৬৯ টি দেশের বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের ১৩৭টি শিক্ষানবীশ দলের অংশগ্রহণে নভেম্বর রাতে পর্দা নেমেছে প্রোগ্রামিংয়ের ‘বিশ্বকাপ’ আন্তর্জাতিক কলেজিয়েট প্রোগ্রামিং প্রতিযোগিতা— ওয়ার্ল্ড আইসিপিসি’র ৪৫তম আসর।
রাজধানীর আন্তর্জাতিক কনভেনশন সেন্টার, বসুন্ধরায় অনুষ্ঠিত এই প্রোব্লেম সলভিং প্রতিযোগিতায় বাংলাদেশ থেকে অংশ নেয় ৮টি দল। প্রতিযোগিতায় বাংলাদেশ ছিল ‘এশিয়া ওয়েস্ট’ অঞ্চলের অধীন। আর এই অঞ্চলে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে ভারতের ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি, কানপুর।
বাংলাদেশের হয়ে চারটি সমস্যার সমাধান করে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষানবিশ প্রোগ্রামার দল বুয়েট_নার্ডহার্ড ৫১তম এবং শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের বারলেক্যাম্পম্যাসি ৫৬তম স্থান অর্জন করেছে।
এছাড়া, বাকি ছয়টি দল বিশেষ সম্মাননা (অনারেবল মেনশন) পেয়েছে। বিশেষ সম্মাননার তালিকায় বাংলাদেশে থেকে প্রথমেই আছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘ডিইউ_ফ্লেয়ারব্লিটজ_৪.০’। তিনটির সমাধান করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ৮২তম।
এছাড়াও দুটির সমাধান করে পয়েন্ট তালিকায় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের জেইউ_গ্লাস_হাফ_ফুল ৯৮তম স্থানে ও নর্থসাউথ ইউনিভার্সিটির এনইউএস_স্টোলিচনায়া ১০৭তম স্থানে রয়েছে।
আর একটি করে সমস্যার সমাধান করে সময়ের ব্যবধানে আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির এআইইউবি_ক্যাপচারড ১১৩তম স্থানে, ইউনিভার্সিটি অব এশিয়া প্যাসিফিকে (ইউএপি) ইউএপি_লুমোস ১১৯তম স্থান এবং রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের রুয়েট_অ্যাসার্ট ১২২তম স্থানে রয়েছে।
সকাল ১১টায়। শেষ হয় বিকেল ৪টায়। এরপর সন্ধ্যা থেকে শুরু হয় বিজয়ীদের নাম ঘোষণা। দ্রুত সময়ে সমস্যা সমাধানের ওপর নির্ভর করে একেকটি দল তালিকার শীর্ষে চলে আসতে থাকে।
চূড়ান্ত প্রতিযোগিতা শুরু হয় সকাল ১১টায়। শুরুতেই ইংরেজি আদ্যক্ষর ‘এ’ থেকে ‘এল’ পর্যন্ত ১২টি ক্রমানুসারে ‘সমস্যা’ সমাধান করতে দেওয়া হয় প্রতিযোগীদের। একটি কম্পিউটারের সামনে বসে তিন জনে মিলে সমস্যার সমাধান করতে থাকেন। যেই একটি সমস্যার সমাধান করতে পারেন তাখন তাদের ডেস্কে ঝুলিয়ে দেয়া হয় একটি করে বেলুন। বিকেল ৪টা পর্যন্ত চলে প্রতিযোগিতা। এরপর কোন দল কত দ্রুত ও কতটি সমস্যার সমাধান করতে পেরেছে, তার ওপর নম্বর দেওয়া হয়। প্রতিযোগিতায় ১১টির সমস্যার সমাধান দিয়ে চ্যম্পিয়ন হয় এমআইটি। এর মধ্যে দলটি ‘সমস্যা-সি’ সমাধান করেছে ২৫ মিনিটে, ‘সমস্যা-এল’ সমাধান করেছে ৩০ মিনিটে, ‘সমস্যা-এ’ সমাধান করেছে ৫০ মিনিটে আর ‘সমস্যা-ই’ সমাধান করেছে ১৯৬ মিনিটে।
দ্বিতীয় সেরা পিকিং ইউনিভার্সিটি দল মোট ১০টি সমস্যার সমাধান করতে পেরেছে। আর তৃতীয় সেরা দল দি ইউনিভার্সিটি অব টোকিও সমাধান করে মোট ৯টি সমস্যা।
প্রতিযোগিতায় প্রথম একটি প্রশ্নের সমাধান করে গত বছরের স্বর্ণপদক বিজয়ী দল দক্ষিণ কোরিয়ার সিউল ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি। অন্যদিকে বিকেল ৩টার মধ্যেই ১০টি সমস্যার সমাধান করে ফেলেছিল এমআইটি। প্রতিযোগিতার নিয়ম অনুযায়ী প্রথম চার ঘণ্টা প্রতিযোগিতাস্থলে বড় পর্দায় প্রতিযোগীদের সমস্যা সমাধানে লাইভ আপডেট দেওয়া হয়। তবে শেষ এক ঘণ্টা কিছু দেখানো হয় না। এটাকে আয়োজকরা ‘ব্লাইন্ড পিরিয়ড’ বলেন। এই সময়ে প্রতিযোগীদের করা সমাধানগুলো চূড়ান্ত ফলাফল ঘোষণার সময় প্রকাশ করা হয়।