ফেসবুক হ্যাক নিয়ে দেশজুড়ে চলছে লঙ্কা কাণ্ড। এজন্য এটি ব্যবহারে এখন সকলকেই সচেতন হওয়া দরকার। দুই স্তর নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণের পাশাপাশি অ্যাকাউন্ট এবং ফেসবুক পেজের নিরাপত্তা রক্ষার জন্য সন্দেহজনক অনুরোধ এবং কার্যক্রমের ওপর নজর শ্যেন দৃষ্টি দিতে হবে। কাজটি সহজ করতেই অনুসরণ করতে পারেন নিচের ৫ কৌশল।
শক্তিশালী পাসওয়ার্ড এবং টু-ফ্যাক্টর অথেন্টিকেশন
একটি শক্তিশালী এবং অসাধারণ পাসওয়ার্ড পছন্দ করুন। আপনার নাম, ফোন নাম্বার, ইমেইল ঠিকানা বা সাধারণ শব্দ যোগ করা থেকে বিরত থাকুন। অন্যান্য অনলাইন সেবায় আপনার ফেসবুকের পাসওয়ার্ড একবারের বেশি ব্যবহার করা এবং অন্য কারো সাথে নিজের পাসওয়ার্ড শেয়ার করা থেকে সবসময় বিরত থাকুন।
আপনার অ্যাকাউন্টকে আরো নিরাপদ করার জন্য নিজের এবং আপনার ব্যাবসার সাথে জড়িত অন্যান্য সবার অ্যাকাউন্টে টু-ফেক্টর অথেন্টিকেশন চালু করুন। আপনি এই বাড়তি নিরাপত্তা স্তরটি একবার সেট করে নিলে অন্য কোন কম্পিউটার বা মোবাইল ফোন থেকে আমাদের অপরিচিত কেউ যদি আপনার অ্যাকাউন্টে লগ ইন করতে চেষ্টা করে, তাহলে প্রতিবারই আমরা আপনাকে কোড বা লগ ইন নিশ্চিত করতে বলবে।
টু-ফ্যাক্টর অথেনটিকেশন সেট আপ ও নিয়ন্ত্রণ এবং অপরিচিত লগ ইন-এর জন্য সতর্কবার্তা পাওয়া সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে হেল্প সেন্টার পরিদর্শন করুন।
পেজের কার্যক্রম ও নিয়ম-নীতি পর্যালোচনা
পেজের যেসব কার্যক্রম এবং নিয়ম-নীতি আছে সেগুলোর সাথে নিজেকে পরিচিত করুন। যাদের আপনার পেজের সেটিং-এ অ্যাডমিন অ্যাক্সেস আছে, তাদের নিয়মিত পেজের কার্যক্রম এবং নিয়ম-নীতি পর্যালোচনা করা এবং আপনার পেজে কোন বিজনেস ম্যানেজারকে যুক্ত করার সময় নিজের দেয়া নিয়মগুলোর ব্যাপারে এক মূহুর্ত ভেবে নিন। আপনার পেজের অ্যাডমিন একজনের বেশি রাখাটা বুদ্ধিমানের কাজ হবে। যেন কোন কারণে কখনো আপনি আপনার পেজের অ্যাক্সেস হারিয়ে ফেলেন, আপনার বিশ্বস্ত কেউ পেজের আপডেট করা’সহ অন্যান্য কাজ চালিয়ে যেতে পারেন এবং আপনাকেও আবার সেখানে ফিরিয়ে নিতে পারেন।
অপরিচিত ফ্রেন্ড রিকুয়েস্ট
মানুষের সাথে বন্ধুত্ব করে তাদের কাজ থেকে কার্যসিদ্ধি করার লক্ষ্যে স্ক্যামার বা সন্দেহজনক ব্যাক্তি নকল অ্যাকাউন্ট তৈরি করতে পারে। এদের ফ্রেন্ড রিকুয়েস্ট গ্রহণ করলে তারা আপনার টাইমলাইনে স্প্যাম পোস্ট করে আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করতে পারে।
স্ক্যামার আপনাকে এবং আপনার পরিচিতজনদের বিদ্বেষপূর্ণ পোস্টে ট্যাগ করতে এবং ম্যাসেজ পাঠাতে পারে, তাই সতর্কতার সাথে আপনার পরিচিত এবং বিশ্বস্ত মানুষদের বন্ধুত্বের অনুরোধ গ্রহণ করাকে আমরা অনুপ্রাণিত করি। একইভাবে, আপনার পেজ ম্যানেজ করার জন্য এমন কোন নিয়ম-নীতি রাখবেন না যে বিষয়ে আপনি বিস্তারিত জানেন না। আপনার পেজের সন্দেহজনক কোন অনুরোধ আপনি এখানে রিপোর্ট করতে পারেন।
সন্দেহজনক লিংক এবং ক্ষতিকর সফটওয়্যার
অপরিচিত লিংক, বিশেষ করে আপনি যাদের জানেন না বা বিশ্বাস করেন না তাদের কাছ থেকে আসা লিংকগুলোর ব্যাপারে সতর্ক থাকুন। সন্দেহজনক লিংকে ক্লিক করা, সন্দেহজনক ফাইল ওপেন করা বা সন্দেহজনক অ্যাপ ইনস্টল করা বা ব্রাউজার এক্সটেনশন করার বিষয়ে কোন বন্ধু বা পরিচিত সংস্থার কাছ থেকে অনুরোধ আসলেও সেগুলোর ব্যাপারে সতর্ক থাকুন। এর মধ্যে ফেসবুক, ব্যাক্তিগত ম্যাসেজ এবং ই-মেইলে পাঠানো লিংক অন্তর্ভূক্ত।
মনে রাখবেন, ফেসবুক কোন মেইলে কখনো আপনার পাসওয়ার্ড জানতে চাইবে না। ফেসবুক থেকে পাঠানো বলে দাবি করা কোন মেইলের সত্যতা প্রমাণ করার জন্য সম্প্রতি ফেসবুক সিকিউরিট ও লগ ইন সেটিং-এ যে মেইলগুলো পাঠিয়েছে তা দেখে সবসময় নিশ্চিত হতে পারেন। আপনি যদি মনে করেন আপনার ব্যাক্তিগত তথ্য শেয়ার করার জন্য কোন পোস্ট বা বার্তা পাঠানো হচ্ছে, তাহলে জরুরী ভিত্তিতে এখানে রিপোর্ট করুন।
আপনার ডিভাইস বা কম্পিউটার নেটওয়ার্ককে ভাইরাস আক্রমণ থেকে বাঁচানোর জন্য সন্দেহজনক সফটওয়্যারের চিহ্নগুলো এবং তা থেকে আপনার ডিভাইসকে রক্ষা করার উপায় সম্পর্কে জানুন। আপনার ডিভাইস, ওয়েব ব্রাউজার এবং অ্যাপ্লিকেশন আপ-টু-ডেট রাখা এবং সন্দেহজনক অ্যাপ্লিকেশন বা ব্রাউজ এড-অন অপসারণ করার বিষয়গুলো মনে রাখবেন।
ট্রাস্টেড কন্টাক্ট
যদি কোন কারণে আপনি আপনার অ্যাকাউন্ট এবং পেজের অ্যাক্সেস হারিয়ে ফেলেন, সেজন্য আগেই আপনার বন্ধুদের ট্রাস্টেড কন্টাক্ট হিসেবে সেট করে রাখতে পারেন। আপনি যেন নিজের অ্যাকাউন্ট ফিরে পেতে পারেন, সেজন্য তারা আপনাকে ইউআরএল-এর মাধ্যমে একটি রিকাভারী কোড পাঠাতে পারবে।
সবশেষে, আপনার যদি মনে হয় আপনার ব্যাক্তিগত অ্যাকাউন্টের বিষয়ে আপনাকে কোন না কোনভাবে আপোষ করতে হচ্ছে তাহলে facebook.com/hacked এবং আপনার পেজ সিকিউরিটি নিশ্চিত করার জন্য হেল্প সেন্টার ভিজিট করুন। আপনার অ্যাকাউন্টের নিরাপত্তা বাড়ানোর আরো বিভিন্ন উপায় এবং ফেসবুকের নিরাপত্তা বিষয়ে বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুন প্রাইভেসি বেসিকস।