ভোটারদের কেন্দ্র, প্রার্থী, ভোটার সংখ্যার পাশাপাশি ফলাফলের তথ্য দিয়েছে ভোটের অ্যাপ ‘স্মার্ট ইলেকশন ম্যানেজমেন্ট’। নির্বাচনের এই অ্যাপটির ‘ফলাফল’ পেইজে কত শতাংশ ভোট পড়েছে অপশনে দুই ঘণ্টা বিরতিতে আপডেট দেয়ার ঘোষণা দিয়েছিলো কমিশন। ব্যাবহারকারী তার নিজ কেন্দ্রের আপডেট পেলেও সেটা নিয়মিত হয়নি। একই সঙ্গে সকল আসন ট্যাবে তথ্য পাওয়া যায়নি।
একইসঙ্গে বিভিন্ন কেন্দ্রের প্রিসাইডিং অফিসাররা জানিয়েছেন, নির্বাচন কমিশনের চালু করা মোবাইল অ্যাপে ঢুকে সকাল ১০টায় আপডেট দিতে কোনো সমস্যা হয়নি। কিন্তু দুপুর ১২টার আপডেট দিতে গেলে অ্যাপ আর কাজ করছে না। তাই বাধ্য হয়ে মোবাইলে এসএমএস দিয়ে তথ্য পাঠানো হচ্ছে। অবশ্য কোনো কোনো প্রিসাইডিং অফিসার জানিয়েছেন, মোবাইল অ্যাপ ব্যবহার না করে তারা শুরু থেকেই এসএমএস দিয়ে তথ্য দিচ্ছেন।
এছাড়াও যারা প্রথমবার ভোটের দিন অ্যাপটি ডাউনলোড করে ব্যবহার করতে গিয়েছেন, এনআইডি ও জন্ম তারিখ দেওয়ার পর তথ্য পেতে ঘণ্টা খানিক সময় লেগে যাচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন অ্যাপ ব্যবহারকারীরা। অনেক ক্ষেত্রে আবার অ্যাপটি কাজও করেনি বলে জানিয়েছেন ভুক্তভোগীরা।
ভোট পড়ার তথ্য দুই ঘণ্টা পর পর অ্যাপে আপডেট হওয়ার কথা থাকলেও ভোটের সকালে সেই তথ্য পাওয়া যায়নি। অ্যাপটির ‘ফলাফল বিশ্লেষণ’ অপশনে প্রবেশ করলে লেখা উঠছিল, ‘এই ফিচারটি শীঘ্রই আসছে’।
এতে ভোটারদের পাশাপাশি নির্বাচন পর্যবেক্ষকরা বিপত্তিতে পড়তে পারেন বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
এ নিয়ে নির্বাচন কমিশনের মুখপাত্র ইসি সচিব মো. জাহাংগীর আলম রোববার বেলা ১টার দিকে নির্বাচন কমিশন ভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে নির্বাচন কমিশনের অ্যাপে ঝামেলা হচ্ছে জানিয়ে বলছেন, সমস্যা তৈরি করেছে ইউক্রেন। তবে সারারাত বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা করা হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘ইউক্রেন ও জার্মানিসহ আরেকটি দেশ থেকে এই অ্যাপকে স্লো করে দেয়া হয়েছে। আমাদের টিম সারারাত কাজ করছে, এখনো করছে এটি সচল রাখতে। এটি এখন চলতেছে, কিন্তু একটু স্লো রয়েছে।’
সাংবাদিকদের প্রশ্নে ইসি সচিব আরও বলেন, ‘২১ কোটি টাকা ব্যয়ে অ্যাপ নির্মাণের খবরটি সঠিক নয়। ২১ কোটি টাকা ব্যয়ে কোনো অ্যাপ তৈরি করা হয়নি।
‘৬ বছর মেয়াদের একটি প্রকল্পের ব্যায় হলো ২১ কোটি টাকা। সেই প্রকল্পের একটি পার্ট হলো এই অ্যাপ। এটি প্রথম বছর চলছে, এখন পর্যন্ত আমরা ব্যয় করেছি ৮ কোটি টাকার মতো।’
প্রসঙ্গত, প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল বৃহস্পতিবার বলেছিলেন, নির্বাচন নিয়ে যেন আস্থার ঘাটতি না হয়, সেজন্য অ্যাপটি তৈরি করা হয়েছে। ‘এর মাধ্যমে ভোটের দিন দুই ঘণ্টা পরপর ভোটের সঠিক তথ্য জনগণ জানতে পারবে’ দাবি করে তিনি বলেছিলেন, “এর উদ্দেশ্য হচ্ছে, ভোটকেন্দ্রে কোনো রকম অনিয়ম বা কারচুপি হচ্ছে কি না, তা জানা।”