হঠাৎ অস্থির হয়ে ওঠা পেঁয়াজের বাজার স্থিতিশীল করতে খোলাবাজারের পাশাপাশি অনলাইনেও বিক্রি করবে রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা টিসিবি।
বুধবার সচিবালয়ে পেঁয়াজসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মজুত ও সরবরাহ পরিস্থিতি নিয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি।
এসময় বাণিজ্য সচিব ড. জাফর উদ্দিন উপস্থিত ছিলেন।
টিসিবির জনবল সঙ্কটের কারণে যেন খোলাবাজারে সুলভে টিসিবির পেঁয়াজ ক্রয়ে ক্রেতাদের বিড়ম্বনায় পড়তে না হয় এ জন্য অনলাইনেও বিক্রি করার এই সদ্ধান্ত বলে জানিয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী।
তিনি বলেছেন, “আমরা ই-কর্মাস প্রতিষ্ঠানগুলোকে ব্যবহার করে পেঁয়াজ বিক্রি করব। আমরা খুব আশাবাদী যে মাসে অন্তত ১০ থেকে ১২ হাজার টন পেঁয়াজ ই-কমার্সের মাধ্যমে সাশ্রয়ী মূল্যে বিক্রি করতে পারব।”
ধারণা করা হচ্ছে, খোলাবাজারের মতোই ৩০ টাকা কেজি দরে একজন ক্রেতা সর্বোচ্চ ২ কেজি করে পেঁয়াজ কিনতে পারবেন অনলাইনেই।
এদিকে সরকার থেকে পেয়াজ পেলে ই-কমার্স কোম্পানীগুলো ক্যাম্পেইন শুরু করবে এবং শিগগিরই সরকার নির্ধারিত দাম অনলাইনে পেয়াজ বিক্রি শুরু করবে। ইতোমধ্যে ই-ক্যাব, বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও টিসিবি যৌথভাবে এসংক্রান্ত একটি নীতিমালা তৈরী করেছে। যার অধীনে একটি সমন্বয় ও নজরদারী কমিটি গঠনের প্রস্তাব করা হয়েছে। এই কমিটি নির্বাচিত অনলাইন গ্রোসারিশপগুলো বিধিমেনে সরকার নির্ধারিত দামে পেয়াজ বিক্রি করছে কিনা তা তদারক করবে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের যুগ্ন সচিব এএইচএম সফিকুজ্জামানকে প্রধান করে এই কমিটি প্রস্তাব করা হয়েছে। কমিটিতে একজন ভোক্তা অধিকার প্রতিনিধি, একজন ই-ক্যাব প্রতিনিধি, একজন অনলাইন শপ প্রতিনিধি ও একজন টিসিবি প্রতিনিধি সদস্য হিসেবে থাকবেন।
এছাড়া গ্রাহকদের অভিযোগের বিষয়টি দেখার জন্য ৩ সদস্যের আরেকটা কমিটি গঠনও প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। গত ১৫ সেপ্টেম্বর অনলাইন শপগুলোর সাথে এবিষয়ে বিস্তারিত মত বিনিময় করে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
ই-ক্যাবের জেনারেল সেক্রেটারী মোহাম্মদ আব্দুল ওয়াহেদ তমাল বলেন, আমরা ইক্যাব থেকে ইতোমধ্যে করোনাকালীন নিয়মিত সেবা দিয়ে মানুষের পাশে ছিলাম। এছাড়া লকডাউন এলাকায় জরুরী পণ্য সরবরাহ, আমমেলার মাধ্যমে অনলাইনে আম বিক্রয় ও ডিজিটাল কুরবানি হাটের মাধ্যমে গরু বিক্রি করে বাসায় মাংস পৌঁছে দিয়ে একদিকে নিজেরা অভিজ্ঞতা অর্জন করেছি অন্যদিকে জনগনের আস্থা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানগুলো। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সব সময় আমাদের সাথে ছিল। আমাদের সাম্প্রতিক উদ্যোগগুলোর সফলতাই আমাদেরকে আজ পেয়াজের বাজারে নিয়ে এসেছে।
জানা গেছে, সরকারের আমদানীকৃত পেয়াজের দশ শতাংশ ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে সরবরাহ করা হবে। প্রাথমিক পর্যায়ে এর পরিমাণ কম হলেও পরে বাড়ানো হবে। আশা করা যায় ১০ হাজার মেট্রিকটন পেয়াজ অনলাইন শপ থেকে এই কর্মসূচীর আওতায় বিক্রি করা হবে। পরিস্থিতির আলোকে এই পরিমাণ আরো বাড়তে পারে। অনলাইন প্রতিষ্ঠানের মধ্যে যাদের নিজস্ব গুদামঘর, বিস্তৃত ডেলিভারী সক্ষমতা ও ই-কমার্স ওয়েবসাইট রয়েছে তাদেরকে এই সেবার জন্য নির্বাচন করা হয়েছে।