আন্তর্জাতি কার্ড ব্যবহারে তফসিল ব্যংকগুলোকে দেয়া আদেশ প্রত্যাহার করে নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এর ফলশ্রুতিতে এখন আর ডলার পরিশোধে ওটিপি পদ্ধতির বাধা থাকলো। তবে আন্তর্জাতিক ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে যেন অবৈধ লেনদেন সংঘটিত না হয় সে বিষয়ে সতর্ক থাকার পরামর্শও দিয়েছে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থাটি।
বিদ্যমান নিয়মে আন্তর্জাতিক ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারকারী গ্রাহক এককভাবে কোনো পণ্য বা সেবামূল্যের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ৩০০ ডলার পর্যন্ত পরিশোধের সুযোগ নিতে পারেন।
রোববার (২৪ নভেম্বর) বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রা বিনিময় বিভাগের জেনারেল ম্যানেজার মোহাম্মাদ খোরশেদ ওহাব স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে এই প্রত্যাহারের ঘোষণা দেয়া হয়েছে।
নতুন সার্কুলারে বলা হয়েছে, আন্তর্জাতিক ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে অনলাইনে পণ্য ও সেবার মূল্য বিদেশে পাঠানো যাবে। এক্ষেত্রে অনলাইনে জুয়াখেলা, বৈদেশিক লেনদেন, বিদেশি কোনো প্রতিষ্ঠানের শেয়ার কেনাবেচা, ক্রিপ্টো কারেন্সি ও লটারির টিকিট কেনার মতো অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে লেনদেন ঠেকাতে বাংকগুলোকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে হবে। এ জন্য গ্রাহকের কেওয়াইসি, মানিলন্ডারিং গাইডলাইন্স পরিপালন এবং কর ও শুল্ক পরিশোধ নিশ্চিত করবে সংশ্লিষ্ট ব্যাংক। এই সার্কুলারের ফলে গ্রাহককে কোনো অনুমোদন নিতে হবে না।
সূত্রমতে, প্রধানমন্ত্রীর আইসিটি উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী, এ বিষয়ে সোমবার নির্ধরিত বৈঠকটি রোববার অনুষ্ঠিত হয়। ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রানীতি বিভাগের নির্বাহী পরিচালকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত ওই বৈঠক শেষে এই নির্দেশনা জারি করা হয়।
বৈঠকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে স্থানীয় ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের বিজ্ঞাপন প্রদান বাবদ একটি নির্দিষ্ট অঙ্কের বৈদেশিক মুদ্রা ছাড়করণের অনুমোদন প্রদান এবং ভ্রমণের দলিলাদি ব্যতীত ভ্রমণ কোটার এনডোর্সমেন্ট এবং অব্যবহৃত ভ্রমণ কোটা ভ্রমণ ব্যতীত অন্য কোনো উদ্দেশ্যে ব্যবহার বন্ধ করার বিষয়েও আলোচনা হয়।
বৈঠক সূত্রে জানাগেছে, তথ্যপ্রযুক্তি বাণিজ্যিক সংগঠনের পক্ষ থেকে দাবি পরিপ্রেক্ষিতে ক্রেডিট কার্ডের গ্রাহকদের ভোগান্তি কমাতে বিকল্প হিসেবে একটি স্বয়ংক্রিয় ব্যবস্থা চালুর আগ পর্যন্ত পূর্বের নিয়মই বলবৎ থাকবে। গত ১৮ নভেম্বর জারিকৃত পরিপত্রে ক্রেডিট কার্ডে অবৈধ লেনদেন বন্ধে ফরম পূরণ করে জমা দেওয়ার যে নির্দেশনা দেয়া হয়েছিলো তা প্রত্যাহার করে বিকল্প ব্যবস্থায় গ্রহণের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এই উদ্যোগের ফলে স্বংক্রিয়ভাবেই যেসব লেনদেন অবৈধ সেটা বন্ধ হয়ে যাবে। সফটওয়্যারেই অবৈধ লেনদেনের কোড ব্লক করে রাখা হবে। অন্যদিকে বৈধ অন্য সব লেনদেন যখন খুশি তখন করা যাবে।
প্রসঙ্গত, ২০১৬ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি এক সার্কুলারে আন্তর্জাতিক পণ্য কেনাকাটায় আইসিসি ব্যবহারকারী গ্রাহকদের এককভাবে কোনো পণ্য বা সেবামূল্যের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ৩০০ ডলার পর্যন্ত পরিশোধের সুযোগ দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। তবে বছরে তা কোনো অবস্থাতেই এক হাজার ডলারের বেশি হবে না। বর্তমানে আন্তর্জাতিক ক্রেডিট কার্ডধারী ব্যক্তি বিদেশে অবস্থিত খ্যাতিমান ও নির্ভরযোগ্য উৎস থেকে বৈধ পণ্য ও সেবা (যেমন : সফটওয়্যার, ই-বুক ইত্যাদি) কিনতে পারেন।