শিশুর আন্দন্দ ধারায় দেশজুড়ে স্বর্গে নেমে আসুক- এমন প্রত্যাশাতেই কাউন্ট ডাউনের মধ্য দিয়ে বুধবার সোয়া ১১টায় বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে উন্মোচন করা হলো শিশু-কিশোরদের গেমিং প্লাটফর্ম হাসিনা অ্যান্ড ফ্রেন্ডস। তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি (আইসিটি) বিভাগের উদ্যোগে নির্মিত প্লাটফর্মটি উদ্বোধন করেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক।
এসময় তিনি জানান, আনন্দের মাধ্যমে শেখার সুযোগ করে দিতে নিজের প্লাটিনাম জয়ন্তীতে শিশু-কিশোরদের জন্য খেলতে খেলতে শেখার ডিজিটাল প্লাটফর্মটি উপহার দিয়েছেন বঙ্গবন্ধু কন্যা। প্লাটফর্মে নিজের অ্যাভাটার ব্যবহার করে অংশ নিতে পারবেন সবাই। এখানে থাকছে না ধনী-দরিদ্র, গ্রাম-শহরের দূরত্ব। এর মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সংযুক্ত হতে পারবেন শিশু-কিশোররা। খেলতে খেলতে তারা শিখবে। পাবে পুরস্কারও।
বাংলাদেশের ইতিহাস, সংস্কৃতি ও উন্নতির ধারাবাহিকতা, মূল্যবোধ, ডিজিটাল এই যুগে কেমন হবে আগামী প্রজন্মের পথচলা; প্রতিদিন এই প্ল্যাটফর্মে গল্প আর গেইম খেলার মাধ্যমে সেইসব রপ্ত করতে পারবে ভবিষ্যতের সারথিরা। “খেলি শিখি প্রতিদিন” স্লোগানে প্রধানমন্ত্রীর কাছে গল্প শুনে আর গেইম খেলে প্রতিদিন নতুন কিছু শেখার প্ল্যাটফর্ম “হাসিনা অ্যান্ড ফ্রেন্ডস’-পলক
প্রতিমন্ত্রী বলেন, শেখ হাসিনার ডিজিটাল বাংলাদেশ সবাইকে সরাসরি সংযুক্ত করেছে। শেখার ইন্টারঅ্যাক্টিভ সুযোগ তৈরি করে দিয়েছে। হাসিনা অ্যান্ড ফ্রেন্ডস.গভ.বিডি ডোমেইন থেকে খেলতে খেলতে পরিবেশ, স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও সংযোগ নিয়ে জানতে পারবেন। খেলতে খেলতে তারা পুরস্কারও পাবেন। প্রতি বছর হবে হাসিনা অ্যান্ড ফ্রেন্ডস ফেস্টিভ্যাল।
“আজকের শিশুরাই আগামীর ভবিষ্যত” উল্লেখ করে শিশুদের উদ্দেশ্য প্রতিমন্ত্রী বলেন শুধুমাত্র ভাল ছাত্র-ছাত্রী হলেই হবে না, একজন ভালো মানুষ হতে হবে। ভালো মানুষ ও দেশ প্রেমিক একজন নাগরিক হয়ে গড়ে ওঠার জন্য বাংলাদেশকে এবং বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসকে জানতে হবে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর আদর্শ তার রাজনৈতিক দর্শনকে জানতে হবে এবং অসাম্প্রদায়িক প্রগতিশীল গণতান্ত্রিক মন নিয়ে বড় হতে হবে। কারণ দেশের উন্নয়নের সাথে সাথে আমাদের উন্নত মানুষ হয়ে গড়ে উঠতে হবে। বঙ্গবন্ধু বলতেন সোনার বাংলা গড়তে হলে সোনার মানুষ চাই।
প্রায় পাঁচ শতাধিক শিশু কিশোরের অংশগ্রহণের মাধ্যমে অনুষ্ঠানে ‘আজ যে শিশু পৃথিবীর আলোতে এসেছে’ গান গেয়ে মুগ্ধ করেন প্রতিমন্ত্রী পলক। শিশুরাও সমস্বরে গান গায়। এসময় আইসিটি বিভাগের জ্যেষ্ঠ সচব এনএম জিয়াউল আলম, আইসিটি ডিভিশনের মোবাইল গেম অ্যান্ড অ্যাপ্লিকেশানের জন্য দক্ষতা উন্নয়ন প্রকল্পের পরিচালক মো: আনোয়ার হোসেন,আইডিয়া প্রকল্প পরিচালক মো. আলতাফ হোসেন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শেষে ‘ইলিশ রাজার গল্প’ পাফেট, নৃত্য, জাদু উপভোগ করেন উপস্থিতিরা। অনুষ্ঠান উপস্থাপনা করে ইউটিউবার বাপ কা বেটা।
এর আগে শিশু, কিশোর ও কিশোরীদের জন্য শতভাগ বাংলাদেশী কোনো লার্নিং প্ল্যাটফর্ম ছিলো না। “হাসিনা অ্যান্ড ফ্রেন্ডস”-ই বাংলাদেশের প্রথম নিজস্ব লার্নিং প্ল্যাটফর্ম। ৬ থেকে ১৬ বছর বয়সী শিশু, কিশোর ও কিশোরীদের জন্য আলাদা আলাদা শিক্ষণীয় গল্প ও গেইমের সমন্বয়ে তৈরি হয়েছে প্ল্যাটফর্মটি।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহ্মেদ পলক সবার সাথে হাসিনা অ্যান্ড ফ্রেন্ডস প্ল্যাটফর্ম-এর পরিচয় করিয়ে দেন এবং এর গুরুত্ব তুলে ধরেন। আগামী প্রজন্মের সুষ্ঠু মেধার বিকাশে এই প্ল্যাটফর্ম কীভাবে ভূমিকা রাখবে তা তুলে ধরেন তিনি।
জাতীয় সঙ্গীতের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের সূচনা হয়। এরপর হাসিনা অ্যান্ড ফ্রেন্ডস এর থিম সং ও অ্যানিমেটেড ভিডিও প্রদর্শন করা হয়; সহজ একটি টিউটোরিয়াল ভিডিওর মাধ্যমে প্ল্যাটফর্মটি কীভাবে ব্যবহার করতে হবে তা শিখিয়ে দেয়া হয়।
অনুষ্ঠানের শেষ পর্বে আছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্মদিনের কেক কাটা ও শিশু কিশোরদের মাঝে আকর্ষণীয় গিফট এবং মজাদার খাবার বিতরণ। “খেলি শিখি প্রতিদিন” এই স্লোগানে আমাদের আগামী প্রজন্ম খেলতে খেলতে শিখে যাক সবকিছু এই কামনায় শেষ হয় অনুষ্ঠানটি।