অগ্রসরমান বাংলাদেশের এভিয়েশন খাতের ক্রমবর্ধমান চাহিদার বিপরীতে পাইলট সংকটে পতিত হচ্ছে বিশ্বের প্রায় সব বিমানসংস্থা। আর এই সংকট থেকে উত্তরণের জন্য প্রায় এক দশক ধরে দেশের এভিয়েশন খাতে দক্ষ পাইলট, ইঞ্জনিয়ারসহ টেকনিক্যাল ও নন-টেকনিক্যাল কর্মী তৈরী করছে বাংলাদেশের অন্যতম বেসরকারী বিমানসংস্থা ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স। ইউএস-বাংলায় ২৫০০ এর অধিক কর্মকর্তা-কর্মচারী রয়েছে, যার মধ্যে ১৯০ জনের অধিক দেশী ও বিদেশী পাইলট রয়েছে।
রোববার ক্যাডেট পাইলট প্রোগ্রামের দ্বিতীয় ব্যাচের ইউএসএ এর ফ্লোরিডা যাওয়ার পূর্বে এক আনন্দঘন অনুষ্ঠানে এসব তথ্য তুলে ধরা হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বেসরকারি বিমান ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মাহবুব আলী । সিভিল এভিয়েশন কর্তৃপক্ষের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ, বিভিন্ন এয়ারলাইন্স এর প্রতিনিধিগণ, আটাবের প্রতিনিধিগণসহ বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের সাংবাদিক ও ক্যাডেট পাইলটগণ ও তাদের অভিভাবকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
সূত্রমতে, ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স ২০১৪ সালের ১৭ জুলাই দু’টি ড্যাশ৮-কিউ৪০০ নিয়ে যাত্রা শুরু করেছে। বর্তমানে ৮টি বোয়িং ৭৩৭-৮০০ ও ৮টি এটিআর ৭২-৬০০সহ মোট ১৯টি এয়ারক্রাফট আছে বিমানবহরে। চলতি বছর দু’টি এয়ারবাস ৩৩০ এয়ারক্রাফটসহ আরো দু’টি এটিআর ৭২-৬০০ এয়ারক্রাফট যুক্ত করার পরিকল্পনা রয়েছে।
কোনো বিমানসংস্থার বিমানবহরে এয়ারক্রাফট সংযুক্তির সাথে সাথে অতিরিক্ত পাইলটের প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয় কিন্তু তা সহজেই স্বল্পতম সময়ে পূরণ করা যায় না। বহরে নতুন এয়ারক্রাফট সংযোজন ও নতুন রুটের ব্যাপ্তি ঘটানোর পূর্বেই পাইলট নিয়োগের বিষয়টি চূড়ান্ত করা এয়ারলাইন্সের সুষ্ঠু ও সঠিক পরিকল্পনারই অংশ।
অতিরিক্ত পাইলটের চাহিদা পূরণে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স ২০২২ সালের শুরুতে ক্যাডেট পাইলট নিয়োগের পরিকল্পনা করে। তারই ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর হিউম্যান রিসোর্স এর বিশেষজ্ঞদের সহায়তা নিয়ে ২০২২ সালের মে থেকে জুলাই মাসে প্রায় ৬৫০০ জন প্রতিযোগীদের মধ্য থেকে ২১ জনকে চূড়ান্তভাবে বাছাই করে।
ইতিমধ্যে ক্যাডেট পাইলটদের প্রথম ব্যাচের ১০ জন প্রশিক্ষণার্থী যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডায় পৌঁছে এপিক ফ্লাইং একাডেমীতে ফ্লাইট ট্রেনিং কোর্স শুরু করেছে। আগামী ৩০ মে দ্বিতীয় ব্যাচের ১১ জন প্রশিক্ষণার্থী ফ্লোরিডার উদ্দেশ্যে যাত্রা করবে। ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের ক্যাডেট পাইলট প্রশিক্ষণ প্রোগ্রাম দেশের এভিয়েশনের ইতিহাসে স্মরণীয় হয়ে থাকবে। ফ্লাইট ট্রেনিং কোর্স শেষ করার পর ফেডারেল এভিয়েশন এ্যাডমিনিস্ট্রেশন কমার্শিয়াল পাইলট লাইসেন্স (এফএএ সিপিএল) প্রাপ্ত হবেন প্রশিক্ষণার্থীরা।
সফলভাবে ফ্লাইট ট্রেনিং শেষ করার পর ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সে ট্রেইনি ফার্স্ট অফিসার হিসেবে নিয়োগ প্রাপ্ত হবেন। যা একজন পাইলট প্রশিক্ষণার্থীর স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দেয়ার অপেক্ষায় থাকবে ইউএস-বাংলা। সাথে এভিয়েশনে দক্ষ জনশক্তি তৈরীতে ইতিহাস সৃষ্টি করবে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স।