প্রাকৃতিক কারণে মধু জমতেও পারে আবার নাও পারে। এমন পরিস্থিতিতে ফুলের নাম উল্লেখ করে ‘ক্রিস্টাল মধু’ উন্মোচন করলো ই-কমার্স ব্র্যান্ড ঘরের বাজার। শনিবার দুপুরে রাজধানীর একটি রেস্তরায় এই ক্রিম (তরল থেকে দানাদার) মধু উন্মোচন করা হয়।
এর পরে মধুর বৈজ্ঞানিক মান ও গুরুত্ব নিয়ে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় স্বাগত বক্তব্যে ঘরের বাজার স্বত্ত্বাধিকারী জামশেদ মজুমদার দেশের যত ফুল থেকে মধু হয় তা জমে। আবার পেয়াজের ফুলের অংশ থেকে মধু যমে কিন্তু কালোজিরা বা ধনিয়ার মধু ঠান্ডায় জমে না। তাই দেশ থেকে মধু বিদেশে পাঠিয়ে তা আবার দেশে এনে বিক্রি করতে হচ্ছে অনেককই। সেই বিড়ম্বনা থেকে রেহাই দিতে ফুলের সোর্স উল্লেখ করে বিএসটিআই অনুমোদিত ‘ক্রিস্টাল মুধু’ বাজারজাত শুরু করেছে ঘরের বাজার।
উত্তরবঙ্গ মৌচাষী মোর্চার সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম বলেন, সরিষা ও ধনিয়া ফুলের মধু জমে। কিন্তু লিচু ফুলের মধু কেন জমে এখনো গবেষণার বিষয়। এছাড়া কালোজিররা মধু জমার কথা নয়। কিন্তু এটা কন্টেইনারের ওপর নির্ভর করে।
এসময় বিসিক শিল্প মন্ত্রণালয়ের সাবেক মহাপরিচালক জগদীশ চন্দ্র সাহা বলেন, ক্রিস্টাল, ক্রিম মধুর ক্ষেত্রে দুটোই এক। এটা স্বাস্থের জন্য ভালো। খাঁটি। মধু মৌমাছিই উৎপাদন করবে। শুধু প্রক্রিয়াজাতটা ঠিক ঠাক করতে প্রশিক্ষণ দেয়া দরকার। ভেজাল মধু জমবে না। অনেক দিন রেখে দিলে তা জমে শক্ত হয়ে যায়।
বিএসটিআই এর সাবেক পরিচালক নীলুফার হক বলেন, খাঁটি মধুর স্ট্যান্ডার্ড এর ক্ষেত্রে ময়েশচার খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তাই বিষয়টি মাথায় নিয়ে আমরা স্ট্যান্ডার্ড তৈরি করেছি।
বাংলাদেশে ৭০ ধরণের মধু আছে। এগুলো আছে মৌ জাদুঘরে। সুন্দরবনের মধু ছাড়া সরিষা, ধনিয়া, লিচু ফুলের মধু জমে।
আলওয়ান হানি রিসার্চ সেন্টারের প্রধান নির্বাহী অধ্যাপক মাঈনুল আনোয়ার বলেছেন, আমাদের মধু গ্রহণের পরিমাণ বাড়াতে হবে। দেশে মৌ চাষ বাড়লে খাদ্য উৎপাদন বাড়বে। তাই বেশি বেশি মৌচাষ করা দরকার। সুগার ক্রপ রিসার্চ ইনস্টিটিউট, পাবনার সাবেক মহাপরিচালক ড. মো. আমজাদ হোসেন বলেন, মধুর মধ্যে ক্যানিয়ান সুক্রোজ ও গ্লুকোজ থাকে। কিন্তু আর মধ্যে আরো ১৯৮টি এঞ্জায়েম, লিভিং এলিমেন্ট থাকায় এটি যে কেউ খেতে পারে। মৌ মাছি এটি উৎপাদন করায় এতে কোনো ভেজাল নেই। কিন্তু এটি যদি তাপ দিয়ে প্রসেস করা হয় তাহলে এটি নষ্ট হয়। আরাম-গরমের চেয়েও কম অর্থাৎ ৩০ ডিগ্রি তাপমাত্রায় ক্রিম মধু প্রসেস করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে বঙ্গবন্ধু কৃষি বিশ্ববিদ্যলয়ের কীটতত্ত্ব অনুষদের অধ্যাপক আহসানুল হক, ঘরের বাজার প্রতিষ্ঠাতা বেলাল হোসেন, ব্যবস্থাপনা পরিচালক নাজমুস সাকিব প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
তারা জানান, ঘরের বাজার শত ভাগ খাটি পণ্যসেবা দেয়। অনলাইন ডেলিভারি ও ক্যশলেস পেমেন্ট সুবিধা রেখেছি।