করোনার কারণে স্মার্টকার্ড উৎপাদন ও বিতরণ বন্ধ রয়েছে। এর ওপর অনেকেরই প্রযুক্তিসুবিধার জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) বা স্মার্টকার্ড হারিয়ে গেছে। কারোটা আবার মুদ্রিত হয়েছে ভুলভাবে। এমন পরিস্থিতিতে স্মার্টকার্ডের অভাব প্রকট হয়ে উঠেছে।
কিন্তু কার্ড বা অর্থ কোনোটাই না থাকার কারণে দিতে পারত না নির্বাচন কমিশন (ইসি)। তবে আশার কথা, সহসাই খুলতে যাচ্ছে এই প্রতিবন্ধকতার পথ।
ইসি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, চলতি বছরেই স্মার্টকার্ডের জন্য আইডেন্টিফিকেশন সিস্টেম ফর এনহ্যান্সিং একসেস টু সার্ভিসেস (আইডিইএ) প্রকল্পটি বন্ধ হয়ে গেলেও নতুন প্রকল্প আইডিইএ-২ চালু হচ্ছে জুনের মধ্যেই।
ফলে দ্বিতীয়বার যাদের স্মার্টকার্ড প্রয়োজন, তাদের অপেক্ষার পালা শেষ হতে চলেছে সরকারি তহবিলের অর্থায়নেই।
সূত্রমতে, সম্প্রতি অনুষ্ঠিত মাসিক সমন্বয় সভায় ইসি সচিব মো. হুমায়ুন কবীর খোন্দকার এনআইডি প্রকল্প পরিচালককে জুনের মধ্যেই ক্রয় কার্যক্রম সম্পন্ন করার নির্দেশনা দিয়েছেন।
আইডিইএ দ্বিতীয় প্রকল্প অনুমোদনের পর গত ১১ ফেব্রুয়ারি সরকারি আদেশ জারি হয়েছে। শিগগিরই প্রকল্পের কাজ শুরু হবে।
এদিকে এরইমধ্যে আইডিইএ-২ প্রকল্পের লোকবল আউসোর্সিং করার জন্য টেন্ডারও দিয়েছেন প্রকল্প পরিচালক। যেখানে ডাটা এন্ট্রি অপারেটর, অফিস সহায়ক পদে কয়েক শ লোকবল নিয়োগ করার প্রক্রিয়া নেওয়া হয়েছে।
ইসি কর্মকর্তারা জানিয়েছে, আলোকে ফরাসি কোম্পানি অবারথার টেকনোলজিস ৭ কোটি ৭৩ লাখ কার্ড সরবরাহ করতে পেরেছিল। সেই মোতাবেক পূর্বের ১ কোটি ২৭ লাখ নাগরিকের কার্ড ঘাটতি ছিল। এই ক’বছরে ভোটার বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১১ কোটি। সব মিলিয়ে আরো প্রায় তিন কোটির মতো কার্ড তৈরি এবং তাতে নাগরিকের তথ্য ইনপুট করে বিতরণে যেতে হবে। আর এজন্য আইডিইএ-২ প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। আর এই প্রকল্পের ১ হাজার ৮০৫ কোটি টাকা অনুমোদনও দিয়েছে সরকার। ফলে কেবল নতুন ভোটারই নয়, যাদের দ্বিতীয়বার স্মার্টকার্ড প্রয়োজন, তারাও পাবেন। তবে দ্বিতীয় প্রকল্প পুরোদমে শুরু না হওয়া পর্যন্ত যাদের প্রয়োজন তাদের দ্বিতীয়বার স্মার্টকার্ড না দিয়ে লেমিনেটিং করা এনআইডি সরবরাহের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সংস্থাটি। আর এই কাজটি করবে বাংলাদেশ মেশিন টুলস ফ্যাক্টরি।
জানা গেছে, বর্তমানে ইসির সার্ভারে ১১ কোটি ১৭ লাখের বেশি ভোটারের তথ্য আছে। ২০২৫ সাল নাগাদ আরো প্রায় চার কোটির মতো ভোটার যুক্ত হবে। সেই সঙ্গে ১০ থেকে ১৭ বছর বয়সী ভোটারদেরও স্মার্টকার্ড দেবে ইসি। সেই হিসেবে এ সময়ের মধ্যে আরো প্রায় ১০ কোটির মতো স্মার্টকার্ড তৈরি ও বিতরণ করতে হবে।