ন্যাশনাল ইকুইপমেন্ট আইডেন্টিটি রেজিস্টার (এনইআইআর) সিস্টেমের ৩ মাসের পরীক্ষামূলক কার্যক্রম শেষ হচ্ছে আজ। ফলে শুক্রবার (১ অক্টোবর) থেকে বন্ধ হতে শুরু করবে অনিবন্ধিত সব ধরনের মোবাইল ফোন সেট। ‘অবৈধ’ হলেই দিনের শুরুতেই ফোনের পর্দায় ভেসে উঠবে বিটিআরসি’র সতর্ক বার্তা।
এই খুদে বার্তায় জানানো হবে, ‘সেটটি অবৈধ, কিছুক্ষণের মধ্যে সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে’।
স্বয়ংক্রিয়ভাবেই অবৈধ পথে দেশে আসা বা অনিবন্ধিত এসব ফোন সেটগুলো অচল হয়ে পড়বে বলে নিশ্চিত করেছেন টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিটিআরসির ভাইস চেয়ারম্যান সুব্রত রায় মৈত্র।
অবৈধ সেট সনাক্তে এনইআইআর পদ্ধতিতে নিবন্ধনের প্রক্রিয়া বিষয়ে ডিজিবাংলা-কে তিনি জানিয়েছেন, তিনটি বিষয়কে আমলে নিয়েই এই নিবন্ধন প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে।
তিনি বলেন, এনআইডি’র সঙ্গে গ্রাহকের সিম নম্বর এবং আইএমইআই নম্বর না মিললে সেটগুলো বন্ধ করে দেয়া হবে।
এর ফলে চুরি হওয়ার পর যেসব সেট জিডি করা আছে সেগুলোও সহজেই সনাক্ত করা সম্ভব হবে এবং এগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের পথ খুলবে বলে প্রত্যাশা সংশ্লিষ্টদের।
এদিকে বার্তা পাঠানো হলেও গ্রাহকদের কথা মাথায় রেখে সেট বন্ধের প্রক্রিয়ায় বিক্রেতাকে অনিবন্ধিত সেট ফেরত দেয়া ও নেয়ার সুযোগ রাখছে বিটিআরসি। অবৈধ সেট ফেরত না নিলে বিতক্রেতার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানিয়েছেন বিটিআরসির কমিশনার (তরঙ্গ ব্যবস্থাপনা) এ কে এম শহীদুজ্জামান।
তিনি বলেন, ১ অক্টোবর থেকে কোনও গ্রাহক ফোন চালু করতে গেলে একটি প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যাবেন। ফোনটি বৈধ হলে কয়েকটি ধাপ অগ্রসর হলেই সেটি চালু হয়ে যাবে। যদি ফোনটি অবৈধ হয় তাহলে নেটওয়ার্কে চালু করার সময় মেসেজ আসবে। মেসেজের মাধ্যমে ক্রেতাকে জানানো হবে যে ‘তার ফোন সেটটি বৈধ নয়। কিছুক্ষণের মধ্যে ফোনটি বন্ধ হয়ে যাবে।’ এই মেসেজ ফোন বিক্রেতাকে দেখিয়ে ক্রেতা তার ফোন সেটটি বদলে নিতে পারবেন বা টাকা ফেরত নিতে পারবেন। কোনও বিক্রেতা ফোন বদলে না দিলে বা টাকা ফেরত না দিলে ক্রেতার স্বার্থে প্রয়োজনে আমরা আইনগত ব্যবস্থাও নেবো। বিক্রেতাও বুঝবেন এভাবে এসব ফোন আর বিক্রি করা যাবে না। আমরা চাই ক্রেতা, বিক্রেতা, উৎপাদক সবার স্বার্থটি দেখতে।
দেশের মোবাইল শিল্পখাতকে এগিয়ে নিতে চার উদ্দেশ্যে নিয়ে এ বিষয়ে বিটিআরসি কঠোর অবস্থানে যাবে বলে জানিয়েছেন তরঙ্গ ব্যবস্থাপনা বিভাগের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শহিদুল আলম।
প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী,গত ৩০ জুলাই পর্যন্ত দেশে মোট ব্যবহৃত হ্যান্ডসেটের মধ্যে এক কোটি আট লাখ ৩৭ হাজার ৩৫৯টি ডেটাবেজে নিবন্ধিত হয়েছে। এর মধ্যে অবৈধ হ্যান্ডসেট সনাক্ত হয়েছে ৩১ লাখ ৪৬ হাজার ১১৩টি। বৈধতা পেয়েছে ৭৬ লাখ ৯১ হাজার ২৪৬টি হ্যান্ডসেট।
প্রসঙ্গত, গত ১ জুলাই এনইআইআর সিস্টেমটি চালু হয়। সিস্টেমটি পরীক্ষামূলকভাবে চালু করে বিটিআরসি। সে সময় বলা হয়, ৩০ জুন পর্যন্ত মোবাইল ফোন অপারেটরের নেটওয়ার্কে চালু থাকা সব মোবাইল ফোন সেট স্বয়ংক্রিয়ভাবে এনইআইআর সিস্টেমে নিবন্ধিত হয়ে যাবে। ১ জুলাই থেকে নতুন সেটগুলো চালু করতে হলে নিবন্ধন করে চালু করতে হবে। ১ জুলাইয়ের পরে দেশে চালু হওয়া অবৈধ সেট নিবন্ধনের জন্য ৩ মাস চালু থাকবে। ৩ মাস পরে সেটগুলো নিয়ে সিদ্ধান্তের কথা জানানো হবে।