ভারতীয় কূটনীতিকদের ভাষ্য অনুযায়ী আইসিটি-তে বাংলাদেশ যতটা এগিয়েছে ভারতও ততটা এগোয়নি। বাস্তব অভিজ্ঞতায় বেলজিয়াম ও কানাডার মন্ট্রিলের মতো পশ্চিমা অনেক দেশের চেয়ে বাংলাদেশের ইন্টারনেট ও মোবাইল সেবায় এগিয়ে গেছে। তবে যন্ত্রের ক্রমাগত ব্যবহারে আমরা যেন যন্ত্র হয়ে না যাই। পারিবারিক ও সামাজিক মূল্যবোধে যেন দরিদ্র না হই।
শনিবার (২২ জুন) ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির ৭১ মিলনায়তনে দিনব্যাপী ‘এমসিটি ক্যারিয়ার এক্সপো-২০১৯’ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তথ্যমন্ত্রী হাসান মাহমুদ।
তিনি বলেন, ইউটিউব, ফেসবুক ও নেটফ্লিক্স সহ সামাজিক মাধ্যমেও নান্দনিক উপস্থাপনায় আমরা ক্রমশ এনিমেশন সায়েন্সের ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়ছি।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, সারা পৃথিবী এখন চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের যুগে প্রবেশ করেছে। চুতুর্থ শিল্প বিপ্লবের চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবেলা করার জন্য অ্যানিমেশন, থ্রি ডি, মোশন গ্রাফিক্স ইত্যদিতে দক্ষতা অর্জন করা খুবই দরকার। কিন্তু আমাদের দেশে এসবের চর্চা এখনও ব্যপকভাবে শুরু হয়নি।
তবে ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয় ব্যতিক্রম উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, এই বিশ্ববিদ্যালয় এমসিটি বিভাগ চালু করে যুগের চাহিদা পূরণ করেছে।
শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে মন্ত্রী বলেন, মাল্টিমিডিয়ার ক্যারিয়ার গড়ার বিপুল সম্ভাবনা রয়েছে। শুধু দেশে নয়, দেশের বাইরেও এই সেক্টরে ক্যারিয়ার গড়ার সুযোগ রয়েছে।
এসময় মন্ত্রী শিক্ষার্থীদেরকে স্বপ্ন দেখতে বলেন এবং লক্ষ্যে অবিচল থাকার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, স্বপ্ন শুধু নিজের জন্য দেখলে চলবে না, দেশ ও জাতির জন্যও স্বপ্ন দেখতে হবে।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বরেণ্য চিত্রশিল্পী ও বাংলাদেশ টেলিভিশন ও শিল্পকলা একাডেমীর সাবেক মহাপরিচালক মুস্তাফা মনোয়ার।
ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য অধ্যাপক ড. এস এম মাহবুব উল হক মজুমদারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. প্রকৌশলী এ কে এম ফজলুল হক, মাল্টিমিডিয়া অ্যান্ড ক্রিয়েটিভ টেকনোলজি (এমসিটি) বিভাগের প্রধান ড. শেখ মুহাম্মদ আলায়ের, ক্যারিয়ার ডেভলপমেন্ট সেন্টারের পরিচালক আবু তাহের খান প্রমুখ।
দিনব্যাপী অনুষ্ঠিত এ ক্যারিয়ার এক্সপোতে দেশের শীর্ষস্থানীয় দশটি মাল্টিমিডিয়া প্রতিষ্ঠান অংশগ্রহণ করে।
অনুষ্ঠানে ‘আইআর ফোর পয়েন্ট জিরো চ্যালেঞ্জ অ্যান্ড ক্যারিয়ার প্রসপেক্ট’ শীর্ষক প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন এমসিটি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আরিফ আহমেদ।
উপস্থাপনায় তিনি বলেন, বৈশ্বিক প্রেক্ষাপট ও বিভিন্ন জরিপ উপস্থাপন করে প্রবন্ধে বলা হয় যে ২০৩০ সালের মধ্যে বাংলাদেশে প্রায় ২০ লাখ গার্মেন্টকর্মী চাকরি হারাবে এবং তাদের জায়গা দখল করবে অটোমেটেড প্রযুক্তি ও রোবট। এ সমস্যার সমাধান হিসেবে গার্মেন্টকর্মদেরকে থ্রিডি প্রিন্টার অপারেটর হিসেবে প্রশিক্ষণ দেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয় ওই প্রবন্ধে।