লুনার ভিআর দিয়ে জয় করেছেন বিশ্ব। এরপন আমন্ত্রণ পেয়ে বিমান টিকিট ও হোটেল বুকিংও দিয়েছেন। কিন্তু ভিসা প্রত্যাখ্যান হওয়ায় মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা (নাসা) ভ্রমণে অনিশ্চয়তায় পড়েছে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন টিম ‘অলিক’।
‘স্পেস অ্যাপস চ্যালেঞ্জ’-১৮ চ্যাম্পিয়ন হিসেবে প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী ২১ থেকে ২৩ জুলাই যুক্তরাষ্ট্রেরর ফ্লোরিডায় নাসার কেনেডি স্পেস সেন্টারে একটি অনুষ্ঠানে অংশ নেয়ার কথা ছিল। পূর্ব নির্ধারিত তারিখ অনুযায়ী, আগামী ১৯ জুলাই নাসা’র উদ্দেশে যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি দেয়ার কথা রয়েছে সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (সাস্ট) এই দলটির।
কিন্তু গত ১১ জুলাই (বৃহস্পতিবার) তাদের ভিসা প্রত্যাখ্যান করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন টিম অলিক দলনেতা আবু সাবিক মাহদী।
ডিজি বাংলা-কে তিনি বলেন, চলতি বছরের ২১ জুন নাসা থেকে টিম অলিককে আমন্ত্রণ জানানো হয়। সেইসঙ্গে ১ জুলাই ভিসার জন্য আবেদন করা হয়। ১১ জুলাই ভিসার জন্য ইন্টারভিউ শেষে আবেদন প্রত্যাখ্যান করে দেয় মার্কিন দূতাবাস। কারণ হিসেবে যথারীতি আইএন এর ২১৪ (বি) ধারায় ভিসা প্রত্যাখ্যান করা হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
এ বিষয়ে বেসিস, আইসিটি ডিভিশন, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও ইউএস অ্যাম্বাসিতে যোগাযোগ করা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, সময় হাতে না থাকায় এখন সরকারের সংশ্লিষ্টদের দ্বারস্থ হয়েছি। বেসিস আমাদের আশ্বস্ত করেছে। আশাকরি, বাধা কেটে যাবে।
জানাগেছে, টিম অলিকের ৫ সদস্য, আইসিটি মন্ত্রণালয়ের ৬ সদস্য, বিসিসের ৫জনসহ মোট ১৬ জনের একটি টিম নাসায় যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু টিমের মেম্বার, মেন্টর, বেসিসসহ ৮ জনের ভিসা জটিলতা থাকায় প্রত্যাখ্যান করা হয়েছে।
টিম অলিকের সদস্যরা হলেন- বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের ২০১৩-১৪ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী এস এম রাফি আদনান, ভূগোল ও পরিবেশ বিদ্যা বিভাগের ২০১৩-১৪ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী কাজী মাইনুল ইসলাম ও আবু সাবিক মাহদী ও একই বিভাগের ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী সাব্বির হাসান।
অপরদিকে বেসিস’র পক্ষ থেকে ভিসা প্রত্যাখ্যাত হয়েছেন বেসিস সেক্রেটারি হাশিম আহমেদ, নাসা অ্যাপস চ্যালেঞ্জ প্রকল্প পরিচালক ওয়াসেক সাজ্জাদ এবং লজিস্টিক ম্যানেজার মোহাম্মদ মনিরুল হক।
টিম অলিকের মেন্টর বিশ্বপ্রিয় চক্রবর্তী বলেন, স্পেস অ্যাপস চ্যালেঞ্জ ২০১৮ প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন হওয়াটা অবশ্যই বাংলাদেশের জন্য গর্বের কিন্তু নাসা থেকে আমন্ত্রণ পাওয়া সত্ত্বেও ভিসা সংক্রান্ত জটিলতায় আমাদের সেখানে যাওয়া এখন প্রায় অনিশ্চিত। এই রকম একটি প্রতিযোগিতায় আমাদের দেশ থেকে একটি দল প্রথমবারের মত চ্যাম্পিয়ন হয়ে যদি সেখানে অংশগ্রহণ করতে না পারে তাহলে ভবিষ্যতে আমাদের দেশের তরুণ প্রতিযোগীদের বিভিন্ন বৈশ্বিক প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের উৎসাহ হারিয়ে ফেলবে, তাদের স্বপ্ন দেখার পরিধি অনেক ছোট হয়ে যাবে। এই সকল বিষয়ে বাংলাদেশ সরকার এবং বাংলাদেশে অবস্থানরত বিভিন্ন দেশের দূতাবাসের উচিৎ এই তরুণ মেধাবীদের পাশে এসে দাঁড়ানো এবং তাদের সর্বাত্মকভাবে সাহায্য করা।
প্রসঙ্গত, নাসা চ্যালেঞ্জ অ্যাপস’১৮ প্রতিযোগিতায় বিশ্বের ৬৯টি দেশের ২৭২৯টি টিমের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করে প্রথমবারের মতো বেস্ট ডেটা ইউটিলাইজেশন ক্যাটগরিতে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হয় শাবিপ্রবি টিম ‘অলিক’।
এরপর মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থার (নাসা) পক্ষ থেকে অংশ নেওয়ার জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয় টিম অলিকে। কিন্তু ভিসা জটিলতায় তাদের নাসায় যাওয়া অনেকটা অনিশ্চয়তার মুখে পরেছে।
গত বছরের শেষের দিকে নাসা আয়োজিত নাসা স্পেস অ্যাপস চ্যালেঞ্জ-২০১৮ এ ‘বেস্ট ডেটা ইউটিলাইজেশন’ শাবিপ্রবির টিম অলিকসহ বিশ্বের ৭৯টি দেশ থেকে বাছাইয়ের পর ২ হাজার ৭২৯টি দলকে পেছনে ফেলে শীর্ষ চারে স্থান করে নেয় টিম অলিক।