‘মেইক হেয়ার, সেল এভরিহোয়্যার’ স্লোগানে শুরু হলো ডিজিটাল ডিভাইস অ্যান্ড ইনোভেশন এক্সপো’র দ্বিতীয় আসর। করোনার প্রকোপ বেড়ে যাওয়ায় অনলাইনে ওয়েব ঠিকানায় অনুষ্ঠিত হচ্ছে এই সম্মেন।
বৃহস্পতিবার রাজধানীর আগারগাঁও ফিল্ম আর্কাইভ সম্মেলনকেন্দ্রে অনুষ্ঠিত সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন বিসিএস মহাসচিব মো: মনিরুল ইসলাম।
এরপরই ভিডিও বার্তায় শুভেচ্ছা জানিয়ে রাষ্ট্রপতি মো: আবদুল হামিদ বলেন, দেশ এখন ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণের চূড়ান্ত পর্যায়ে। উদ্ভাবনী জাতি হিসেবে পরিচিত হতে ডিজিটাল ডিভাইস অ্যান্ড ইনোভেশন এক্সপো সময়োপযোগী পদক্ষেপ।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে ই-কমার্স ব্যবসায়ে কতিপয় অসাধুর প্রতারণা রোধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ এবং সাইবার নিরাপত্তা নিশ্চিত করার আহ্বান জানান তিনি।
মেধাবী তরুণদের উদ্ভাবনকে কাজে লাগিয়ে বাংলাদেশকে বিশ্বে উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে গড়ে তোলার প্রত্যয় ব্যক্ত করে মেলার উদ্বোধন ঘোষণা করেন রাষ্ট্রপতি।
হাইটেক পার্ক কর্তৃপক্ষের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হোসনেআরা বেগমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক।
বাংলাদেশ হবে উদ্ভাবনী জাতি : পলক
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয় বিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি একেএম রহমতুল্লাহ এমপি বলেন, চতুর্থ শিল্প–বিপ্লব উপযোগী বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে আইসিটি ডিভিশন।
এছাড়াও তরুণদের দক্ষতা, কর্মসংস্থান ও উদ্যোক্তা উন্নয়ন–বিষয়ক অনলাইন প্ল্যাটফর্ম ‘ন্যাশনাল ইন্টেলিজেন্স ফর স্কিলস, এমপ্লয়মেন্ট এন্ড এন্টারপ্রেনিওরশিপ’র মাধ্যমে চাকরি প্রত্যাশী বেকার যুব, শিল্পপ্রতিষ্ঠান এবং প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানে সংযোগ স্থাপন করা হয়েছে।
বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক কতৃপক্ষের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হোসনে আরা বেগম বলেন, ইতোমধ্যে আমাদের আইটি সেক্টর থেকে এক বিলিয়ন রপ্তানী হয়েছে এবং ২০২৫ সালের মধ্যে ৫ বিলিয়ন রপ্তানির লক্ষমাত্রা নিয়ে কাজ করে যাচ্ছে। বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষ তথা তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ নানামূখী কর্মসূচী নিয়ে সরকারের ভিশন ২০২১ বাস্তবায়ন নিয়ে কাজ করে যাচ্ছে। আমাদের উদ্দেশ্য হচ্ছে বাংলাদেশেই একটি প্রযুক্তি পণ্য তৈরির একটা হাব তৈরি করা। এলক্ষ্যে আমাদের নিজেদের সক্ষমতা যেমন দেশীয় ভোক্তাদেরকে জানাতে হবে, তেমনি আন্তর্জাতিক বিনিয়োগকারী ও ভোক্তাদেরকেও জানাতে হবে। এটি চ্যালেঞ্জিং কাজ। এই চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় ভূমিকা পালন করছে ‘ডিজিটাল ডিভাইস এন্ড ইনোভেশন এক্সপো’।
আইসিটি বিভাগের অতিরিক্ত সচিব রীনা পারভীন বলেন, শিক্ষার্থী ও তরুণদের জন্য ১০টি আন্তর্জাতিকমানের সেমিনার থাকছে এবারের ডিজিটাল ডিভাইস এন্ড ইনোভেশন এক্সপো-তে। ডিজিটাল ডিভাইস এন্ড ইনোভেশন এক্সপোতে শিক্ষার্থীদের প্রযুক্তি জ্ঞানকে বাড়িয়ে নেয়ার জন্য এই কর্মশালাগুলো দারুণ সুযোগ বলেই আমরা মনে করছি। এছাড়াও এক্সপোতে থাকছে নিত্যনতুন প্রযুক্তির সঙ্গে পরিচিত হওয়ার সুযোগ। এই সমস্ত আয়োজনই সবার জন্য উন্মুক্ত থাকছে। তবে করোনা মহামারীর কারণে এবারের প্রদর্শনী সীমিত পরিসরে করা হচ্ছে।
স্টার্টআপ বাংলাদেশের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা টিনা এফ জাবিন বলেন, দেশের তরুণ স্টার্টআপদের উন্নয়নে সম্প্রতি প্রতিষ্ঠিত হয়েছে স্টার্টআপ বাংলাদেশ লিমিটেড। স্টার্টআপদের উন্নয়ন ও অর্থায়নে কাজ করছে এই প্রতিষ্ঠান। আমরা ৫০টি স্টার্টআপকে শত কোটি টাকা বিনিয়োগ করছি। বিসিএস সভাপতি মো. শাহিদ-উল-মুনীরের পক্ষে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন সংগঠনটির মহাসচিব মুহাম্মদ মনিরুল ইসলাম।
এবারের এক্সপো উপভোগ করার জন্য অ্যাপ উন্মুক্ত করা হয়েছে। গুগল প্লে স্টোর ও আইফোনের অ্যাপ স্টোর থেকে DDIExpo 2021 নামের অ্যাপটি বিনামূল্যে ডাউনলোড করে ইন্সটল করে ব্যবহার করা যাবে।
এছাড়াও www.ddiexpo.com ওয়েবসাইট ভিজিট করে যেকোনো সময় ভার্চুয়ালি প্রদর্শনী ঘুরে আসা যাবে। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের পাশাপাশি আজ তিনটি সেমিনার এবং একটি ফোকাস গ্রুপ ডিস্কাশন (এফজিডি) আয়োজন করা হচ্ছে। অনলাইনে অ্যাপ ডাউনলোড করে, কিংবা ফেসবুক পেজে লাইভের মাধ্যমেও এসব সেমিনারে জয়েন করা যাবে।
ডিজিটাল ডিভাইস এন্ড ইনোভেশন এক্সপোর প্লাটিনাম স্পন্সর ইভ্যালি, গোল্ড স্পন্সর হিসেবে রয়েছে আসুস, ইপসন, স্যামসাং, ফেয়ার ইলেক্ট্রোনিক্স ও ওয়ালটন। সিলিভার স্পন্সর হিসেবে রয়েছে হালিমা গ্রুপ, লিও, ওরিক্স বায়োটেক, সনির্যাগস, সিডনি সান এবং টিপি লিংক।