২০০৫ সালে দেশীয় ইন্টারনেট সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান বিডিকম অনলাইন লিমিটেডের হাত ধরে বাংলাদেশে যাত্রা করে মোটরগাড়ি ট্র্যাক করার প্রযুক্তি ভেহিকেল ট্র্যাকিং সার্ভিস (ভিটিএস)। এ যাত্রায় ২০০৯ সালে বিডিকমের সঙ্গী হয় বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম ভিটিএস ও আইওটি ডিভাইস নির্মাতা প্রতিষ্ঠান কনকক্স ইনফরমেশন টেকনোলজি কোং। সেই যাত্রার যুগপূর্তি উদযাপন করলো প্রতিষ্ঠান দুটি।
এ উপলক্ষে সোমবার (৩ অক্টোবর) রাজধানীর কাওরান বাজারের হোটেল লা ভিঞ্চিতে এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে বিডিকম অনলাইন লিমিটেড। সংবাদ সম্মেলনে গ্রে মার্কেট নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে এটা রোধে সচেতনতা বাড়ানোর পাশাপাশি নিয়ন্ত্রক সংস্থা যেনো ইন্টারন্যাশনাল সার্ভারে তাদের প্রবেশাধিকার বন্ধ করার দাবি জানানো হয়।
সংবাদ সম্মেলনে স্বাগত বক্তব্য দেন কনকক্স ইনফরমেশন টেকনোলজি কোং -এর রিজিওনাল সেলস ডিরেক্টর, সাউথইস্ট এশিয়া মেলোডি চ্যান। বক্তব্যে মেলোডি চ্যান বাংলাদেশের ভেহিকল ট্র্যাকিং সেক্টরে বিডিকম অনলাইন লিমিটেডের অগ্রগামী ভূমিকার প্রশংসা করে বলেন, বিশ্বব্যাপী সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য এবং টেকসই হিসেবে জনপ্রিয় কনকক্সের ফ্ল্যাগশিপ ভেহিকল ট্র্যাকিং ডিভাইস জিটি০৬এন এবং ইকোনমিক মডেল সিরিজ ভিজি০৩ -এর একমাত্র অফিসিয়াল ডিস্ট্রিবিউটর বিডিকম অনলাইন লিমিটেড।
তিনি আরও বলেন, ভেহিকল ট্র্যাকিং সিস্টেম মূল্যবান যানবাহনের সুরক্ষার পাশাপাশি ব্যবস্থাপনাও অনেক সহজ করেছে বিশেষ করে সাপ্লাই চেইন এবং কোল্ড চেইন ম্যানেজমেন্টে ভেহিকল ট্র্যাকিং অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ওভার স্পিড অ্যালার্ট, জিওফেন্স, অডিও মনিটরিং, কলিশন অ্যালার্টের মতো গুরুত্বপূর্ণ ফিচার সড়ক দুর্ঘটনা রোধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
সংবাদ সম্মেলনে বিডিকম অনলাইন লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং ভেহিকেল ট্র্যাকিং সার্ভিস প্রোভাইডার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ভিটিএসপিএবি) প্রেসিডেন্ট এস এম গোলাম ফারুক আলমগীর বলেন, সরকার অনুমোদিত ট্রাকিং ডিভাইসের মাধ্যমে ব্যক্তিগত, বাণিজ্যিক এবং গণপরিবহন ব্যবস্থাপনা, ডাইভারের গতিবিধি নিয়ন্ত্রণ এবং নিয়মিত পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে সড়ক দুর্ঘটনা অনেকাংশে রোধ করা সম্ভব। তবে বাজারে অবৈধ এবং অননুমোদিত ট্র্যাকিং ডিভাইস অবাধে ক্রয়-বিক্রয়ের কারণে একদিকে সরকার যেমন রাজস্ব আয় থেকে বঞ্চিত হচ্ছে, ঠিক তেমনি গ্রাহকও সঠিক সার্ভিস পাচ্ছে না। তাই সব ধরনের যানবাহনে সরকার অনুমোদিত ভেহিকল ট্র্যাকিং সিস্টেমে বাধ্যতামূলক করার জোরালো দাবি জানান।
সংবাদ সম্মেলনে বিডিকম অনলাইনের চিফ টেকনোলজি অফিসার এস. এম কামরুজ্জামান, চিফ ফিনান্সিয়াল অফিসার জনাব ফাকের আহমেদ, চিফ স্ট্র্যাটেজিক অফিসার গাজী জিহাদুল কবির, চিফ ইনফরমেশন অফিসার আনোয়ার হাসান সাবির সুজন অন্যান্য পদস্থ কর্মকর্তা এবং বিডিকমের সম্মানীত রিসেলাররা উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে বিডিকম-কনকক্সের ব্যবসায়িক যুগপূর্তি উপলক্ষে ২ অক্টোবর বিডিকম অনলাইন লিমিটেডের করপোরেট হেড অফিসে উদযাপন করেন। এতে প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান ওয়াহিদুল হক সিদ্দিকী উপস্থিত ছিলেন। তিনি মেলোডি চ্যানকে এই সফর ও বিগত বছরগুলোতে বিরতিহীনভাবে বিডিকম অনলাইন লিমিটেডকে সাপোর্ট দেওয়ার জন্য ধন্যবাদ জানান। তিনি সরকারের প্রতি ভিটিএস আমদানির ওপর উচ্চ কর প্রত্যাহারের আবেদন জানান। তিনি বলেন, ভিটিএস হলো আইওটি ডিভাইস এবং আমরা চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের যুগে আছি। বাংলাদেশে ভিটিএস ব্যবসার একেবারে প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে। তিনি ব্যবহারকারীদের পাশাপাশি সরকারকে ভিটিএস ব্যবহারের বিষয়ে সচেতনতা সৃষ্টির জন্য আহ্বান জানান।
যুগপূর্তি উদযাপন ও সংবাদ সম্মেলন উপলক্ষে বাংলাদেশ সফর করেন কনকক্স ইনফরমেশন টেকনোলজি কোং -এর রিজিওনাল সেলস ডিরেক্টর, সাউথইস্ট এশিয়া মেলোডি চ্যান। এটাই তার প্রথম বাংলাদেশ সফর। ৭ দিনের এই সফরে তিনি গণমাধ্যম কর্মী, সংশ্লিষ্ট স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। সংবাদ সম্মেলনে মেলোডি চ্যান সড়ক দুর্ঘটনা রোধ, সাপ্লাই চেইন ম্যানেজমেন্ট, কোল্ড চেইন ম্যানেজমেন্টে ভেহিকেল ট্র্যাকিংয়ের প্রয়োজনীয়তা, বিজনেস ডেভেলপমেন্ট ও টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিটিআরসির অনুমোদিত ডিস্ট্রিবিউটরদের বৈধ চ্যানেলে নিয়ে আসা ডিভাইস ব্যবহারের ওপর গুরুত্বারোপ করেন। তিনি এই ডিভাইসের গ্রে মার্কেট নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। তিনি মনে করেন, গ্রে মার্কেটের ডিভাইসে নিরাপত্তার ঝুঁকি থাকে। বৈধ চ্যানেল বা ডিস্ট্রিবিউটরদের মাধ্যমে আসা এসব ভিটিএস গ্রাহক, ক্রেতাদের নিরাপদ রাখবে।
প্রসঙ্গত, দেশে ২০০৯ সালে বিডিকমের হাত ধরে বাংলাদেশে বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম ভেহিকল ট্র্যাকিং সিস্টেম ও আইওটি ডিভিাইস নির্মাতা প্রতিষ্ঠান কনকক্স সর্ব প্রথম যাত্রা শুরু করে।