নাম ‘আস্থার প্রতীক’ হলেও গ্রাহকের বিশ্বাসের কোন দামই দেয়নি সদ্য গজিয়ে ওঠা অনলাইন প্লাটফর্মটি। আর থলে ডট কমের থলে থেকে বেরিয়েছে কালো বিড়াল। মোট ১২টি ব্যাংক হিসেবের তথ্য বলছে, পন্য দেয়ার নাম করে হাতিয়ে নেয়া হয়েছে কোটি কোটি টাকা। নিরাপদ টেকনোলজির কাছেও ঝুঁকিমুক্ত ছিল না গ্রাহকের টাকা।
ইভ্যালীসহ অর্থ আত্মসাৎ ও প্রতারণার দায়ে অভিযুক্ত ৫০ ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানের ১৭টি তদন্ত প্রতিবেদন হাইকোর্টে জমা দিয়েছে বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ)। ৩ ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান বুমবুম, কিউকম ও সিরাজগঞ্জ শপের বিরুদ্ধে অর্থপাচারের অভিযোগ এনেছে বিএফআইইউ। এক বছরের কম সময়ে ভূঁইফোড় প্রতিষ্ঠানগুলোতে লেনদেন হয়েছে প্রায় সাড়ে ১০ হাজার কোটি টাকা।
৬৭২ পৃষ্ঠার ওই প্রতিবেদনে আছে দেশজুড়ে গজিয়ে উঠা অনলাইনের নামে প্রতারণার হাট-বাজারের চাঞ্চল্যকর সব তথ্য। এসব তথ্য বিশ্লেষণ করে ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানে পণ্য কিনতে গিয়ে পেমেন্ট গেটওয়েতে আটকে থাকা টাকা গ্রাহকদের ফেরত দিতে করা পৃথক তিন রিটের ওপর শুনানির জন্য আগামী ২২ মে দিন ঠিক করেছেন হাইকোর্ট।
বৃহস্পতিবার (২১ এপ্রিল) হাইকোর্টের বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি মো. বদরুজ্জামানের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ আদেশ দেন। রিটকারীদের আইনজীবী ব্যারিস্টার হুমায়ুন কবির পল্লব ও আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির বিষয়টি রিটকারীদের পক্ষে শুনানি করেন।
এছাড়া রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুর্টি অ্যাটর্নি জেনারেল বিপুল বাগমার। বাণিজ্যমন্ত্রণালয়ের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার তাপস কান্তি বল। বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার খান মোহাম্মদ শামীম আজিজ।
শুনানিকালে বিএফআইইউর আইনজীবী শামীম আহমেদ খালেদ বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি খিজির হায়াতের হাইকোর্ট বেঞ্চে প্রতিবেদনটি উপস্থাপন করেন।
প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রতারণা করে কিউকমের আয়ের টাকা ৩০টি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে জমা দেওয়া হয়। এসব টাকা পাচার হয়েছে বলে সন্দেহ আছে। সিআইডির অনুরোধের পর ২০২১ সালে সবগুলো অ্যাকাউন্টের লেনদেন স্থগিত করা হয়েছে।একই কারণে ২০২১ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর বুমবুম লিমিটেডের ৪টি অ্যাকাউন্ট এবং সিরাজগঞ্জ শপের ৭টি অ্যাকাউন্টের লেনদেন স্থগিত করা হয়।
এতে বলা হয়, ১৭টি ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ২০১৯ সাল থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত বিভিন্ন ব্যাংক অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে প্রায় ১০ হাজার ৫০০ কোটি টাকা লেনদেন করেছে।
এর মধ্যে ইভ্যালি মোট ৬ হাজার ২৯৬ কোটি টাকা, ই-অরেঞ্জ শপ ও অরেঞ্জ বাংলাদেশ ২ হাকার ১৪৮ কোটি টাকা, কিউকম ২ হাজার ৯২ কোটি টাকা লেনদেন করেছে।