ডিজিটাল কমার্স নীতিমালা ২০১৮ তে ই-ক্যাবের অনুরোধে এসক্রো (ESCROW) সেবার কৌশল নিয়ে প্রস্তাবক প্রতিষ্ঠান ই-ক্যাবের সঙ্গে আলোচনা করেছে বাণিজ্যমন্ত্রণালয়। রবিবার (২৭ জুন) বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে অনুষ্ঠিত এই সভায় ই-কমার্সের অনলাইন লেনদেন ও ডিজিটাল কুরবানি হাটের লেনদেন প্রক্রিয়া নিয়েও আলোচনা হয়।
বাংলাদেশ ব্যাংকের পেমেন্ট সিস্টেম বিভাগে বিভাগের জিএম মোঃ মেজবাউল হক এর সভাপতিত্বে উক্ত সভায় ই-ক্যাবের প্রতিনিধিত্ব করেন ই-ক্যাবের জেনারেল সেক্রেটারী মোহাম্মদ আব্দুল ওয়োহেদ তমাল ও ই-ক্যাবের ডিরেক্টর আশিষ চক্রবর্তী।
সভায় ই-ক্যাবের পক্ষ থেকে বর্তমান অর্থ ছাড় ব্যবস্থায় ক্রেতার নিশ্চিতকরণ প্রক্রিয়ার পরিবর্তে বিক্রেতা কর্তৃক নিশ্চিতকরণ প্রক্রিয়া অনুসরণে করা ও আসন্ন ডিজিটাল কুরবানি হাটে পরীক্ষামূলক তথা পাইলট প্রকল্প হিসেবে স্ক্রো সেবার মাধ্যমে কুরবানির পশুর মূল্য পরিশোধ এর ব্যাপারে ই-ক্যাবের পক্ষ থেকে প্রস্তাব করা হয়। প্রস্তাবনার ব্যাপারে এটুআই থেকে সমর্থন জানানো হয় এবং স্ক্রো পাইলটিং এর ব্যাপারে এটুআই থেকে কারিগরি সহযোগিতা দেয়া হবে জানানো হয়।
ই-ক্যাবের সেক্রেটারী জেনারেল মোহাম্মদ আব্দুল ওয়াহেদ তমাল বলেন, কুরবানি পশু একটি ধর্মীয় স্পর্শকাতর বিষয়। সাধারণ মানুষ করোনা সংক্রমণরোধে হাটে না গিয়ে অনলাইনে কুরবানি পশু ক্রয় করবে। তাদের সেবার নিশ্চয়তা দিতে হবে। তাই এইক্ষেত্রে ঝুঁকি রোধ করতে হলে সীমিত পরিসরে সাময়িক ও পরীক্ষামুলকভাবে স্ক্রো সেবা বাস্তবায়ন করা প্রয়োজন। এছাড়া তিনি জানান পরবর্তীতে স্ক্রো সেবা বাস্তবায়নের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংককে প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিতে ই-ক্যাব ১২ সদস্যের ১টি কমিটি গঠন করেছে।
ই-ক্যাবের ডিরেক্টর আশিষ চক্রবর্তী প্রস্তাব করেন, যেসব ক্ষেত্রে ৭ দিনের বেশী সময় নিয়ে পণ্য-সেবা দেয়ার নিমিত্তে অগ্রিম মূল্য নেয়া হচ্ছে সেসব ক্ষেত্রে শিপিং কনফার্মেশন পাওয়ার পর বাংলাদেশ ব্যাংক বা তফসিলি ব্যাংক বা পেমেন্ট এগ্রিগেটর যেন বিক্রেতাকে অর্থ ছাড় দেয়। এতে করে বিক্রেতা বা ই-কমার্সশপ শিপিং এর জন্য পণ্য-সেবা হস্তান্তর করলে পণ্যমূল্য পেতে পারবে। অন্যদের ক্ষেত্রে এই প্রক্রিয়া ই-কমার্সকে বাধাগ্রস্থ করবে বলে মনে করেন তিনি। নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যসেবা দেয় বিশেষ করে খাদ্যপণ্য ও ঔষধ সেবা দেয় তাদের ক্ষেত্রে এ ধরনের বাধ্যবাধকতা থাকা ঠিক বলে তিনি যুক্তি তুলে ধরেন। ক্ষুদ্র ও নবীণ উদ্যোক্তা রয়েছে এছাড়া যারা নিজেরা কাচামাল সংগ্রহ করে ব্যবসা করে তাদেরকেও এধরনের বিধির আওতামূক্ত রাখতে বলেন। তার মতে ক্রেতা কতৃক নয় বরং বিক্রেতা কতৃক নিশ্চিতকরণের উপর অর্থ ছাড় দিতে হবে।
এর আগে ডিজিটাল কমার্স নীতিমালা ২০১৮ তে ই-ক্যাবের অনুরোধে ESCROW সেবা চালুর বিষয়টি সংযুক্ত করা হয়। এরপর ২০১৯ সালের ২৭ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের অধীন প্রাইভেট সেক্টর ডেভলপমেন্ট পলিসি কো-অডিনেশন কমিটির ১৩ তম সভায় ১০ নং প্রস্তাবনায় ESCROW সেবা চালুর বিষয়ে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। ২০২০ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ ও ই-ক্যাবের যৌথসভায় স্ক্রো সেবা বাস্তবায়নের নীতিগত সিদ্ধান্ত গৃহিত হয়। চলতি বছর ১৫ মার্চ বাংলাদেশ ব্যাংক স্ক্রো বাস্তবায়নে ১২ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করে।
সম্প্রতি অগ্রিম মূল্য আদায় নিয়ে বিগত ২৪ ডিসেম্বর বাণিজ্য মন্ত্রণালয় আয়োজিত এক সভায় ESCROW সেবা বাস্তবায়ন করা পর্যন্ত ক্রেতার নিশ্চিতকরণ মেসেজ ব্যতিত অনলাইন লেনদেন এর অর্থ ছাড় না দেয়ার ব্যাপারে বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে প্রেরিত সাময়িক প্রস্তাবনা গ্রহণ করে বানিজ্য মন্ত্রণালয়। তারই আলোকে এই সভা অনুষ্ঠিত হয়।