এজেন্ট) মোট ২৫,১২৫ জন নারীকে ৫ (পাঁচ) মাসব্যাপী প্রশিক্ষণ ও ১ মাসব্যাপী মেন্টরশীপ সহায়তা প্রদান করা হবে। এছাড়া সকল সফল প্রশিক্ষণার্থীদের একটি করে ল্যাপটপ প্রদান করা হবে। বর্তমানে ১৩০ টি উপজেলায় প্রথম পর্যায়ে ৪০৮ টি ব্যাচে ৮৪৬০ জনের প্রশিক্ষণ কার্যক্রম চলমান রয়েছে এবং পর্যায়ক্রমে প্রশিক্ষণার্থীদের মাঝে ল্যাপটপ প্রদান কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে।