গ্রামীণ টেলিকমের চেয়ারম্যান হিসেবে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নামে করা মামলা বাতিলের প্রশ্নে জারি করা রুল খারিজের বিরুদ্ধে আপিল দায়ের করা হয়েছে। আপিল আবেদনে শ্রম আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে শান্তিতে নোবেলজয়ীর বিরুদ্ধে সরকারের পক্ষে করা মামলার কার্যক্রম স্থগিত চাওয়া হয়েছে।
বুধবার (২৪ আগস্ট) ড. ইউনূসের আইনজীবী আব্দুল্লাহ আল মামুন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে ২০২১ সালের ৯ সেপ্টেম্বর ঢাকার তৃতীয় শ্রম আদালতে কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান অধিদফতরের শ্রম পরিদর্শক আরিফুজ্জামান বাদী হয়ে ড. ইউনূসসহ চার জনের নামে ওই মামলা করেন। ড. ইউনূস ছাড়াও গ্রামীণ টেলিকমের এমডি আশরাফুল হাসান, পরিচালক নুরজাহান বেগম ও মো. শাহজাহানকে মামলায় বিবাদী করা হয়।
তবে ২০২১ সালের ১২ ডিসেম্বর শ্রম আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে গ্রামীণ টেলিকমের চেয়ারম্যান ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিরুদ্ধে করা মামলার কার্যক্রম স্থগিত করেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে মামলা কেন বাতিল করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন আদালত। বিচারপতি মো. হাবিবুল গণি ও বিচারপতি মো. রিয়াজ উদ্দিন খানের হাইকোর্ট বেঞ্চ এই আদেশ দেন। পরে হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত চেয়ে আবেদন করে রাষ্ট্রপক্ষ।
এরপর গত ১৩ জুন শ্রম আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিরুদ্ধে করা মামলার কার্যক্রম নিম্ন আদালতে দুই মাস স্থগিত থাকবে বলে আদেশ দেন আপিল বিভাগ। একইসঙ্গে এই সময়ের মধ্যে শ্রম আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিরুদ্ধে করা মামলা কেন বাতিল হবে না, এই মর্মে জারি করা রুল নিষ্পত্তি করতে নির্দেশ দেওয়া হয়।
এদিকে গত ২০ জুলাই ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিরুদ্ধে করা মামলা দ্রুত নিষ্পত্তি করতে হাইকোর্টে আবেদন জানায় শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়।
ওই মামলায় শ্রমিক কল্যাণ ফাউন্ডেশনে নির্দিষ্ট লভ্যাংশ জমা না দেওয়া, শ্রমিকদের চাকরি স্থায়ী না করা, গণছুটি নগদায়ন না করায় শ্রম আইনের ৪ এর ৭, ৮, ১১৭ ও ২৩৪ ধারায় অভিযোগ আনা হয়।
তবে মামলাটি বাতিল চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন করেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
সে আবেদনের শুনানি নিয়ে শ্রম আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে শান্তিতে নোবেলজয়ী ও গ্রামীণ টেলিকমের চেয়ারম্যান ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নামে করা মামলা বাতিলের প্রশ্নে জারিকৃত রুল খারিজ করেন হাইকোর্ট। এর ফলে তার বিরুদ্ধে শ্রম আদালতে মামলাটি চলবে বলে জানান আইনজীবীরা। গত ১৭ আগস্ট বিচারপতি এস এম কুদ্দুস জামান ও বিচারপতি ফাহমিদা কাদেরের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চে এ রায় দেন। পরে এ রায়ের বিরুদ্ধে তিনি আপিল দায়ের করলেন।
অপরদিকে শ্রমিক-কর্মচারীদের কল্যাণ তহবিলের অর্থ আত্মসাৎ ও অর্থ পাচারের অভিযোগে গ্রামীণ টেলিকম লিমিটেডের এমডি নাজমুল ইসলাম, গ্রামীণ টেলিকম শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়ন প্রতিনিধি মো. মাইনুল ইসলাম, আইনজীবী মো. ইউসুফ আলী ও জাফরুল হাসান শরীফকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আগামী ২৫ আগস্ট সকাল সাড়ে ১০টা থেকে বেলা দেড়টা পর্যন্ত পর্যায়ক্রমে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় দুদকের প্রধান কার্যালয়ে হাজির হতে নির্দেশ দিয়েছে দুদক।