ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত ‘দ্বিতীয় কোড সামুরাই আন্তঃবিশ্ববিদ্যালয় হ্যাকাথন প্রতিযোগিতা ২০২২’- এ চ্যাম্পিয়ন হয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দল ‘ডিইউ মাউন্টেইন ডিউ’। এতে প্রথম রানার্স আপ হয় বুয়েট- এর দল ‘বুয়েট স্ট্রমস এনড’ এবং দ্বিতীয় রানার্স আপ হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘ডিইউ হ্যাকার’ দল।
শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বুধবার (২১ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র (টিএসসি) মিলনায়তনে আয়োজিত প্রতিযোগিতার সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন।
অনুষ্ঠানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল, সিএসই বিভাগের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. এম. লুৎফর রহমান, ঢাকাস্থ জাপান দূতাবাসের মিনিস্টার মাচিদা তাতসুইয়া, বাংলাদেশে নিযুক্ত জাইকার চিফ রিপ্রেজেন্টেটিভ মি. ইচিগুচি তমোহিদি, জেট্রো-এর কান্ট্রি রিপ্রেজেন্টেটিভ মি. ইউযি অ্যান্ডো এবং জাপান-বাংলাদেশ সোসাইটির সভাপতি মি. মাসাতো ওয়াতানাবে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন। আয়োজক কমিটির সদস্য-সচিব ও সিএসই বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. মামুনুর রশিদ ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন।
শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি শিক্ষা, সংস্কৃতিসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে সহযোগিতা প্রদানের জন্য জাপানকে বাংলাদেশের অন্যতম উন্নয়ন সহযোগী ও বিশ্বস্ত বন্ধুপ্রতিম দেশ উল্লেখ করে বলেন, দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আগত শিক্ষার্থীদের মেধার বিকাশে এই প্রতিযোগিতার গুরুত্ব অনেক। বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে তরুণ প্রজন্মকে প্রযুক্তি নির্ভর ও দক্ষ সম্পদ হিসেবে গড়ে তুলতে বর্তমান সরকার বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। প্রযুক্তিখাতে গবেষণা, উদ্ভাবন ও জাতির চাহিদা পূরণে সম্মিলিতভাবে কাজ করে সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগকে সফল করার জন্য তিনি শিক্ষক, গবেষক ও শিক্ষার্থীদের প্রতি আহ্বান জানান।
উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান প্রযুক্তি শিক্ষার বিকাশ ও প্রসারে এবং সৃষ্টিশীল উদ্ভাবনে কাজ করার জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিএসই বিভাগের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে প্রযুক্তির যথাযথ ব্যবহার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। প্রযুক্তির পরিবর্তনের সঙ্গে তাল মিলিয়ে নিষ্ঠা ও কঠোর পরিশ্রমের সঙ্গে শিক্ষক, গবেষক ও শিক্ষার্থীদের দেশ ও জাতির উন্নয়নে সমন্বিতভাবে কাজ করতে হবে।
উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল বলেন, এই হ্যাকাথন প্রতিযোগিতা আয়োজনের মাধ্যমে জাপানের সঙ্গে বাংলাদেশের দীর্ঘদিনের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক আরো দৃঢ় হবে। এই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারী তরুণ শিক্ষার্থীরা গবেষণা ও উদ্ভাবনের ক্ষেত্রে অনেক উপকৃত ও অনুপ্রাণিত হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শতবর্ষপূর্তি ও জাপান-বাংলাদেশ বন্ধুত্বের ৫০ বছর পূর্তি উদ্যাপন উপলক্ষে আয়োজিত এই হ্যাকাথন প্রতিযোগিতায় দেশের ৩২টি বিশ্ববিদ্যালয়ে কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল এবং আইটি বিষয়ে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীদের ৫০টি দল অংশ নেয়। এদের মধ্যে চ্যাম্পিয়ন ও রানার্সআপরা ছাড়াও বিজয়ী হয়েছে ঢাবি’র ডিইউ লাস্ট সামুরাই, বুয়েটের হৈলি হৈলো, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিইউ স্টার গেইটরস, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্লিম্পস অব শাস্ট এবং খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের নাউ টু ইনফিনিটি দল। এই দলগুলো পেয়েছে ১৫ হাজার টাকার চেক ও সনদ।
এর আগে জাতীয় সঙ্গীত দিয়ে শুরু হওয়া সমাপনী অনুষ্ঠানে পরিবেশন করা হয় জাপানি সঙ্গীত। অনুষ্ঠানের বড় অংশ জুড়ে ছড়িয়ে পড়ে জাদুর আবেশ। জাদুকরের নানা কৌশলে প্রকাশ পায় কোডিংয়ের গাণিতিক খেলা।