বিদ্যমান ডিজিটাল কমার্স প্রতিষ্ঠানসমূহকে ২৮ সেপ্টেম্বরের মধ্যে ডিবিআইডি’র আবেদন করতে হবে। আর এক বছর পর্যন্ত নিবন্ধন করা যাবে বিনামূল্যে। এরপর থেকে নিবন্ধন ফি নেয়ার পরিকল্পনা নিয়েছে সরকারের।
মঙ্গলবার (১৯ জুলাই ২০২২) অনলাইনে ‘ডিজিটাল বিজনেস আইডেনটিটি (ডিবিআইডি) নিবন্ধন’ কর্মশালার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এমনটাই জানিয়েছেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. হাফিজুর রহমান। এসময় ডিজিটাল কমার্স নীতিমালা না মানল ডিবিআইডি দেয়া হবে না বলেও সতর্ক করেন তিনি।
হাফিজুর রহমান আরো বলেন, দেশে আড়াই হাজারের বেশি ওয়েবসাইট এবং প্রায় ৩ লাখের কাছাকাছি ফেসবুক পেজের মাধ্যমে অনলাইন ব্যবসা পরিচালিত হচ্ছে, যাদের বেশিরভাগ নারী-উদ্যোক্তা। তিনি বলেন, সকল ব্যবসাকে একটি ডেটাবেজের আওতায় আনার লক্ষ্যে এই উদ্যোগ। অতিক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের পক্ষে ট্রেড লাইসেন্স, আরজেএসসি নিবন্ধন, ইটিআইএন বা ভ্যাট নিবন্ধন নেয়া সম্ভব হয় না। সে কারণে ডিবিআইডি থাকলে ক্রেতাদের আস্থা অর্জন সহজ হবে।
কর্মাশালায় মূল প্রবন্ধে এসএমই ফাউন্ডেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. মো. মফিজুর রহমান। তিনি জানান, ডিবিআইডি নম্বরটি হবে ইউনিক ও অটো-জেনারেটেড। ডিবিআইডি নিবন্ধনের লক্ষ্য, ডিজিটাল কমার্স প্রতিষ্ঠানসমূহের স্বচ্ছতা, দায়বদ্ধতা, জবাবদিহীতা নিশ্চিত করা, ডিজিটাল কমার্স ব্যবসা প্রতিষ্ঠানসমূহের প্রকারভিত্তিক তালিকা প্রস্তুত করা এবং প্রচলিত আইন ও বিধিবিধান মেনে চলা ডিজিটাল কমার্স প্রতিষ্ঠানসমূহকে স্বীকৃতি প্রদান করা। ডিবিআইডি নিবন্ধনের জন্য অনলাইনে আবেদন করতে হবে। এজন্য আবেদনকারীকে এনআইডি দাখিল করতে হবে। প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে চেয়ারম্যান বা পরিচালকদের এনআইডি, ট্রেড লাইসেন্স ও আরজেএসসি নিবন্ধন নম্বর থাকলে দাখিল করতে হবে। সেই সাথে ভ্যাট নিবন্ধন ও ইটিআইএন থাকলে সেগুলিও দাখিল করতে হবে। ভাড়া অফিস হলে বাড়ি ভাড়ার চুক্তি ও বাড়ির মালিকের এনআইডি’র কপি দিতে হবে। তবে ডিজিটাল মাধ্যমে এমএলএম বা নেটওয়ার্কিং ব্যবসা, নেশা সামগ্রী, বিস্ফোরক সামগ্রী এবং জুয়া, অনলাইন বেটিং বা গেম্বলিং প্রতিষ্ঠান ডিবিআইডি’র জন্য আবেদন করতে পারবে না।
তিনি আরো বলেন, নির্দেশিকা জারির ৯০ দিন অর্থাৎ ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২২-এর মধ্যে ডিবিআইডি নিবন্ধনের জন্য আবেদন করতে হবে। এতে প্রতীয়মান হয় ডিবিআইডি ছাড়া বিদ্যমান ই-কমার্স উদ্যোক্তারা অনলাইন ব্যবসা পরিচালনা করতে পারবেননা। আবেদনকারী প্রতিষ্ঠানের একই নামের একাধিক প্রতিষ্ঠান বা একই প্রতিষ্ঠানের একাধিক নামে আবেদন, সক্রিয় ওয়েবসাইট বা সামাজিক মাধ্যমে পেজ এবং সেখানে বাংলায় ক্রয় বিক্রয় বা অন্যান্য শর্তাবলী আছে কিনা, তা যাচাই বাছাই শেষে সনদ প্রদান করবে রেজিস্ট্রার অব জয়েন্ট স্টক কোম্পানিজ’ (আরজেএসসি)। আর তথ্য যথাযথ না হলে আবেদন নামঞ্জুর করে আবেদনকারীকে জানিয়ে দেয়া হবে।
অনলাইন এই ওয়ার্কশপে ৯৫জন উদ্যোক্তা অংশগ্রহণ করেন। এছাড়া ফাউন্ডেশনের ফেসবুক পেজে অংশগ্রহণ করেন আরো প্রায় দেড়শ’ উদ্যোক্তা।
প্রসঙ্গত, জাতীয় ডিজিটাল কমার্স নীতিমালা ২০১৮ এবং জাতীয় ডিজিটাল কমার্স পরিচালনা নির্দেশিকা ২০২১-এর আলোকে ২৯ জুন ২০২২ ডিজিটাল বিজনেস আইডেনটিটি (ডিবিআইডি) নিবন্ধন’ নির্দেশিকা জারি করেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। এই ওয়েবসাইটে লগ ইন করে রেজিস্ট্রার অব জয়েন্ট স্টক কোম্পানিজ’-এর দপ্তরে ডিবিআইডি’র জন্য অনলাইনে আবেদন করা যাবে।