প্রতি মাসেই বাড়ছে ইন্টারনেট গ্রাহকের সংখ্যা। সেই ধারবাহিকতায় ধারণা করা হচ্ছিলো বছর শেষে দেশে ইন্টারনেট সংযোগ সংখ্যা ১০ কোটি পেরিয়ে যাবে। তবে নভেম্বর শেষে একটা ধাক্কা খেয়েছে। নতুন সংযোগ বাড়ার পরিবর্তে ঝড়ে গেছে ৫ লাখ ১০ হাজার ইন্টারনেট সংযোগ। আর এর সবচেয়ে বেশি প্রভাব ওয়াইম্যাক্স সংযোগে পড়লেও বাদ যায়নি মোবাইল ইন্টারনেট। তবে গ্রাহক বেড়েছে ব্রডব্যান্ডে।
অন্যান্য সংযোগে কমলেও ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সংযোগ বাড়াটা প্রত্যাশিত এবং ভবিষ্যত প্রবৃদ্ধির আগাম বার্তা বলে মন্তব্য করেছেন আইএসপিএবি মহাসচিব ইমদাদুল হক। ডিজিবাংলা-কে তিনি বলেন, মূলত সরকার নতুন এনটিটিএন লাইসেন্স দেয়া এবং এই পরিস্থিতিতে আইএসপি প্রতিষ্ঠানগুলো নতুন বিনিয়োগ করায় ব্রডব্যান্ড ইন্টারনটে সংযোগ বাড়ছে। সংযোগ সংখ্যা যাই হোক মূলতঃ কোটির ওপর গ্রাহক এই নেটওয়ার্কে সংযুক্ত। কেননা একটি ব্রডব্যান্ড সংযোগ গড়ে ৩ জন ব্যবহার করেন।
বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ রেগুলেটরি কমিশন (বিটিআরসি) প্রকাশিত সর্বেশেষ ইন্টারেট সংযোগের হিসাব অনুযায়ী, দেশে মোট ইন্টারনেট গ্রাহকের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে নয় কোটি ৯০ লাখ ৫৯ হাজার।
এরমধ্যে মোবাইল ইন্টারনেট গ্রাহকের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে নয় কোটি ৩৩ লাখ ১৫ হাজারে। ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সংযোগের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৫৭ লাখ ৩৯ হাজারে। ওয়াইম্যাক্স ইন্টারনেট সংযোগের সংখ্যা কমে দাঁড়িয়েছে ৫ হাজারে।
অথচ গত অক্টোবর শেষে দেশে মোট ইন্টারনেট সংযোগের সংখ্যা ছিলো নয় কোটি ৯৫ লাখ ৬৯ হাজার। এর মধ্যে মোবাইল ইন্টারনেট সংযোগের সংখ্যা ছিলো নয় কোটি ৩৭ লাখ ৯৩ হাজার। অপরদিকে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সংখ্যা ছিলো ৫৭ লাখ ৩৮ হাজার।
পরিসংখ্যান বলছে মাস ব্যবধানে, ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সংযোগের সংখ্যা এক হাজার বাড়লেও মোবাইল ইন্টারনেটের সংখ্যা কমেছে ৪ লাখ ৭৮ হাজার। একইভাবে ওয়াইম্যাক্স নেটওয়ার্ক ৩৮ হাজার থেকে নেমে ৫ হাজারে ঠেকেছে।
খাত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সংযোগ বাড়ার প্রবণতাটি ইতিবাচক। কেননা ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট মূলত উৎপাদন কাজেই বেশি ব্যবহৃত হয়। এদিকে বরাবরই ব্রডব্যান্ড ইন্টারন্টে নিয়ে সক্রিয় ভূমিকা পালন করছেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার। বিভিন্ন অনুষ্ঠানে তিনি বলেছেন, ফাইভজির রোডম্যাপ অনুযায়ী ব্রডব্যান্ড কানেকশন প্রতিটি বাড়িতে পৌঁছে দেয়ার লক্ষ্যে ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ নিরলসভাবে কাজ করছে। তিনি জানিয়েছেন, জেলা পর্যায়ে গ্রাহক পর্যায়ে ইন্টারনেট ব্যান্ডউইথের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। একইভাবে উপজেলা পর্যায়েও ইন্টারনেটের চাহিদা আগের তুলনায় অনেক বেড়েছে। জেলায় ১০ জিবিপিএস ও উপজেলায় ২ জিবিপিএস ব্যান্ডউইথ দেয়ার উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে। বিভাগীয় পর্যায়ে আরও বেশি ব্যান্ডউইথ দেয়া হবে। ২০২০ সালের মধ্যে দেশের প্রতিটি ইউনিয়নে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সেবা পৌছে দেয়া হবে।