বয়স থাকলে মুক্ত পেশা জীবনে ফিরে যেতেন পরিকল্পনামন্ত্রী মোহাম্মাদ আব্দুল মান্নান। কিন্তু সেই সুযোগ যেহেতু নেই তাই ফ্রিল্যান্সারদের দাবি আদায়ে ‘তদবির’করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তিনি।
সোমবার (২৫ এপ্রিল) রাজধানীর গুলশানে বাংলাদেশ ফ্রিল্যান্সার ডেভেলপমেন্ট সোসাইটি (বিএফডিএস) এক ইফতার ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এই আশ্বাস দিয়েছেন তিনি।
বিএফডিএস এর উদ্দ্যোগে সারা বাংলাদেশ থেকে আগত ফ্রিল্যান্সারদের নিয়ে এই ইফতার ও দোয়া মাহিফলের আয়োজন করা হয়।
দেশে ফ্রিল্যান্সারদের অবদান তুলে ধরে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে পরিকল্পনা মন্ত্রী এম এ মান্নান জানান, দেশে মোট সাড়ে ৬ লাখ ফ্রিল্যান্সার রয়েছে। এ খাতে এখন বছরে ৫০ কোটি ডলার আয় হচ্ছে। এখানে প্রচুর সম্ভাবনা রয়েছে, ভবিষ্যতে আরও অনেক বাড়বে। আর তারা যেহেতু কোনো ধ্বংসাত্মক কাজে জড়িত নয়; সেজন্য তাদের সুযোগ সুবিধায় সরকার সর্বাত্মক কাজ করছে।
ফ্রিল্যান্সিং এর পথে যদি কোনো প্রতিবন্ধকতা থাকে তা দূর করতে সরকার আন্তরিক জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, অনেক সময় বিধি-বিধান ও আইন বাধা হয়ে দাঁড়ায়। যত কম বিধি-বিধান, যত কম আইন, তত বেশি স্বাধীনতা। এটা আমি মনে করি। তাই এ খাতের যত চ্যালেঞ্জ রয়েছে সেগুলো থেকে উত্তরণে আমি আমার সাধ্যমত চেষ্টা করব।
অনুষ্ঠানে বিএফডিএস প্রতিষ্ঠাতা ও সিনিয়র সহ-সভাপতি জসিম উদ্দিন জয় বলেন, ফ্রিল্যান্সারদের সুখে-দুঃখে সবসময় আমরা পাশে দাঁড়িয়েছি। তাদের জীবনমান উন্নয়নসহ মেধা ও প্রযুক্তি নির্ভর অর্থনীতিতে দেশকে এগিয়ে নিতে কাজ করে চলেছে বিএফডিএস।
সভাপতির বক্তব্যে বিএফডিএস’র চেয়ারম্যান ডা. তানজিবা রহমান বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তাঁর উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান ফ্রিল্যান্সারদের সামাজিক স্বীকৃতি দিয়েছে। এই ফ্রিল্যান্সার আইডি কার্ড এর মাধ্যমে ফ্রিল্যান্সাররা ব্যাংকিং ঋণসহ অন্যান্য সুবিধাদি পাচ্ছে। ঘরে বসে মহিলারাও ফ্রিল্যান্সিং এর মাধ্যমে অর্থ উপর্জন করছে। বাংলাদেশের এই আন্তজার্তিক অনলাইন প্লাটফর্মে কর্মরত এই রেমিট্যান্স যোদ্ধাদের অনেক সমস্যা রয়েছে। বিএফডিএস এই সকল সমস্যা সমাধানে সবসময় কাজ করে যাচ্ছে। তাদের দক্ষতা উন্নয়ন, আর্থিক, সামাজিক ব্যবস্থাপনা বাধাগুলো নিরসনে সরকারের সাথে কাজ করে যাচ্ছি আমরা।
ব্র্যাক ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও সেলিম আরএফ হোসেন বলেন, আমরা ফ্রিল্যান্সারদের জন্য আলাদা ম্যাটিক্স কার্ড করেছি। এর মাধ্যমে ফ্রিল্যান্সাররা নানা সুযোগ সুবিধাদি পাবে।
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের আওতাধীন জাতীয় দক্ষতা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের প্রধান নির্বাহী (সিইও) ব্যবস্থাপনা পরিচালক দুলাল কৃষ্ণ সাহা বলেন, আমরা ঘরে ঘারে চাকরি দিতে পারবো না। তবে ঘরে ঘরে ফ্রিল্যান্সার তৈরি করতে পারবো। এদের উন্নয়নে নানা ধরণের উদ্যোগ বাস্তবায়ন করবো।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বিএফডিএস সাধারণ সম্পাদক মাহফুজুর রহমান, হাইটেক পার্ক কর্তৃপক্ষের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বিকর্ণ কুমার ঘোষ, বাক্কো সভাপতি ওয়াহিদ শরীফ, সাধারণ সম্পাদক তৌহিদ হোসন, আইএসপিএবি মহাসচিব নাজমুল করিম ভূঞা, বিপিএ প্রেসিডেন্ট জাহাঙ্গীর আলম, বিসিএস সাবেক সভাপতি শাহিদ উল মুনীর প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন, বিপিএর সাধারন সম্পাাদক বশির আহম্মেদ বকুল, এমসিএস সভাপতি আব্দুর রহিম রতন, আলোরন সাংস্কৃতিক একাডেমীর প্রতিষ্ঠাতা প্রধান তোফায়েল আহম্মেদ, বিএফডিএস অর্থ সম্পাদক নাছির উদ্দিন এবং বিএফডিএস এর তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক হুসনুল বারী।
অনুষ্ঠান স্থলেই উপস্থিত ফ্রিল্যান্সারদের জন্য চালু করা বিশেষ কার্ড দেয়ার জন্য বুথ রেখেছিলো ব্র্যাক ব্যাংক। সেখান থেকে অন স্পট ফ্রিল্যান্সারদের রেমিটেন্স গ্রহণের সুবিধা সম্বলিত এই হিসাব খোলার সুবিধা পান আগতরা।