গ্রাহকের টাকা আত্মসাতের অভিযোগ থাকা ১৮টি ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানের গ্রাহকের পেমেন্ট গেটওয়েতে আটকে থাকা প্রায় ১৪৪ কোটি টাকা ফেরত নিয়ে একটি প্রতিবেদন দিয়েছিলো মুঠোফোন গ্রাহক এসোসিয়েশন। এরপর মঙ্গলবার দেশের বিভিন্ন অনলাইন ভিত্তিক ই-কমার্স ও এলএলএম প্রতিষ্ঠানে বিনিয়োগের পর প্রতারণার শিকার ও আটকে থাকা টাকা গ্রাহকরা কীভাবে ফেরত পাবেন, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। এর আগেই অবশ্য সম্প্রতি গ্রাহকের টাকা পরিশোধ করে ব্যবসায় পুরো দমে ফেরার ব্যাপারে মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতা চেয়ে চিঠি দিয়েছে ইভ্যালি। সেই চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে বুধবার তাদের ভবিষ্যত করণীয় বিষয়ে বুধবার দুপুরে বৈঠকে বসছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
এর আগেই অবশ্য গ্রাহকের পাওনা পরিশোধের হালনাগাদ হিসাব দিয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ডব্লিউটিও অনুবিভাগে। এই বিভাগই এর আগে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে তথ্য নিয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় অভিযুক্ত ৩২টি ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানের তালিকা তৈরি করে তাদের কাছে গ্রাহকদের পাওনার পরিমাণ ৫৩১ কোটি টাকা (শুধুমাত্র গেটওয়েতে আটকে থাকা টাকা) বলে জানিয়ে ছিলো। সেই পাওনা থেকে ২০২২ সালে গ্রাহকেরা ফেরত পান ৩১০ কোটি টাকা। কিন্তু ২০২৩ সালে তা কমে দাঁড়ায় ৭৭ কোটি টাকায়। অর্থাৎ গ্রাহকেরা বছর শেষে সব মিলিয়ে ফেরত পেয়েছেন ৩৮৭ কোটি টাকা। আর ফেরত না দেওয়া ১৪৪ কোটি টাকার মধ্যে ৭৭ কোটি টাকাই কিউকমের গ্রাহকদের। এদিকে ২০২১ সালের ১৫ জুলাই পর্যন্ত ইভ্যালির দেনার পরিমাণ ছিলো ৩১১ কোটি টাকা। আর এই দেনা আছে মোট ২ লাখ ৭ হাজার ৭৪১ গ্রাহকের বিপরীতে। তবে নতুন করে ব্যবসা শুরু করে সব দেনা পরিশোধের পদক্ষেপ নিয়েছে কোম্পানিটি।
নতুন বছরের শুরুতেই গ্রাহকের পাওনা প্রাপ্তির পালে হাওয়া লাগতে শুরু করেছে। সর্বশেষ (মঙ্গলবার) প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, এই খতিয়ানে যুক্ত হয়েছে আরো প্রায় সাত কোটি টাকা। কেন্দ্রীয় ডিজিটাল কমার্স সেল এর উপসচিব মুহাম্মদ সাঈদ আলী জানিয়েছেন, জানুয়ারি ২০২২ থেকে এরই মধ্যে ১৫টি ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে পাওনার ৩৮৬ কোটি ৮৪ লাখ ৮৯ হাজার টাকা ফেরত পেয়েছেন ৫৫ হাজার ৭২৬ গ্রাহক। এর মধ্যে তিন শ’ ১১ কোটি ৭০ লাখ ৫২ হাজার ৯৮ টাকা পরিশোধ করেছে কিউকম। আলেশা মার্ট দিয়েছে ৪০ কোটি ৬৭ লাখ ২৪ হাজার ২২৫ টাকা। একইভাবে দালাল প্লাস ১৮ কোটি ৪৯ লাখ ৮১ হাজার ৯০২ টাকা ও ইভ্যালি দিয়েছে ১০ কোটি ৪৩ লাখ ৩৭ হাজার ৬৫৩ টাকা। এছাড়াও শ্রেষ্ঠ ডটকম ১ কোটি ৫০ লাখ ৩৬ হাজার ৩৭১ টাকা, বুমবুম ৮০ লাখ ৬৩ হাজার ২৭৩ টাকা, আনন্দের বাজার ৩৮ লাখ ৩৭ হাজার ২৭৯ টাকা, থলে ডটকম ৪৩ লাখ ৫৭ হাজার ৪৯১ টাকা, ধামাকা ৮৯ লাখ ৭ হাজার ৮৬০ টাকা, আলিফ ওয়ার্ল্ড ৩১ লাখ ৪৭ হাজার ৫৭১ টাকা, বাংলাদেশ ডিল ৫২ লাখ ৯২ হাজার ৬৮৮ টাকা, সফেটিক ২৭ লাখ ২৮ হাজার ২৭৮ টাকা, ৯৯ গ্লোবাল ২২ লাখ ৫৯ হাজার ৭৩২ টাকা, আদিয়ান মার্ট ১৪ লাখ ১৬ হাজার ৪৭৬ টাকা এবং সিরাজগঞ্জ শপ ৩ লাখ ৪৬ হাজার ৫৪ টাকা ফেরত দিয়েছে।