আগামী এক বছরের মধ্যে দেশে একটি মোবাইল ওয়ালেট থেকে আরেকটি মোবাইল ওয়ালেটে আর্থিক লেনদেন করা সম্ভব হবে বলে জানিয়েছেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক।
সোমবার (১৬ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর একটি হোটেলে ‘ড্রাইভিং ডিজিটাল ফাইন্যান্স ইনোভেশন ফর মিটিং এন্টারপ্রাইজ নিডস ‘ শীর্ষক এক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রতিমন্ত্রী বলেন, দেশের নাগরিকদের শতভাগ ডিজিটাল করতে হলে চাই তিনটি জিনিস। এক, নাগরিকদের যাচাইকৃত পরিচয় তথ্য, ডিজিটাল পেমেন্ট প্ল্যাটফর্ম এবং একটি প্ল্যাটফর্মের সাথে আরেকটি প্ল্যাটফর্মের অপারেবেলিটি। এগুলোর প্রথম দুইটি আমাদের আছে আর এখন কাজ করছি তৃতীয়টি নিয়ে। ৮-৯ মাস সময় লাগতে পারে। অর্থ্যাৎ মোটামুটি প্রায় এক বছরের মধ্যে ‘ইন্টার অপারেবল পেমেন্ট’ সুবিধা আনতে যাচ্ছি আমরা। এর ফলে বিকাশ থেকে শিওর ক্যাশে, নগদ থেকে আইপে তে বা এধরনের একটি প্ল্যাটফর্ম থেকে আরেকটি প্ল্যাটফর্মে লেনদেন করা যাবে। ডিজিটাল সমাধানে গ্রামীণ সমাজের শেষ ধাপে ডিজিটাল পেমেন্ট আমাদের পৌঁছে দিতে হবে যা এধরনের উদ্যোগ থেকে সফল হবে।
পলক আরও বলেন, দেশের প্রতিটি গ্রামকে শহরে পরিণত করতে আমাদের সেখানে পাঁচটি জিনিসের যোগান দিতে হবে। সেগুলো হল, বিদ্যুৎ, শিক্ষা, ইন্টারনেট, স্বাস্থ্য সেবা এবং কর্মসংস্থান। আউটসোর্সিং এবং ডিজিটাল পণ্য ও সেবা থেকে ১০ বছর আগেও আমাদের বৈদেশিক আয় ছিল মাত্র ২৬ মিলিয়ন ডলার। সেখান থেকে আমরা এটিকে এক বিলিয়ন ডলারে নিয়ে এসেছি। আমাদের লক্ষ্য আছে আগামী চার বছরের মধ্যে এটিকে ৫ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত করার। এর পাশাপশি দেশীয় স্টার্টআপ গুলোকে সাহায্য করতে আমাদের পক্ষ থেকে বিভিন্ন ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। এই খাতে বিদেশি বিনিয়োগ এবং সাহায্য আমাদের জন্য খুবই সহায়ক।
ইউএন ক্যাপিটাল ডেভেলপমেন্ট ফান্ড (ইউএনসিডিএফ) এর উদ্যোগে এবং ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ), ঢাকাস্থ কানাডিয়ান হাইকমিশন, ইউনাইটেড ন্যাশনস ইকোনমিক অ্যান্ড সোশ্যাল কমিশন ফর এশিয়া অ্যান্ড দ্যা প্যাসিফিক (ইউএন ই এস সি এ পি), অস্ট্রেলিয়ান এইড, ডাচ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক (এফএমও) এবং ভিসা ইনকর্পোরেশন এর সহযোগিতায় এই সেমিনারের আয়োজন করা হয়।
বিশেষ অতিথি বিসিক চেয়ারম্যান মোস্তাক হাসান বলেন, দেশে উদ্যোক্তা তৈরিতে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে চলেছে। অনেক ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোগের পাশাপাশি বৃহদাকারের প্রতিষ্ঠান যাত্রা শুরু হয়েছে বিসিকে। ৫০০ বেশি প্রতিষ্ঠানের ৫০ হাজার কোটি টাকার বেশি বিনিয়োগ আছে এখানে। নতুন উদ্যোক্তাদের জন্য বিসিক সব সময় আছে। আমাদের তরফ থেকে সব ধরনের সহায়তা থাকবে।
বাংলাদেশে নিযুক্ত ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতিনিধি ম্যানফ্রেড ফার্নহলজ বলেন, বাংলাদেশ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার শুরু থেকেই বাংলাদেশ সরকারের সাথে আমরা কাজ করছি। বিশেষ করে অর্থনৈতিক উন্নয়নে। কারণ আমরা মনে করি টেকসই উন্নয়ন অর্জন করতে হলে প্রাইভেট খাতকে উন্নত করতে হবে। বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশে জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৭ শতাংশ খুবই দারুণ একটা ব্যাপার। তবে আমাদের আরো কিছু জায়গায় কাজ করতে হবে। সমতার ভিত্তিতে সম্পদের বন্টন করতে হবে। বাংলাদেশের বিভিন্ন স্টাফকে অর্থায়ন করতে আমরা বেশ আগ্রহী।
সেমিনারে স্বাগত বক্তব্য রাখেন ইউএনসিডিএফ এর আঞ্চলিক কারিগরি উপদেষ্টা সুরেশ বালাকৃষ্ণন। অন্যান্যদের মাঝে আরও বক্তব্য রাখেন ঢাকাস্থ কানাডিয়ান হাইকমিশন এর ফার্স্ট সেক্রেটারি (ডেভেলপমেন্ট) ট্রিনা অভেদো, ইউএন ই এস সি এ পি প্রতিনিধি ডিয়েনা মরিস, ইউএনসিডিএফ প্রতিনিধি রাজীব কে গুপ্তা, স্টার্টআপ বাংলাদেশ প্রতিনিধি টিনা এফ জাবীন প্রমুখ।