যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যকার বাণিজ্য যুদ্ধ ক্রমেই জটিল থেকে জটিলতর হচ্ছে। দুই দেশই প্রযুক্তিকে ক্রমেই নিজেদের আয়ত্বে আনার চেষ্টায় লিপ্ত। চিপ তৈরি থেকে শুরু করে স্মার্টফোন, ইলেকট্রিক ভেহিকল ইত্যাদিতে দুই দেশ বিশ্বের লাখো ব্যবসায়ের ব্যাকবোন হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।
গ্রাহকদের ইন্টারনেটভিত্তিক সেবার ক্ষেত্রে চীনা কোম্পানিগুলো শক্ত অবস্থান নিতে পারলেও, হার্ডওয়্যারের ফান্ডামেন্টাল প্রযুক্তি এবং এন্টারপ্রাইজ সফটওয়্যারে বেশ পিছনে আনে চীন। আঞ্চলিক রাজনীতি ক্রমেই প্রকট হওয়ার কারণে যুক্তরাষ্ট্র ও চীন নিজেদের সক্ষমতাকে আত্বনির্ভরশীর হিসেবে গড়ে তুলতে চেষ্টা করছে। যুক্তরাষ্ট্র কর্তৃক হুয়াওয়ে নিষিদ্ধ হওয়ায়, চীনা কোম্পানিগুলোর বিদেশ নির্ভরতাকে নতুনভাবে ভাবতে হচ্ছে।
চীনের আরেকটি ভাবনার জায়গা হলো সোর্স কোড হোস্টিং। চীনের ডেভেলপাররা গিটহাবের উপর প্রায় পুরোটাই নির্ভরশীর। তবে রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব নিয়ে এখন চীনা ডেভেলপরাররা গিটহাট ব্যবহারের ভবিষৎ নিয়ে চিন্তায় পড়ে গেছেন।
এই পরিস্থিতি নতুন নয়। গত জুলাইতে মাইক্রোসফটের মালিকানাধীন গিটহাব ইরান, সিরিয়া, ক্রিমিয়াসহ বিভিন্ন দেশে কয়েকটি সেবা বন্ধ করেছে। এতে আন্তর্জাতিক ডেভেলপার কমিউনিটিতে দুঃচিন্তা বেড়েছে।
পরিস্থিতি মোকাবেলায় নতুন সোর্স কোড হোস্টিং প্লাটফর্ম তৈরির উদ্যোগ নিয়েছে চীন। গিটি নামে স্বাধীন এবং ওপেন সোর্স হোস্টিং প্লাটফর্ম তৈরি করা হচ্ছে। ওপেন সোর্স চীন এবং গিটি যৌথভাবে এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। সরকারের সহায়তায় বিভিন্ন গবেষণা বিশ্ববিদ্যালয় এবং হুয়াওয়েসহ প্রাইভেট খাতের ১০টি প্রতিষ্ঠান এ বিষয়ে সহযোগিতা করছে।
ইতিমধ্যেই গিটিতে এক কোটির অধিক ওপেন সোর্স রিপোজিটোরিস হোস্ট করা হয়েছে এবং প্রায় ৫০ লাখ ডেভেলপার এর সেবা নিয়েছেন। অন্যদিকে গিটহাবে ১০ কোটির অধিক রিটোজিটোরিস এবং তিন কোটি ১০ লাখের অধিক ডেভেলপার রয়েছে।
একটি ওপেন সোর্স ইকোসিস্টেম রাতারাতি গড়ে উঠে না। এটি বালুকণা থেকে একটি টাওয়ার বিল্ডিং গড়ে তোলার মতো প্রক্রিয়া। এখন চীনের ডেভেলপারদের উদ্ভাবনী শক্তি দেখার পালা।
ডিবিটেক/বিএমটি