পেগাসাস স্পাইওয়্যারে আড়িপাতার ঘটনায় সমালোচিত হয়েও প্রযুক্তিবিশ্বকে চপেটাঘাত করে এবার দেয়ালের ওপার থাকা বস্তুতে সনাক্তকরণ প্রযুক্তি ব্যবহার করছে ইসরাইলের মিলিটারী সদস্যরা। দেশটির একটি স্টার্টআপ ক্যামিরো-টেক রাডার ভিত্তিক এমন একটি ডিভাইস তৈরি করেছে যার মাধ্যমে দেয়ালের অপর প্রান্তি থাকা ব্যাক্তিতে সনাক্ত করা যাবে সহজেই। এর ফলে কোন অভিযান বা যুদ্ধ ক্ষেত্রে ডিভাইসটির ব্যবহার বেড়ে যাবে বলে শঙ্কা প্রকাশ করে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে বিজনেস ইনসাইডার। প্রতিবেদন অনুযায়ী, এই প্রযুক্তি ব্যবহার করে দেয়ালের অপর প্রান্তে থাকা ব্যক্তিসহ সেখানে থাকা সবকিছুই চোখের সামনে চলে আসবে বিতর্কিত এই প্রযুক্তি ব্যবহারকারীরা।
বিজনেস ইনসাইডার বলছে, স্টার্টাপ কোম্পানিটি Xaver 1000 গ্যাজেটে অ্যাডভান্সড এআই ভিত্তিক ট্রেকিং প্রযুক্তি ব্যবহার করেছে। ডিভাইসটি ব্যাক্তিতে সনাক্ত করে তার দূরত্বও পরিমাপ করে দেবে।
১৬ কেজি ওজনের এই ডিভাইসটি একটি ফোল্ডেবল এ্যান্টেনার দ্বারা আবৃত ফলে যে কোন পরিবেশে এই ডিভাইসটি ব্যবহারা করা যায়।
আর ডেইলি মেইল এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, সিস্টেমটি বর্তমানে ইসরায়েলি মিলিটারী সদস্যরা ব্যবহার করছে। ডিভাইসটিতে রয়েছে একটি দশ ইঞ্চির টাচস্ক্রিন, যা ব্যবহারকারীদের দেওয়ালের পিছনের জীবন্ত বস্তু দেখতে দেয়। ডিভাইসটির প্রযুক্তি এতটাই আপ-টু-ডেট, প্রাচীরের পিছনে থাকা ব্যক্তিটি একজন প্রাপ্তবয়স্ক, একটি শিশু বা একটি প্রাণী; এবং তারা দাঁড়িয়ে বা বসে আছে কিনা তাও বলেও দিতে সক্ষম।
অপরদিকে ইন্ডিয়া টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, Xaver 1000 নামের এই গ্যাজেট দ্বারা ব্যাক্তি স্থির, চলমান বা শুয়ে থাকলেও লাইভ অবজেক্ট দেখে নিতে পারবেন সেনারা। Camero-Tech বলছে, এর সি-থ্রু ডিভাইসটি ১৩৭ ফুট ব্যাসার্ধের মধ্যে সিমেন্ট এবং কংক্রিট সহ ‘সবচেয়ে সাধারণ দেওয়াল এবং উপকরণগুলির মধ্যে দিয়ে প্রবেশ করতে পারে। এই উদ্দেশ্যে এটি একটি পালস-ভিত্তিক, আলট্রা-ওয়াইডব্যান্ড রাডার ব্যবহার করে।
এর আগে ২০২০ সালের ডিসেম্বরে এরকম আরো একটি প্রযুক্তি আবিষ্কৃত হয়, যার মাধ্যমেও দেয়াল ভেদ করে দেখা যায়। কিন্তু সে প্রযুক্তি ছিল স্যাটেলাইট অরবিটিং আর্থ। সেই প্রযুক্তির নাম Capella-2 যার রাডার সিস্টেমের মাধ্যমে নিকটবর্তী কোন জায়গার হাই-রেজুলেশন ইমেজ তৈরি করা যায়। সিস্টেমটি দেয়াল পেনেট্রেট করতে যথেষ্ট পরিমাণ সক্ষম।
Capella-2 ডিজাইন করেছিল Capella Space। সিস্টেমটি সিনথেটিক অ্যাপারেচার রাডার (Synthetic Aperture Radar (SAR) ব্যবহার করে ইমেজ তৈরি করে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্রাকৃতিক দুর্যোগ এবং দুর্ঘটনার পরে অনুসন্ধান এবং উদ্ধার অভিযানের সময় এই জাতীয় প্রযুক্তি আসলে খুব কার্যকর হতে পারে।