এক লাখ ডলার থেকে সেরার জন্য কোটি টাকাসহ বঙ্গবন্ধু ইনোভেশন গ্র্যান্ট (বিগ) এ বিনিয়োগ বাড়লো ছয় কোটি টাকা। ৩৬টি উদ্যোগের পরিবর্তে বেড়ে দাঁড়ালো ৫০টিতে। যুক্ত হলো সরাসরি বিনিয়োগ সুবিধাও। তবে বাদ পড়েছে আন্তর্জাতিক পর্যায়ের প্রতিযোগিতা।
মঙ্গলবার আইসিটি টাওয়ারের বিসিসি সম্মেলন কেন্দ্রেবিনিয়োগ প্রতিযোগিতার সবচেয়ে বড় আসর ‘বিগ’ এর তৃতীয় পর্বেরউদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এসব তথ্য জানানো হয়।
বিকেলে ডিয়ার টু বিগ প্রত্যয়ের এই প্রতিযোগিতার উদ্বোধন করেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। এসময় তিনি আশা প্রকাশ করেন, আগামীতে বাংলাদেশ বিনিয়োগকারীদের হাব-এ পরিণত হবে। জানালেন, এই বিনিয়োগ পেতে আবেদন করা যাবে ২২ এপ্রিল পর্যন্ত।
নিজেকে স্টার্টআপ মন্ত্রী উল্লেখ করে প্রধান অতিথির বক্তব্যে পলক বলেন, ভারত-সিঙ্গাপুরের মধ্য থেকে এরই মধ্যে বাংলাদেশের স্টার্টআপগুলোকে ৮০০ মিলিয়নের ওপর বিনিয়োগ এসেছে। স্টার্টআপ ধীরে ধীরে ওঠে না; রকেটের গতিতে ওঠে। ওপে ডি ফ্যাক্টরি, বিকাশ,নগদ ও শপআপ এরই মধ্যে বিলিয়ন ডলারের কোম্পানি হয়েছে। রকেট গতিতে মহাকাশে অবস্থান করবে। এ জন্য লঞ্চিংপ্যাডের মতো আমরা পিচিং, মেন্টরিং প্যাড গড়ে তুলেছি। ইনোভেশন অ্যান্ড অন্ডারপ্রেনিউরশিপ একাডেমি গড়ে তুলেছি।
দেশের সমস্যাগেুলোর প্রযুক্তি নির্ভর সমাধান দিয়ে অর্থনৈতিক সঙ্কট মোকাবেলায় তরুণ উদ্ভাবকেদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেছেন, আমাদের তরুণদের মেধার ঘাটতি নেই। তাদের প্রয়োজন সহযোগিতা। বঙ্গবন্ধু ইনোভেশন গ্র্যান্টের মাধ্যমে আমরা সেই সুযোগ করে দিচ্ছি।
তিনি আরো বলেন, আমাদের তরুণ উদ্ভাবকেরা শুধু দেশের নয় বিদেশেরও সমস্যা সমাধান করবে।
বক্তব্যে স্টার্টআপগুলোর স্বপ্নপূরণে সরকারের নেয়া নানা উদ্যোগ তুলে ধরে উদ্যোক্তাদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, প্রযুক্তি নির্ভর সমাধান দিয়ে অর্থনৈতিক সঙ্কট আমরা মোকাবিলা করবো। ২০৪১ সালের মাধ্যমে আমরা স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তুলবো।
চাকরির বাজার সঙ্কুচিত হবে উল্লেখ করে আর্টিফিশিয়াল ইন্টিলিজেন্স-কে কাজে লাগাতে আহ্বান জানান তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের সচিব মোঃ সামসুল আরেফিন।
আইডিয়া প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক ও যুগ্ম সচিব মোঃ আলতাফ হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল (বিসিসি) এর নির্বাহী পরিচালক রণজিৎ কুমার এবং স্টার্টআপ বাংলাদেশ লিমিটেড এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক সামি আহমেদ। বক্তব্যে মুনাফার চেয়ে সামাজিক প্রভাবকেই মূল্যায়নে এগিয়ে রাখা হয় বলে জানান সামি আহমেদ।
উদ্যোক্তা ও স্টার্টআপদের জন্য জাতীয় সম্মাননার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ই-ক্যাব সভাপতি শমী কায়সার, আইএসপিএবি সভাপতি ইমদাদুল হক, বিআইজেএফ সভাপতি নাজনীন নাহার প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, প্রযুক্তি ভিত্তিক যে কোনো উদ্যোক্তা এই প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে পারবেন। প্রাপ্ত আবেদনসমূহের মধ্য থেকে ৩০০ টি উদ্ভাবনী স্টার্টআপকে প্রাথমিক পর্যায়ে নির্বাচন করার পরিকল্পনা রয়েছে বিগ কর্তৃপক্ষের। পরবর্তীতে, নির্বাচিত সেরা স্টার্টআপদের নিয়ে ৩ দিনব্যাপী বুটক্যাম্প আয়োজন করা হবে। এ বুটক্যাম্পে স্টার্টআপদের নিয়ে দিনব্যাপী ওয়ার্কশপ, মেন্টরিং, পিচিং করা হবে। বুটক্যাম্পের সেরা স্টার্টআপদের থেকে নির্বাচন করা হবে “বিগ ২০২৩” এর সেরা ৫১ স্টার্টআপ যাদের মধ্য থেকে নির্বাচিত সেরা ৫টি স্টার্টআপকে নিয়ে আয়োজিত হবে বিগ এর চূড়ান্ত রাউন্ড। এই চূড়ান্ত পর্ব থেকে অভিজ্ঞ বিচারকদের সমন্বয়ে গঠিত একটি সিলেকশন প্যানেলের মাধ্যমে নির্বাচন করা হবে বৃহৎ এই আয়োজনের চূড়ান্ত ফলাফল। “বঙ্গবন্ধু ইনোভেশন গ্র্যান্ট ২০২৩” এর পুরস্কার হিসেবে সেরা একটি স্টার্টআপকে দেওয়া হবে বিশেষ সম্মাননা এবং গ্র্যান্ট হিসেবে ১ কোটি টাকা অনুদান। বাকি নির্বাচিত তালিকার সেরা ৫০ স্টার্টআপ এর প্রত্যেককে দেওয়া হবে ১০ লক্ষ টাকা করে অনুদান। এছাড়া, স্টার্টআপদের জন্য রয়েছে বিনিয়োগ পাবার সুবিধাসহ নানা সুযোগ। অর্থাৎ সেরা ৫১টি স্টার্টআপকে মোট ৬ কোটি টাকা অনুদান হিসেবে দেওয়া হবে।