দেশে ২৩৫ বৈধ মানি এক্সচেঞ্জ প্রতিষ্ঠানের বাইরে অনুমতি ছাড়াই অবৈধভাবে ব্যবসা করছে আরও হাজারের বেশি মানি এক্সচেঞ্জ। এর বাইরে আরও অসংখ্য প্রতিষ্ঠান রয়েছে যারা ফোনের মাধ্যমে ঘুরে ঘুরে অবৈধভাবে বেচাকেনা করছে দেশি-বিদেশি মুদ্রা। এরইমধ্যে মঙ্গলবার (১৭ জানুয়ারি) সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত রাজধানীর পাঁচটি স্থানে একযোগে তিনটি অবৈধ মানি এক্সচেঞ্জ অফিসসহ দুটি ফেরারি প্রতিষ্ঠানে অভিযান চালিয়েছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি।
বুধবার (১৮ জানুয়ারি) দুপুরে মালিবাগ সিআইডি কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এমনটাই জানিয়েছন সিআইডি প্রধান অতিরিক্ত আইজিপি মোহাম্মদ আলী মিয়া।
তিনি বলেছেন, প্রাতিষ্ঠানিক কিংবা অপ্রাতিষ্ঠানিক কাঠামোয় পরিচালিত অবৈধভাবে মানি এক্সচেঞ্জ প্রতিষ্ঠানের নেপথ্যে যারাই থাক তাদের খুঁজে বের করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সিআইডি প্রধান জানিয়েছেন, অভিযানে গুলশানের জে এম সি এইচ প্রাইভেট লিমিটেড, মোহাম্মদপুরের টোকিও স্কয়ারের আলম আ্যন্ড ব্রাদার্স এবং উত্তরার আশকোনা মুক্তিযোদ্ধা মার্কেটের তৈমুর মানি এক্সচেঞ্জ ও দুটি ফেরারি প্রতিষ্ঠান থেকে মোট ১৪ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
গ্রেফতাররা হলেন-আবু তালহা ওরফে তাহারত ইসলাম তোহা (৩২), আছাদুল শেখ (৩২), হাছান মোল্যা (১৯), আব্দুল কুদ্দুস (২৪), হাসনাত এ চৌধুরী (৪৬), শামসুল হুদা চৌধুরী ওরফে রিপন (৪০), সুমন মিয়া (৩০), তপন কুমার দাস (৪৫), আব্দুল কুদ্দুস (৩২), কামরুজ্জামান রাসেল (৩৭), মনিরুজ্জামান (৪০), নেওয়াজ বিশ্বাস, আবুল হাসনাত (৪০) ও শাহজাহান সরকার (৪৫)।
জানাগেছে, আটক আসামিদের কাছ থেকে ১ কোটি ১১ লাখ ১৯ হাজার ৮২৬ টাকা সমমূল্যের ১৯টি দেশের বৈদেশিক মুদ্রাসহ সর্বমোট ১ কোটি ৯৯ লাখ ৬১ হাজার ৩৭৬ টাকা জব্দ করা হয়। গ্রেফতাররা রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় নিজস্ব অফিস এবং ভাসমান যোগাযোগের মাধ্যমে বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমতি (লাইসেন্স) ছাড়া বৈদেশিক মুদ্রা ক্রয়-বিক্রয় করে আসছিল।
সিআইডি প্রধান বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা স্বীকার করেছে, প্রতিটি প্রতিষ্ঠান প্রতিদিন গড়ে ৭০ থেকে ৭৫ লাখ টাকা সমমূল্যের বিদেশি মুদ্রা অবৈধভাবে ক্রয়-বিক্রয় করতো। গ্রেফতারদের বিরুদ্ধে বিশেষ ক্ষমতা আইন, ১৯৭৪ অনুযায়ী মামলা রুজুর কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। সারাদেশে আরও এক হাজারের বেশি অবৈধ মানি এক্সচেঞ্জ প্রতিষ্ঠান রয়েছে।
ফোনে ফোনে যোগাযোগ করলেই যদি একজন টাকা বা বিদেশি মুদ্রা বা ডলার পেয়ে যায়, তাহলে সে কেন ব্যাংকে যাবে? যদিও প্রক্রিয়াটা অবৈধ। এ ক্ষেত্রে ব্যাংকের সেবার যে মান সেটা নিয়ে প্রশ্ন আছে। সেই সেবা বাড়ানোর কোনো তাগিদ আপনারা দিচ্ছেন কি না? জানতে চাইলে তিনি বলেন, যারা প্রবাসী তারা দেশে টাকা পাঠানোর ক্ষেত্রে বাসায় বসেই টাকা পাঠায়। এ ক্ষেত্রে সময় বাঁচে ও কোন হ্যারাসমেন্ট বা বাড়তি কোন ভাড়া লাগে না। দেশের মানুষ ঘরে বসে টাকা পেয়ে যায়। তবে এটা অবৈধ। আমাদের দেশের স্বার্থে কাজ করতে হবে- যোগ করেন মোহাম্মদ আলী মিয়া।