উপচার্যের পদত্যাগ দাবিতে টানা আটদিনের অনশন ভেঙেছেন সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। বিজ্ঞান লেখক ও প্রযুক্তিবিদ জাফর ইকবাল ও তার স্ত্রী অধ্যাপক ইয়াসমিন হকের আশ্বাসে বুধবার সকাল ১০টা ২০ মিনিটে তাদের অনশন ভেঙেছেন তারা। ক্যাম্পাসে থাকা শিক্ষার্থীদের সঙ্গে হাসপাতাল থেকে এসে অনশন ভেঙেছেন অসুস্থ হয়ে পড়া শিক্ষার্থীরাও।
এর আগে মঙ্গলবার দিবাগত রাত ৩টা ৫৪ মিনিটে মুহম্মদ জাফর ইকবাল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকে আসেন। এরপর ৪টার দিকে তিনি অনশনস্থলে যান। সেখান গিয়ে তিনি অনশনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলেন। এ সময় তার স্ত্রী ইয়াসমিন হকও সঙ্গে ছিলেন।
অনশন ভাঙানোর পর লেখক মুহম্মদ জাফর ইকবাল বলেন, ”আমি এইখানে আসার আগে আমার সাথে সরকারের অনেক উচ্চ পর্যায় থেকে কথা বলেছে। আমি তাদের সাথে কথা বলে এখানে এসেছি। আমি তাদের অনুরোধ করবো, আমাকে যে কথাগুলো তারা দিয়েছেন, সেই কথাগুলো যেন রক্ষা করেন।”
গ্রেপ্তার সাবেক শিক্ষার্থীদের মু্ক্তি দেয়া এবং শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলার প্রত্যাহার করার জন্যও তিনি আহ্বান জানান।
অনশন ভাঙ্গলেও উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে তাদের আন্দোলন চলবে বলে জানিয়েছেন আন্দোলনকারীদের একজন নাফিসা আঞ্জুম ইমু।
গত ১৩ জানুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়টির বেগম সিরাজুন্নেসা চৌধুরী হলের প্রাধ্যক্ষের বিরুদ্ধে অসদাচরণসহ বিভিন্ন অভিযোগ তুলে তার পদত্যাগসহ তিন দফা দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন হলের কয়েক শ ছাত্রী। একপর্যায়ে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর ছাত্রলীগ হামলা চালায়। পুলিশ শিক্ষার্থীদের লাঠিপেটা করে এবং তাদের লক্ষ্য করে গুলি ও সাউন্ড গ্রেনেড ছোড়ে। পরে এ আন্দোলন উপাচার্য ফরিদ উদ্দিন আহমেদের পদত্যাগের এক দফা দাবিতে রূপ নেয়।
আজ আন্দোলনের ১৪তম দিন। প্রথম ছয় দিনে দাবি পূরণ না হওয়ায় ১৯ জানুয়ারি বেলা তিনটা থেকে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে আমরণ অনশনে বসেন ২৪ শিক্ষার্থী। তাদের একজনের বাবা অসুস্থ হয়ে পড়ায় বাড়ি চলে যান তিনি। গত শনিবার রাত আটটা থেকে আন্দোলনরত আরও পাঁচ শিক্ষার্থী অনশনরতদের সঙ্গে যোগ দিয়ে গণ-অনশন কর্মসূচি শুরু করেন। যারা হাসপাতালে ছিলেন, তাদের হাসপাতাল থেকে আজ সকালে আনা হয়। অন্যরা উপাচার্যের বাসভবনের সামনে অনশনে ছিলেন। সব মিলিয়ে অনশনরত ২৭ শিক্ষার্থী আজ অনশন ভাঙেন। আরেক অনশনকারী অস্ত্রোপচারের কারণে হাসপাতালে ভর্তি আছেন।