ডিজিটাল স্পেস সম্পর্কে মেয়েদের জ্ঞান ও দক্ষতা বৃদ্ধিতে উৎসাহপ্রদান এবং ডিজিটাল শিক্ষায় মেয়েদের বিস্তৃত সুযোগ তৈরির আহ্বান জানিয়ে অনুষ্ঠিত হয়েছে ‘ডিজিটাল ইকুইটি কার্নিভাল’।
বুধবার ঢাকার লালমাটিয়া গার্লস হাই স্কুল অ্যান্ড কলেজ প্রাঙ্গণে চার শতাধিক মেয়ে শিক্ষার্থীর অংশগ্রহণে কার্নিভালটির আয়োজন করে আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা সেভ দ্য চিলড্রেন ইন বাংলাদেশ। কার্নিভালে অংশগ্রহণমূলক সেশনের মাধ্যমে অনলাইন নিরাপত্তা ও সচেতনতা বৃদ্ধি, পেশাদার ক্ষেত্রে প্রবেশে ডিজিটাল দক্ষতাবৃদ্ধি, ডিজিটাল স্পেসে মেয়েদের আরও বেশি অংশগ্রহণ ইত্যাদি বিষয়ে উৎসাহপ্রদান করা হয়। এছাড়াও ডিজিটাল স্পেসে ছেলেদের মতো মেয়েদেরও সমান গুরুত্ব দিয়ে সামাজিক ধারণা পরিবর্তনে মতামত দেন উপস্থিত শিক্ষক- শিক্ষিকাগণ এবং বিশেষ ব্যক্তিবর্গ।
কার্নিভালে একটি প্যানেল ডিসকাশন অনুষ্ঠিত হয়, সেখানে যে বিষয়গুলো উঠে এসেছে তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো- বাস্তব প্রেক্ষাপটে মেয়েরা সাধারণত আইসিটি ব্যবহারে ছেলেদের মতো জ্ঞান এবং দক্ষতার সমান স্তরের অধিকারী হয় না এমনকি আইসিটিতে প্রবেশাধিকার থাকা সত্ত্বেও, আমাদের সামাজিক বিভিন্ন ধারণা এখনও মেয়েদের ডিজিটাল শিক্ষায় ছেলেদের সমান হতে বাধা দেয়। আলোচকরা বলেন, দক্ষ মানব সম্পদ তৈরিতে মেয়েদের অবশ্যই ডিজিটাল শিক্ষায় শিক্ষিত হতে হবে এবং লিঙ্গভিত্তিক অসমতা দূরীকরণে এইদিকটি এড়িয়ে গেলে চলবে না।
সাইবার টিন ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান সাদাত রহমান কার্নিভালে অংশ নিয়ে বলেন, “নিজের সিকিউরিটি নিজেকে বুঝতে হবে, সিকিউরিটি বোঝার জন্য ডিজিটাল জ্ঞান ও শিক্ষা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। প্রযুক্তির সঠিক ব্যাবহার জানা সবার জন্য জরুরী।”
কার্নিভাল সামনে রেখে ৯-১৫ মার্চ পর্যন্ত মেয়েদের জন্য একটি অনলাইন কুইজ প্রতিযোগিতার আয়োজন করে সেভ দ্য চিলড্রেন। যেখানে সারাদেশ থেকে অংশ নেয়া বিজয়ী প্রথম ৫০ জন মেয়েকে ঘুড়িলার্নিংয়ের পক্ষ থেকে ১০০’র বেশি অনলাইন কোর্সে ৬ মাস পর্যন্ত সাবস্ক্রিপশন ফ্রি দেয়া হয় কার্নিভালে। লালমাটিয়া গার্লস হাই স্কুল অ্যান্ড কলেজ প্রাঙ্গণে কার্নিভালের অংশ হিসেবে দুটি স্টলে ডিজিটাল প্রোডাক্ট ও সার্ভিস প্রদর্শন করে ডটলাইন বাংলাদেশ।
কার্নিভালে আলোচক হিসেবে অংশ নেন হাইওয়ে পুলিশ হেড কোয়ার্টারের অতিরিক্ত ডিআইজি ফরিদা ইয়াসমিন। তিনি বলেন, “মেয়েদের জন্য আমাদের ডিজিটাল সাপোর্ট একদম খুব সহজভাবে এক্সেস করার উপায় আছে। যে কোন অন্যায়-অপরাধ রিপোর্ট করতে নিজেদের অথবা বাবা মায়ের ডিভাইস ব্যবহার করে আমাদের পর্যন্ত পৌঁছে যেতে পারবে তোমরা। মেয়েদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতেও প্রযুক্তির জ্ঞান ও শিক্ষা এখন অপরিহার্য।”
লালমাটিয়া গার্লস স্কুলের নবম শ্রেণীর শিক্ষার্থী মোবাশশিরা তাবাসসুম জানান এতবড় পরিসরে ডিজিটাল কার্নিভালে তারা আগে অংশ নেননি। তিনি বলেন, “আমাদের সাথে সাথে প্রত্যন্ত অঞ্চলের মেয়েদের জন্য এরকম আয়োজন খুব দরকার। দেশকে স্মার্ট হতে হলে আমাদের সবাইকে স্মার্ট হতে হবে।”
কার্নিভালে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সেভ দ্য চিলড্রেন ইন বাংলাদেশের ডেপুটি কান্ট্রি ডিরেক্টর ডাঃ শামিম জাহান, শিশু সুরক্ষা ও শিশু অধিকার সেক্টর পরিচালক আবদুল্লা আল মামুন, হেড অফ মিডিয়া অ্যান্ড কমিউনিকেশন নুসরাত আমীন, আইসিটি সিনিয়র ম্যানেজার নাজাত বাবর চৌধুরী, ডটলাইন বাংলাদেশের ডিজিটাল সার্ভিসেস জেনারেল ম্যানেজার সৈয়দ কামরুল আরেফিন জিহাদ, লালমাটিয়া গার্লস হাই স্কুল অ্যান্ড কলেজের চেয়ারম্যান শেখ বজলুর রহমান এবং প্রিন্সিপাল মোহাম্মাদ কামরুজ্জামান।