দেশের বিভিন্ন প্রান্তে থাকা ইন্টারনেট সেবাদানকারী যেসব আইএসপি প্রতিষ্ঠান অন্য আইএসপি প্রতিষ্ঠানকে ব্যবসা করার সুযোগ দেবে না তাদেরকে ছাড় দেবে না বিটিআরসি। এমনকি একক আধিপত্য বিস্তারকারী আইএসপি প্রতিষ্ঠানগুলোর লাইসেন্স থাকলেও ছাড় মেলবে না।
২২ আগস্ট, বিটিআরসি আয়োজিত টেলিযোগাযোগ সেবা ও নিয়ন্ত্রক সংস্থার কার্যক্রম’ শীর্ষক গণশুনানিতে এই হুশিয়ারি বার্তা দিয়েছেন টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রক সংস্থাটির চেয়ারম্যান শ্যাম সুন্দর সিকদার। শুনানিতে অংশ নিয়ে গ্রাহকেরা আইএসপি প্রতিষ্ঠানগুলোর বিরুদ্ধে অভিযোগ তুললে তিনি এ কথা বলেন।
একই বিষয়ে ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড অপারেশনস বিভাগের মহাপরিচালক এহসানুল কবির জানান, বিটিআরসিকে অভিযুক্ত আইএসপির বিষয়ে সুনির্দিষ্ট তথ্য দিলে অভিযোগকারীর নাম গোপন রেখে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
অপর এক প্রশ্নের জবাবে বিটিআরসির স্পেকট্রাম বিভাগের মহাপরিচালক (ডিজি) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শহিদুল আলম জানান, আগামী দুই বছরের মধ্যে আরও সাড়ে ৪০০ মেগাহার্টজ স্পেকট্রাম বরাদ্দ দেবে বিটিআরসি।
এদিকে আজকের শুনানিতে ইন্টারনেটের গতি বৃদ্ধি, হ্যান্ডসেট , সিম রেজিস্ট্রেশন সংক্রান্ত বেশকিছু প্রশ্নও উঠে আসে। পাশাপাশি দেশের মোবাইল অপারেটরদের বিরুদ্ধেও নানান প্রশ্ন করেন গণশুনানিতে অংশ নেয়া গ্রাহকেরা।
গণশুনানিতে করোনাকালীন সময়ে গ্রামীণফোনের বিরুদ্ধে কর্মী ছাঁটাইয়ের প্রশ্ন তোলেন আবদুল্লাহ আল মামুন।
প্রশ্নের জবাবে বিটিআরসি চেয়ারম্যান শ্যাম সুন্দর সিকদার জানান, বিষয়টি গ্রামীণফোনের অভ্যন্তরীণ। এরপরও যাদেরকে ছাঁটাই করা হয়েছে তাদেরকে কতটুকু যৌক্তিকভাবে ছাঁটাই করা হয়েছে তা খতিয়ে দেখবে বিটিআরসি।
বাংলালিংকের ভ্যাস সংক্রান্ত সমস্যার তথ্য তুলে ধরে আব্দুল কাইয়ুম নামের একজন বলেন তার করা লিগ্যাল নোটিশের উত্তরে বাংলালিংক ৫৫ টাকা ফেরত দেয়ার কথা উল্লেখ করলেও তাকে দেয়া হয়েছে ৪৫ টাকা। বাকি অর্থ এখনো দেয়নি অপারেটরটি। এমন ঘটনার প্রতিকারে বিটিআরসির পদক্ষেপ আহ্বান করলে বিটিআরসি চেয়ারম্যান জানিয়েছেন, বিষয়টি বিটিআরসি আদর্শ কেস হিসেবে নিয়েছে। পরবর্তীতে দুই পক্ষের আলোচনার ব্যবস্থা করা হবে।
২০১৯ সালে টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন বিটিআরসি আয়োজিত ‘টেলিযোগাযোগ সেবা ও নিয়ন্ত্রক সংস্থার কার্যক্রম’ শীর্ষক গণশুনানিতে আসা ২৫ সমস্যার ৬০ শতাংশের সমাধান হয়েছে। এরমধ্যে আংশিক সমাধান ও চলমান প্রক্রিয়ায় রয়েছে ৪০ শতাংশ সমস্যা। এসব তথ্য তুলে ধরেন বিটিআরসি‘র মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো: নাসিম পারভেজ।
২০১৯ সালে অনুষ্ঠিত গণশুনানিতে কররেট সংজক্রান্ত দুইটি, ইন্টারনেট সংক্রান্ত ছয়টি, মোবাইল ও ডেটা প্যাকেজ সংক্রান্ত দুইটি, কলড্রপ ড্রাইভটেস্ট ও কোয়ালিটি অব সার্ভিস সংক্রান্ত দুইটি, রিটেইলার সংক্রান্ত একটি, হ্যান্ডসেট সংক্রান্ত একটি, গণশুনানি ও জনসচেতনতা বিষয়ক চারটি প্রশ্নের অগ্রগতি ও বাস্তবায়নের তথ্য তুলে ধরা হয়।
একই সঙ্গে কৃষিক্ষেত্রে ডিজিটাল কনটেন্ট, সারা দেশে বিটিআরসির ভবন নির্মাণ, এমএনপি সেবার ডিপিং চার্জ, অবৈধ আইএসপি বিষয়ক বিটিআরসির পদক্ষেপ, ওটিটি বিষয়ক, অপ্রত্যাশিত মেসেজ এবং টাওয়ার শেয়ারিং বিষয়ক প্রশ্নের অগ্রগতি ও বাস্তবায়ন বিষয়ক তথ্যও তুলে ধরা হয়।