নিজেদের প্রযুক্তিতে অফুরান শক্তিতে ঊর্ধ্বমুখী চলার সক্ষমতা দেখিয়ে শুক্রবার রাতে শেষ হলো তিন দিনের জমকালো ডিজিটাল ওয়ার্ল্ড ২০২০। কোটি দর্শনার্থীর মাঝে নতুন স্বাভাবিক বাস্তবতায় খাপ খাইয়ে নেয়ার প্রাযুক্তিক উৎকর্ষতার আবেশ ছড়াতে নানা আয়োজন ছিলো এবারের আয়োজনে।
দর্শনার্থীদের মতে, আয়োজন শেষ হলেও ভার্চুয়াল জাদুতে প্রদর্শনী, সভা-সম্মেলনের পাশাপাশি ভার্চুয়াল কনাসার্টের আবেশ থাকবে আগামীতেও। নস্টালজিক হলেই স্মৃতিগুলো হাত বাড়ালেই ধরা দেবে আর্কইভে।
বিশ্লেষণী ভাষায় বললে, এবারের ডিজিটাল ওয়ার্ল্ড ২০২০ অনেকটাই ‘অসমাপ্ত মহাকাব্য’ হয়ে থাকবে। নিজস্ব ভৌত অবকাঠামোর এই আয়োজন বাংলেদেশের তথ্য প্রযুক্তির সক্ষমতাকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে গেছে। তাই সমাপনী অনুষ্ঠানটি আগামী বছরের ডিজিটাল ওয়ার্ল্ড হওয়ার আগ পর্যন্ত একটা ‘যতি’ বা সাময়িক ছেদ বলা যেতে পারে। কেননা এর আবেশ ততদিন পর্যন্ত থাকবে বলেই মনে হয়।
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের উদ্যোগে সন্ধ্যায় রাজধানীর আগারগাঁওস্থ ফিল্ম অ্যান্ড আর্কাইভ মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হয় সমাপনী অনুষ্ঠান।
প্রধান অতিথি হিসেবে ভিডিও কনফারেন্সিং অনুষ্ঠানে যুক্ত হন প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান।
এসময় তিনি বলেন, এই ডিজিটাল মেলার মাধ্যম প্রমাণ করে বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণকে। বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, আমাদের দাবায়া রাখতে পারবা না। প্রধানমন্ত্রী ডিজিটাল বাংলাদেশের যে স্বপ্ন দেখেছেন সেটি বাস্তবায়নে নেতৃত্ব দিয়েছেন তার উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়। তবে এটিকে বাস্তবায়ন করেছে বাংলাদেশের তরুণেরা।
বক্তব্যে সরকারী ক্রয় নীতিমালায় স্থানীয় প্রতিষ্ঠানগুলোকে অগ্রাধিকার দিয়ে আরএফটি টেমপ্লেট অনুমোদন, ই-গভঃ পোর্টাল চালু করা এবং সব ধরনের ডিজিটাল পেমেন্টে নগদ প্রণোদনা দেয়ার দাবি জানান বেসিস সভাপতি সৈয়দ আলমাস কবীর।
আইসিটি বিভাগের সিনিয়র সচিব এন এম জিয়াউল আলম বলেন, ডিজিটাল অবকাঠামো প্রস্তুত থাকায় আমরা অতিপারিতে পিছিয়ে যাইনি। নিজস্ব প্রযুক্তিতে থেকে কাজ চলমান রাখতে আমরা ওয়েবএক্স ও জুমের মতো ‘বৈঠক’ নামে আমরা একটি প্লাটফর্ম তৈরি করেছি। এভাবে দূরত্বে থেকেও আমরা সংযুক্ত রয়েছি।
সভাপতির বক্তব্যে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) বিভাগের প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেছেন, আমরা চাই বাংলাদেশ থেকে আমাজনের বিকল্প হবে ইভ্যালি। আলীবাবার বিকল্প হবে চালডাল, হোয়াটস অ্যাপের বিকল্প হবে আলাপন। এমন সব স্টার্টাপ বাংলাদেশ থেকেই গড়ে উঠবে। এর জন্য প্রধানমন্ত্রীর আইসিটি উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয় তার সময়োপযোগী পদক্ষেপের মাধ্যমে নেতৃত্ব দিচ্ছেন।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মাঝে বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলের নির্বাহী পরিচালক পার্থ প্রতিম দেব, অনুষ্ঠানের প্ল্যাটিনাম স্পন্সর ইভ্যালির প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী মোহাম্মদ রাসেল সমাপনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন।
অনুষ্ঠানে ডিজিটাল ওয়ার্ল্ড-২০২০ উপলক্ষ্যে দেশের আইসিটি খাতে অবদান রাখার জন্য ১৩টি ক্যাটেগরিতে ১৭টি ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে জাতীয় আইসিটি অ্যাওয়ার্ড প্রদান করা হয়।