টাওয়ার সংখ্যা, আয় ও বাজার নিয়ন্ত্রণের হার অন্য সবার চেয়ে অস্বাভাবিক বেশি হওয়ায় মোবাইল ফোন টাওয়ার কোম্পানি ইডটকো-কে এসএমপি (সিগনিফিকেন্ট মার্কেট পাওয়ার) তথা ‘তাৎপর্যপূর্ণ বাজার ক্ষমতা’ ঘোষণা করা হয়েছে। নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন বিটিআরসি’র আরোপিত বিধিনিষেধ অনুযায়ী, একটি মোবাইল অপারেটর যদি এক প্রান্তিকে ১০০টি টাওয়ার তৈরি করে, তার ২৫টি তৈরির দায়িত্ব দিতে পারবে ইডটকোকে। এরফলে সব মোবাইল ফোন অপারেটর একটি প্রান্তিকে তাদের বিক্রি,লিজ বা রোলব্যাকের ৭৫ শতাংশ থাকবে তিন টাওয়ার কোম্পানির জন্য। ওই তিন টাওয়ার কোম্পানি প্রতিযোগিতার মাধ্যমে যে যতো টাওয়ার নিতে পারে।
টাওয়ার ব্যবসার ৮৬ শতাংশের বেশি টাওয়ার এবং রাজস্বের দিক দিয়ে ৯৮ শতাংশের মতো বাজারহিস্যা ইডটকোর দখলে থাকায় বাজার ভারসাম্য রক্ষায় এই বিধিনিষেধ বলে জানাগেছে।
ইডটকো-কে সিএমপি ঘোষণা করায়, এখন থেকে সামিট টাওয়ারস লিমিটেড, কীর্তনখোলা টাওয়ার বাংলাদেশ লিমিটেড ও এবি হাইটেক কনসোর্টিয়াম লিমিটেডকে ব্যবসা দিতে বাধ্য হবে চারটি মোবাইল অপারেটর রয়েছে—গ্রামীণফোন, রবি, বাংলালিংক ও টেলিটক। একসময় এই অপারেটরগুলো নিজেরা মোবাইল নেটওয়ার্ক পরিচালনার জন্য টাওয়ার বসাত। ২০১৮ সালের নভেম্বরে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) চারটি টাওয়ার কোম্পানিকে লাইসেন্স দেয়।
প্রসঙ্গত, দেশের টাওয়ার কোম্পানিগুলোর মোট টাওয়ার সংখ্যা হলো ১৬ হাজার ২৬৩টি। এরমধ্যে ইডটকোর টাওয়ার সংখ্যা ১৪ হাজার ১২১টি যার ৭৮টির কাজ চলামান এবং কার্যাদেশ আছে কিন্তু কাজ শুরু হয়নি এমন টাওয়ারের সংখ্যা ৪৩৪টি।
অপরদিকে বাকি তিন টাওয়ার কোম্পানি মধ্যে সামিটের টাওয়ার রয়েছে ১ হাজার ৩৩৬টি। এরমধ্যে পূর্ণ টাওয়ার ১ হাজার ৩ টি, কাজ চলমান ২৫৭ টি এবং কার্যাদেশ আছে কিন্তু কাজ শুরু হয়নি এমন ৭৬ টি টাওয়ার। কীর্তনখোলার আছে ৪১২ টি। এরমধ্যে পূর্ণ টাওয়ার ৩১৪ টি, কাজ চলমান ৭৭ টি এবং কার্যাদেশ আছে কিন্তু কাজ শুরু হয়নি এমন ২১ টি টাওয়ার। এবিহাইটেকের টাওয়ার সংখ্যা ৩৯৪টি। এরমধ্যে পূর্ণ টাওয়ার ২১০ টি, কাজ চলমান ১৮৪টি টাওয়ারের।
মালয়েশিয়াভিত্তিক বহুজাতিক প্রতিষ্ঠান ইডটকোর মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, বাংলাদেশ, কম্বোডিয়া, শ্রীলঙ্কা, পাকিস্তান, ফিলিপাইন, মিয়ানমার ও লাওসে ব্যবসা রয়েছে। এটির মূল মালিক প্রতিষ্ঠান মালয়েশিয়া আজিয়াটা বারহাদ। আজিয়াটা আবার বাংলাদেশের মোবাইল অপারেটর রবির বেশির ভাগ শেয়ারের মালিক।