দিন দিন প্রতারকদের স্বর্গ হয়ে উঠছে ১৫ সেকেন্ডের জনপ্রিয় ভিডিও শেয়ারিং অ্যাপ টিকটক। কৌশলে ডেটিং সাইটে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে ব্যবহারকারীদের। এরপর স্ন্যাপচ্যাট ও ইনস্টাগ্রামের বিভিন্ন প্রোফাইল থেকে চুরি করছে আকর্ষণীয় ছবি। আর এভাবেই দুর্বৃত্তরা হাতিয়ে নিচ্ছে স্পর্শকাতর তথ্য।
টিকটকে’র নিরাপত্তা ত্রুটি তুলে ধরে এমন তথ্য দিয়েছে সাইবার নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠান টেনাবল। প্রতিষ্ঠানটির দাবি, ধীরে ধীরে প্রাপ্তবয়স্কদের ডেটিং স্ক্যাম ও ভুয়া অ্যাকাউন্টের কেন্দ্র হয়ে উঠছে টিকটক।
টিকটকের ঝুঁকিপূর্ণ দিকগুলো চিহ্নিত করে ৫০ পাতার গবেষণা প্রতিবেদনে আরো বলা হয়েছে, টিকটক ভিডিওর মাধ্যমে ব্যবহারকারীদের একটি নির্দিষ্ট পেজ বা ওয়েবসাইটে নিয়ে যায় সাইবার দুর্বৃত্তরা। এ পদ্ধতিতে ব্যবহারকারীকে তারা ব্যক্তিগত তথ্য দিয়ে ওই পেজ বা সাইটে সাইন আপ করতে বলে যার বেশির ভাগই ডেটিং সাইট।
এক ব্লগ পোস্টে টেনাবলের বিশেষজ্ঞ সাতনাম নারাং বলেছেন, টিকটকের জনপ্রিয়তা বাড়ার পাশাপাশি স্ক্যামারদের আকর্ষণও বাড়ছে। দুর্বৃত্তরা স্ন্যাপচ্যাট ও ইনস্টাগ্রামের বিভিন্ন প্রোফাইল থেকে আকর্ষণীয় ছবি চুরি করে তা কাজে লাগায়। পরে ব্যবহারকারীর আগ্রহ কাজে লাগিয়ে বিভিন্ন ন্যুড পেজে তাদের নিয়ে যায়। সেখান থেকে বিভিন্ন ডেটিং সাইটে ব্যবহারকারীকে পাঠানো হয়। এ পর্যায়ে ব্যবহারকারীল বয়সসহ বিভিন্ন তথ্য পূরণ করতে বলা হয়। এসব তথ্য পূরণ করলে আবার আরেকটি সাইটে নিয়ে যায়। সেখানেও তথ্য পূরণ করতে হয়। এ ধরনের কাজের জন্য কস্ট পার অ্যাকশন (সিপিএ) ভিত্তিতে অর্থ আয় করতে পারে তারা। এ ধরনের অ্যাকাউন্ট তৈরি করাতে পারলে সে সকল সাইবার দুর্বৃত্তদের এক থেকে তিন ডলার পর্যন্ত আয় হয়। এর বাইরে প্রিমিয়াম স্ন্যাপচ্যাট আকাউন্টে সাইনআপ করানোর মাধ্যমেও অর্থ ও তথ্য হাতিয়ে নেয় তারা।
গত মার্চ মাস থেকে এই অনুসন্ধান শুরু করেন নারাং।
এদিকে অ্যাপল ডিভাইসে টিকটক স্ক্যামার ও স্ক্যাম সংখ্যা বাড়ছে বলে প্রযুক্তি বিষয়ক ওয়েবসাইট সিনেটের প্রতিবেদনে উঠে এসেছে। এছাড়া ডাউনলোডের হিসেবে অ্যাপ স্টোরের শীর্ষে এবং গুগল প্লে স্টোরেও এটি তিন নম্বরে আছে বলে প্রতিবেদনে বলা হয়।
টিকটকের একজন মুখপাত্র অ্যাপের স্ক্যাম অ্যাকাউন্ট প্রসঙ্গে বলেন, টেনাবলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা স্ক্যাম অ্যাকাউন্টগুলো সরিয়ে ফেলা হয়েছে। ভুয়া ও প্রতারণামূলক কনটেন্টের বিরুদ্ধে টিকটকের নীতিমালা কঠোর। ব্যবহারকারীর ফিডে পৌঁছানোর আগেই স্ক্যাম অ্যাকাউন্ট মুছে ফেলা হয়।
তবে এখন পর্যন্ত অবশ্য কতগুলো অ্যাকাউন্ট সরানো হয়েছে সে বিষয়ে কোনো তথ্য-উপাত্ত প্রকাশ করেনি টিকটক কর্তৃপক্ষ।