সাংবাদিকতা এবং ফেসবুক চর্চা এক জিনিস নয় বলে মন্তব্য করেছেন ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তফা জব্বার । তিনি বলেন, গণমাধ্যমের সাথে বঙ্গবন্ধুর সম্পর্ক নিয়ে নানা গুজব ছড়ানো হয়। এ গুজব ও অপপ্রচার আজও থামেনি। আমাদের মনে রাখতে হবে, সাংবাদিকতা আর ফেসবুক চর্চা এক জিনিস নয়। দায়িত্বজ্ঞানহীন ভাবে সাংবাদিকতা হয় না। গুজব, অপপ্রচার রোধে দায়িত্বশীল সাংবাদিকতার কোনো বিকল্প নেই। ফেসবুকে আমরা যা কিছু লিখতে পারি কিন্তু সংবাদপত্রে কলম আছে বলেই কিছু লিখে ফেলবো সে জিনিস নয়। দায়িত্বশীলতা সাংবাদিকতার অংশ।
মঙ্গলবার (৩০ আগস্ট) বেলা ১১টার দিকে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির নসরুল হামিদ মিলনায়তনে ‘দায়িত্বশীল সাংবাদিকতা ও বঙ্গবন্ধুর নির্দেশনা’ শীর্ষক শোক দিবসের আলোচনা অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন তিনি।
সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে মোস্তফা জব্বার বলেন, দেশকে ডিজিটাল বাংলাদেশ হিসেবে গড়তে ও বিশ্বের সঙ্গে বাংলাদেশের সংযোগ স্থাপন করার বিষয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অবদান রয়েছে। দেশের রাষ্ট্র গঠনের এমন কোনো জায়গা বাদ নেই যেখানে বঙ্গবন্ধুর হাত নেই। বাংলাদেশকে আদর্শ রাষ্ট্র হিসেবে তৈরি করতে সবখানেই বঙ্গবন্ধুর অবদান রয়েছে। বাংলাদেশ গড়ার পরতে পরতে রয়েছে বঙ্গবন্ধুর অবদান। বঙ্গবন্ধুর বোপণ করা ডিজিটাল বাংলাদেশের সেই বীজকে চারা গাছে পরিণত করেছেন শেখ হাসিনা। দেশে কম্পিউটার প্রসারে তিনি অসাধারণ কাজ করেছেন।
এ সময় সাংবাদিকতার প্রসঙ্গে মন্ত্রী আরও বলেন, বঙ্গবন্ধু সাংবাদিকদের জন্য যে আইন করেছিলেন আমরা আজও তার বিকল্প করতে পারিনি। বঙ্গবন্ধুর শাসনকালে তার বিরুদ্ধে অসত্য, গুজব প্রচার হয়েছে। বঙ্গবন্ধু কয়জন সাংবাদিককে জেলে ঢুকিয়েছিলেন? বঙ্গবন্ধু ৭৫ সালে যে কর্মসূচি নিয়েছিলেন এর প্রেক্ষিত আছে। তিনি কেন দ্বিতীয় বিপ্লবের ডাক দিয়েছিলেন। ৭৪ সালে কীভাবে দুর্ভিক্ষ তৈরি করা হয়েছিল। সে জায়গাগুলোকে ভুলভাবে ব্যাখ্যা করা হয়েছে।
মোস্তফা জব্বার বলেন, বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশকে ইন্টারন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন ইউনিয়নের (আইটিইউ) সদস্য বানিয়েছেন। বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট উড্ডয়নের সময় দেখা গেল আমাদের দুইটি গ্রাউন্ড স্টেশন রয়েছে। এর একটি বেতবুনিয়ায় ভূ-উপগ্রহ কেন্দ্র। এটি বঙ্গবন্ধু স্থাপন করেছিলেন। বিশ্বের সঙ্গে বাংলাদেশকে যুক্ত করার জন্য তিনি এটি স্থাপন করেছিলেন।
ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী আরও বলেন, দেশের ঐতিহাসিক বিষয়গুলো স্মরণীয় করে রাখার জন্য আমার দায়িত্ব ছিলো ডাক টিকেট প্রকাশ করা। বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে আমরা এই কাজটি শুরু করলাম। শতাধিক ডাক টিকেট প্রকাশ করে দেখি বঙ্গবন্ধুর জীবনের খুব গুরুত্বপূর্ণ কিছু অংশ বাদ পড়ে গেছে। পরবর্তী সময় আমি বললাম যে, বঙ্গবন্ধুর ‘৭২ থেকে ‘৭৫ পর্যন্ত সময়ের ঐতিহাসিক কোনো কিছু যেন বাদ না পরে। ডাক বিভাগ তালিকা করে আমাকে দিল, আমি দেখলাম, এগুলো প্রকাশ করতে গেলে ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগে আমার যে বাজেট আছে, তাতেও কুলাবে না।
আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিশ্ববিদ্যালয় কিশোরগঞ্জের উপাচার্য অধ্যাপক ড. জেড এম পারভেজ সাজ্জাদ, গ্লোবাল টেলিভিশনের সিইও সৈয়দ ইশতিয়াক রেজা, ডিবিসি নিউজের সম্পাদক প্রণব সাহা, বিএফইউজে সাধারণ সম্পাদক দীপ আজাদ, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি নজরুল ইসলাম মিঠু ও সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম হাসিব প্রমুখ।
নিউজ নাউ বাংলার প্রধান সম্পাদক শামীমা দোলার সভাপতিত্বে ও জাগরণ টিভির প্রধান সম্পাদক এফ এম শাহীনে সঞ্চালনায় এতে আরও উপস্থিত ছিলেন বিবার্তা২৪ডটনেটের সম্পাদক বাণী ইয়াসমিন হাসি, গৌরব ’৭১ এর সাংগঠনিক সম্পাদক রবিউল ইসলাম রূপম প্রমুখ।