রূপালী পর্দায় মুখ দিয়ে আগুন বের করে দাবানল ছড়ানো উড়ন্ত ড্রাগন আসছে বাস্তবে। তবে আগুন ছড়াতে নয়; নেভানোর কাজে ব্যবহৃত হবে ড্রাগন ফায়ার ফাইটার নামে অভিনব এআই ফায়ার ফাইটার রোবট। আগুন নেভানো যায় না, এমন দূরবর্তী অগ্নিকাণ্ডের স্থানে এই উড়ন্ত রোবট পাঠাতে চান জাপানি গবেষকেরা। (সূত্র: সায়িন্টিস্ট ডেভেলপমেন্ট)
জাপানের ফুকুশিমায় বিশ্ব রোবট সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রদর্শিত রোবটটির ধারণা নিয়ে জাপানের তোহোকু বিশ্ববিদ্যালয়ে এরইমধ্যে আলোচনায় এসেছে ড্রাগন ফায়ার ফাইটার (ডিএফএফ) রোবট। এর ফায়ারহোস বা পানি পরিবহনকারী পাইপটি ভিন্ন রকমের। আটটি নিয়ন্ত্রণযোগ্য পানির জেট ইঞ্জিনের মাধ্যমে ভূমি থেকে প্রায় দুই মিটার ওপরে উড়তে পারে। আগুনের গতি বুঝে আকৃতি পরিবর্তন করতে পারে ফায়ারহোসটি। পরিস্থিতি বুঝে ছুটে যায় অগ্নিশিখার দিকে।
কন্ট্রোল ইউনিট পরিচালিত রোবটটির পেছনে চাকাযুক্ত কার্টটি পাইপের মাধ্যমে ১৪ হাজার লিটার পানি সংরক্ষণ করতে সক্ষম একটি ফায়ার ট্রাকের সঙ্গে যুক্ত থাকে। রোবটটি এক মেগাপ্যাসকেল চাপ নিয়ে প্রতি সেকেন্ডে ৬.৬ লিটার হারে পানি ছিটাতে পারে। ইমেজিং ক্যামেরা থাকার কারণে আগুনের অবস্থান খুঁজে নেয় নিজে থেকেই।
আগামী ১০ বছরের মধ্যে উড়ন্ত ফায়ার ফাইটার রোবটটি বাজারে আসবে বলে জানিয়েছেন গবেষণা দলের সদস্য জাপানের ওসাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক ড. ইউচি আম্বে। তিনি বলেছেন, আমরা অগ্নিকাণ্ডের দুর্ঘটনায় দ্রুত আগুন নিভিয়ে ফেলার জন্য রোবট তৈরি করছি। আমরা একটি ড্রাগন ফায়ারফাইটার বা ডিএফএফ নামের রোবটের ধারণা নিয়ে কাজ করছি। একটি উড়ন্ত-পাইপ-টাইপের অগ্নিনির্বাপক রোবটের দুনিয়া আমরা উন্মুক্ত করছি। এ নিয়ে আমরা এখনো কাজ করছি। বিশ্বের অগ্নিনির্বাপক পরিস্থিতি উন্নয়নে আমাদের রোবটটি আসতে ১০ বছরের মতো সময় লাগবে। ১০ মিটারের বেশি প্রসারিত করাই এখন সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ।’
এছাড়াও স্নেক ফায়ারফাইটার রোবটের আরো একটি প্রোটোটাইপ তৈরি হয়েছে। তারের মতো রোবটটি হামাগুড়ি দেওয়ার মতো। এটি চলে পানির চাপে। টানেলসহ বিপজ্জনক পরিবেশে আগুন নেভানোর জন্য এটি ব্যবহার করা যায়। অন্যদিকে শার্ক রোবোটিকস কলোসাস নামের আরেকটি অগ্নিনির্বাপক রোবটও রয়েছে গবেষকদের ঝুলিতে। এটি একটি ক্রলার ধরনের রোবট। এই রোবট আগুন নেভানোর পাশাপাশি ধ্বংসাবশেষ পরিষ্কার করতে ও আগুনের দৃশ্য সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করতে সহায়তা করে।
২০১৬ সালে জাপানের তোহোকু বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সাতোশি তাদোকোরোর গবেষণাগারে এমন উড়ন্ত রোবট নিয়ে প্রথম কাজ শুরু হয়। এরপর আরও গবেষক যুক্ত হয়ে বর্তমান নকশা করেন। নকশা করার মতো সত্যিকারের অগ্নিনির্বাপক দলের সদস্যদের মতামত নিয়ে নানান কিছু যুক্ত করা হয়েছে।