পদ্মা সেতু আমাদের স্পর্ধা আর সাহসের নাম। আমাদের জয়ের প্রতীক। শত বাধা টপকে এগিয়ে যাওয়ার অদম্য সংকল্প। এই সংকল্পে বিজয়ে ডিজটাল মহাসড়ক হিসেবে বিবেচিত টেলিকম খাতও ঋদ্ধ হবে বলে মনে করেন ডাক ও টেলিযোগাযাগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার।
তিনি বলেছেন, স্বপ্নের পদ্মা বহুমুখী সেতু চালুর মাধ্যমে সারাদেশে ডিজিটাল কানেক্টিভিটিতে বড় ধরনের বিপ্লব ঘটবে। আমরা কুয়াকাটাতে একটা ল্যান্ডিং স্টেশন করেছি। এই স্টেশন থেকে বঙ্গবন্ধু সেতু দিয়ে সারাদেশে ইন্টারনেট কানেক্ট করতে হয়। এখন পদ্মা সেতু হওয়ার ফলে ইন্টারনেট ব্যান্ডউইথ কানেক্টিভিটির দূরত্বটা কমে যাবে। সেই সাথে ল্যাটেন্সিটাও কমে যাবে। ডাইরেক্টলি ইন্টারনেট কানেক্ট করা যাবে। এর ফলে আমরা ইন্টারনেটের যে গতিটা পেতাম, সেই গতি আরো বহুগুণ বেড়ে যাবে। এতদিন কুয়াকাটা থেকে সরাসরি দক্ষিণ বঙ্গের যে সম্প্রসারণটা দরকার ছিল, সেটা দূরত্বের কারণে সুবিধা হচ্ছিল না। এখন আমাদের জন্য একটা বড় সুযোগ তৈরি হবে।
তথ্যপ্রযুক্তিশিল্প বিকাশে দক্ষিণাঞ্চলের জেলাগুলির জন্য প্রস্তাবিত হাইটেক পার্কগুলি বিশেষ ভূমিকা রাখবে উল্লেখ করে টেলিযোগাযোগমন্ত্রী বলেন, যদি ডিজিটাল টেকনোলজির বিকাশের কথা বলি, যেমন ঢাকার আশপাশে কানেক্টেট জায়গাগুলিতে হাইটেকপার্কগুলি স্থাপন করা হচ্ছে। সারাদেশে জেলা পর্যায়ে করার পরিকল্পনা রয়েছে। দক্ষিণবঙ্গের জন্য যেসব হাইটেক পার্কগুলি প্রস্তাব করা হয়েছে, সেগুলোর ক্ষেত্রে ডিজিটাল টেকনোলজি ডিভাইসেস এবং সফটওয়্যার উন্নয়ন কেন্দ্রগুলো ব্যাপকভাবে প্রসারিত হবে। দক্ষিণাঞ্চলের জনগণ যে টেলিকমিউনিকেশন ও ইন্টারনেট সেবা পেত কিন্তু এর সাথে যেসব ফিজিক্যাল ফেসিলিটিসগুলি দরকার সেগুলি পেত না। এখন সেগুলো পাবে। আরেকটি বিষয় হলো, আমরা এখন দেশের মধ্যেই মাল্টিপল কানেকশন, রিডানডেন্সি ও ক্রস কানেক্টিভিটি করছি। এ জায়গাগুলোর ক্ষেত্রে পদ্মা সেতু ব্যাপকভাবে সহায়তা করবে। যেমন, আমি ঢাকা থেকে যে কানেক্টিভিটি করছি, সেটাকে আবার চট্টগ্রাম থেকে ডাইরেক্ট কানেক্ট করে ফেলতে পারব। স্বপ্নের পদ্মা সেতু শুধু তথ্যপ্রযুক্তি ও টেলিকমিউনিকেশন শিল্প বিকাশে প্রভাব ফেলবে না, এটা আমাদের জীবনের প্রতিটা ক্ষেত্রে সুদূরপ্রসারি প্রভাব বিস্তার করবে।
এদিকে পদ্মা সেতুকে দক্ষিণ এশিয়ায় আঞ্চলিক সংযোগের উন্নয়নে বাংলাদেশের নেতৃত্বের আরেকটি উদাহরণ হিসেবে অভিহিত করেছে যুক্তরাষ্ট্র। ঢাকাস্থ মার্কিন দূতাবাসের জারি করা একটি মিডিয়া নোটে বলা হয়েছে, “পদ্মা সেতু বাংলাদেশের অভ্যন্তরে নতুন এবং গুরুত্বপূর্ণ সংযোগ তৈরি করবে, বাণিজ্য বৃদ্ধি করবে এবং জীবনযাত্রার মান উন্নত করবে।”