অঞ্জন চন্দ্র দেব
কথা ছিলো, ২০২৩ সালের মধ্যে ৩ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছাবে দেশের ই-কমার্স বাজার। তবে পুঞ্জি ব্যবসায় মডেলে মাঝ পথে হোঁচট খেয়েছে সম্ভাবনাময় এই খাতটি। অবশ্য বড় কোনো প্রভাব পড়েনি ক্যাশ অন ডেলিভারি-তে। এমন পরিস্থিতিতে গ্রাহকের আস্থা ফেরাতে আবারো ফ্রি ডেলিভারি দেয়াসহ নেয়া হচ্ছে নতুন নতুন উদ্যোগ।
গ্রাহকদের কাছ থেকে আগাম টাকা নিয়ে পণ্য ডেলিভারি না করায় দেশের ই-কমার্স খাতে নতুন এক সঙ্কটের জন্ম দেয় ইভ্যালি। এরপর প্রতারণার একই কাণ্ডে নাম আসে ধামাকা, কিউকম, ই-অরেঞ্জ সহ আরো কয়েকটি ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানের।
খাত সংশ্লিষ্টদের মতে, সঠিক পরিকল্পনা না থাকা এবং অসৎ উদ্দ্যেশ্যের কারণে সম্ভাবনার এই খাতে একের পর এক ঘটে যাচ্ছে নানান অঘটন।
ফলে দেশের ই-কমার্সখাত ব্যবসায়ীরা খুঁজে পাচ্ছেন না দিশা। গ্রাহক হারানোর পাশাপাশি ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছেন তারা।
এ বিষয়ে আজকেরডিলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফাহিম মাশরুর বলেন, “আমাদের অভারঅল নতুন কাস্টমার গ্রোথ কমে গেছে। গত কয়েক বছরেই নতুন নতুন কাস্টমার যোগ হতো। যা গত তিন-চার মাসে, ই-কমার্সে নতুন নতুন সমস্যার কারণে কমে গেছে।”
প্রিয়শপের সিইও আশিকুর রহমান খান বলেন, “কিছু অর্গানাইজেশনের কারণে আমরা যারা পুরানো তারা সাফার করছি। তিনমাস আগের তুলনায় সেলস ড্রপ করেছে ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ। ক্যাশ অন ডেলিভারি হয়ে গেছে ৯৭ শতাংশ।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, সাম্প্রতিক ঘটনায় ই-কমার্স খাতে সামগ্রিকভাবে ব্যবসা কমেছে ৩০-৪০ শতাংশ। চলমান সংকটে মানুষের আস্থা কমেছে ডিজিটাল লেনদেনে। বেড়েছে ক্যাশ-অন ডেলিভারির পরিমান।
ফাহিম মাশরুর জানান, অ্যাডভ্যান্স পেমেন্টকারী গ্রাহকেরা এখন শঙ্কিত। তারা ক্যাশঅন ডেলিভারির দিকে বেশি ঝুঁকেছেন।
প্রিয়শপ সিইও বলেন, আগে পেইড-প্রিপেইড ছিল ১৭ থেকে ২০ শতাংশ মেক্সিমাম। এখন সেটি ৩ থেকে ৪ শতাংশ প্রিপেইড হচ্ছে।
তবে ই-কমার্স খাত নেতৃত্বদানকারীরা জানাচ্ছেন আশার আলো। তারা বলছেন, সাম্প্রতিক সময়ে ই-কমার্সখাতে ক্ষতিগ্রস্থ গ্রাহকদের কথা মাধ্যম হয়ে জানাবেন সরকারের কাছে। নেবেন ই-কমার্সখাতকে এগিয়ে নেয়ার জন্য বিভিন্ন কৌশল।
ই-ক্যাবের সাধারণ সম্পাদক বলেন, আমরা বিভিন্ন রকমের পজেটিভ ক্যাম্পেইনের আয়োজন করতে যাচ্ছি। এর মধ্যে রয়েছে ইভেন্টের আয়োজন করা, মেলার আয়োজন করা ইত্যাদি।
“আমরা সাপোর্ট করতে চাই, যারা বিভিন্ন রকম ভুক্তভোগী রয়েছেন। তাদের পরামর্শগুলো শুনে অবশ্যই সরকারের বিভিন্ন রকম প্রতিনিধি রয়েছেন তাদের তা পৌঁছে দেবো।”, যোগ করেন তিনি।
সেরা বাংলা ৬৪ এর সহ-প্রতিষ্ঠাতা তৌহিদ হোসেন বলেন, গ্রাহকদের মধ্যে আস্থা ফিরিয়ে আনার জন্য তাদেরকে বিভিন্ন রকম সাপোর্ট দিচ্ছি। কিছু কিছু জায়গায় আমরা তাদেরকে ডেলিভারি পর্যন্ত ফ্রি করে দিচ্ছি।
দেশের ই-কমার্সখাতকে এগিয়ে নিয়ে যেতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে দেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। সর্বশেষ ধামাকার সিইওসহ দুজনকে রিমান্ডে নেয়ার পাশাপাশি রিং আইডির পরিচালক সাইফুল ইসলামকে গ্রেফতার করে শনিবার দুই দিনের রিমান্ডে নিয়েছে সিআইডি।