যথাযথভাবে করনীতি সংস্কার করা হলে মোট দেশজ উৎপাদনে (জিডিপি) মোবাইল শিল্পের বর্তমান অবদান ৭ শতাংশ থেকে আগামীতে আরও বাড়ানো সম্ভব হবে জানিয়েছে মোবাইল সেবাদাতাদের সংগঠন এমটব। এ বিষয়ে এমটব সভাপতি মাহতাব উদ্দিন আহমেদ বলেছেন, “করোনা ভাইরাস (কোভিড-১৯) প্রাদুর্ভাবের কারণে পুরো দেশ এক নজিরবিহীন সঙ্কটের মধ্যে পড়েছে; মোবাইল শিল্প খাতও এর বাইরে নয়। এই পরিস্থিতিতে মোবাইল শিল্প সকল ধরনের যোগাযোগ, ব্যবসা, বিনোদন ইত্যাদির মেরুদন্ডে পরিণত হয়েছে। আমরা অন্যান্য সময়ের মতো এই কঠিন সময়েও যথাযথভাবে সেবা দান করে যাচ্ছি। তবে যেহেতু এই খাতটি ইতিমধ্যেই করসহ নানা ধরনের সমস্যায় ভূগছে, তাই এখনই সময় এসব দূর করে এই খাতকে উত্সাহিত করা যেন ভবিষ্যতে আমরা জাতিকে আরও বেশি সেবা দিতে পারি।”
এমটব মহাসচিব ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এস এম ফরহাদ (অবঃ) বলেন, “বিগত সময়ে মোবাইল সেবাদাতাদের লাইসেন্স নানাভাবে বিভাজন করে তাদের ব্যবসা সঙ্কুচিত করে ফেলা হয়েছে। অপারেটরদের ব্যবসার সঙ্কোচন সরকারের প্রবৃদ্ধি বৃদ্ধির সুযোগকেও সীমিত করেছে। অন্যদিকে ১৯৯১ সালের ভ্যাট আইন অনুযায়ী উৎসে ভ্যাট ছাড়ের নীতি ফিরিয়ে আনা হলেও সরকারের আয় বাড়ানো সম্ভব। ৪-জি প্রযুক্তির হ্যান্ডসেটের দাম বেশি হওয়ায় দেশে ৪-জির ব্যবহার খুব ধীর গতিতে এগুচ্ছে। এক্ষেত্রে বিশেষ প্রণোদনা দেওয়া দরকার।”
এস এম ফরহাদ আরও বলেন, “করোনা ভাইরাস এর পরিণতি কী হবে তা এখনও অনুমান করা কঠিন, তবে রেগুলেটরি, কর এবং ভ্যাট সম্পর্কিত সমস্যাগুলি অবিলম্বে সমাধান করা না গেলে খুব শীঘ্রই মোবাইল সেবা বিশাল চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হবে। করোনাভাইরাস পরিস্থিতির কারণে অপারেটরদের রাজস্ব আয়ে ইতিমধ্যেই নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। আমরা সরকারকে আমাদের প্রস্তাবগুলি বিবেচনা করার জন্য আন্তরিকভাবে অনুরোধ করছি যেন এই শিল্প তার পূর্ণ সক্ষমতা দিয়ে দেশকে সহায়তা করতে পারে ও জিডিপিতে আরও বেশি অবদান রাখতে পারে।”
এদিকে আগামী বাজেটে কী ধরনের কর সংস্কার এলে তা মোবাইল খাত ও এই সেবার জন্য মঙ্গল বয়ে আনবে সে বিষয়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কাছে ৫ দফা প্রস্তাব দিয়েছে মোবাইল অপারেটরদের সংগঠনটি।
প্রস্তাবনায় বর্তমানে সিম প্রতি ২০০ টাকা হারে কর প্রত্যাহার, কর্পোরেট ট্যাক্স ৩০ শতাংশে নামিয়ে আনা, ন্যূনতম টার্নওভার/কর্পোরেট ট্যাক্স অবলুপ্ত করা ও দ্বৈতকর প্রত্যাহারের দাবি জানানো হয়েছে। এছাড়াও ২০১২ সালের নতুন ভ্যাট ও এসডি আইনে সরকারী ও নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থাগুলির জন্য ভ্যাট ছাড় সংক্রান্ত সুস্পষ্ট নির্দেশিকা না থাকায় এই সংস্থাগুলো ভ্যাট নীতি অনুসরণ করছে না বলেও ওই আবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। প্রস্তাবানায় বলা হয়েছে, নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলি তাদের নিবন্ধন ছাড়াই ভ্যাট দাবি বা সংগ্রহ করছে, আবার কোনও ভ্যাট চালান দিচ্ছে না। এটা ভ্যাট আইনের নীতিবিরুদ্ধ। এমটব সরকারী নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলিকে ভ্যাট ছাড়ের প্রস্তাব দিয়েছে যা এনবিআর এবং অপারেটর উভয় পক্ষের সম্ভাব্য বিরোধ ও জটিলতা নিরসন করবে।