এমএফএস। মুঠোফোনে আর্থিক সেবা। সাধারন্যে পরিচিত ‘মোবাইল মানি’ নামে। বিশ্বজুড়েই ক্রমান্বয়ে বাড়ছে ‘মোবাইল মানি’ লেনদেন। প্রতি ঘণ্টায় এই ডিজিটাল ডিভাইসটির মাধ্যেমে ব্যক্তি থেকে ব্যক্তি পর্যায়ে ঘণ্টায় ‘মোবাইল মানি’ লেনদেন হচ্ছে ৫ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি। এর ফলে ২০২১ সালে বিশ্বব্যাপী ট্রিলিয়ন ডলার লেনদেনের রেকর্ড করেছে মোবাইল মানি ইন্ডাস্ট্রি।
১০ম বার্ষিক প্রতিবেদনে এই তথ্য প্রকাশ করেছে জিএসএমএ। মোবাইল সেবা কেন্দ্রিক আন্তর্জাতিক এই গবেষণা সংস্থাটি পরিচালিত গ্লোবাল এডোপশন সার্ভে অব মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস বার্ষিক জরিপের ওপর ভিত্তি করে তৈরি করা হয়েছে মোবাইল-ভিত্তিক বিশ্ব অর্থনীতির এই প্রতিবেদন।
প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, ২০২১ সালে ‘মোবাইল মানি’ শিল্পে নিবন্ধিত অ্যাকাউন্টের সংখ্যা উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে, যা ২০২০ সাল থেকে ১৮ শতাংশ বেড়ে বিশ্বব্যাপী ১.৩৫ বিলিয়নে পৌঁছেছে। প্রতি ঘণ্টায় ব্যক্তি থেকে ব্যক্তি লেনদেনের পরিমাণ ৫ বিলিয়নের বেশি হয়েছে।
প্রতিবেদনে দেখা যায়, এই প্রবৃদ্ধির উল্লেখযোগ্য চালিকাশক্তি ছিল মার্চেন্ট পেমেন্ট, যা এক বছরে প্রায় দ্বিগুণ। ঝুঁকিপূর্ণ ব্যক্তি- বিশেষ করে মহিলাদের জন্য অর্থ লেনদেন ও অর্থনৈতিক অন্তর্ভুক্তির মূল স্তম্ভ হিসেবে কাজ করছে। বিশেষ করে মার্চেন্ট পেমেন্ট, আন্তর্জাতিক রেমিট্যান্স, বিল পেমেন্ট এবং বাল্ক ডিসবারসমেন্ট ইত্যাদির গুরুত্ব ব্যাপক বেড়েছে।
‘মোবাইল মানি’-লেনদেনে ২০২১ সালকে বি-টু-বি (বিজনেস টু বিজনেস) পরিষেবায় বৈচিত্র্য শুরুর বছর হিসেবে মন্তব্য করেছেন জিএসএমএ এর হেড অফ মোবাইল ফর ডেভেলপমেন্ট ম্যাক্স কুভেলিয়ার। তিনি বলেছেন, প্রথাগত ব্যক্তি থেকে ব্যক্তি (পরিবার বা বন্ধুর কাছে অর্থ পাঠানো) লেনদেনের বাইরে এ শিল্প এখন ছোটখাটো ব্যবসাগুলোকে আরো দক্ষতার সাথে পরিচালনা করতে এবং গ্রাহককে আরো ভালো পরিষেবা দিতে সক্ষম হচ্ছে। অপরদিকে মোবাইল মানি নারীদের জন্য আর্থিক ক্ষেত্রে অন্তর্ভুক্ত হবার একটি চালিকাশক্তি হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে।
জিএসএমএ গ্লোবাল এডপশন সার্ভেতে দেখা যায়, ৪৪ শতাংশ সাড়া প্রদানকারীরা এখন ক্রেডিট, সঞ্চয় বা বীমা পণ্য অফার করে, যা সুবিধাবঞ্চিতদের জন্য তাদের জীবিকা ও ভবিষ্যৎ বিনিয়োগের সুযোগ তৈরি করেছে। পাশাপাশি ২০২২ সালে মানবিক সহায়তা প্রয়োজন এমন লোকের সংখ্যা ২৭৪ মিলিয়নে উন্নীত হবার পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে প্রতিবেদনে । অনুদান দেওয়া ও সাহায্য পাওয়ার ক্ষেত্রে ‘মোবাইল মানি’ ক্রমান্বয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে বলে আশা প্রকাশ করা হচ্ছে।
বলা হয়েছে, জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা ২০২০ সালে ১০০টি দেশে ৭০০ বিলিয়ন ডলার নগদ মূল্য সহায়তা (সিভিএ) পাঠিয়েছে। তারা ৪৭টি দেশে ডিজিটাল পেমেন্ট প্রোগ্রাম স্থাপন করেছে, যার মধ্যে ১৫টি দেশ মোবাইল মানি ব্যবহার করে। মোবাইল মানি’র মাধ্যমে সিভিএ’র (নগদ মূল্য সহায়তা) ডিজিটাইজেশ এজেন্সির মর্যাদা বৃদ্ধি ও আর্থিক অন্তর্ভুক্তিকে উৎসাহিত করার সম্ভাবনাও রয়েছে।