কৃষি কাজে সহায়ক একটি রোবট তৈরি করলো বাংলাদেশের কিশোর উদ্ভাবক রাফিহাত সালেহ চৌধুরি। ‘রোবো ফার্ম’ নামের যান্ত্রিক শ্রমিকটির আকার ৫০ বাই ৩০ বাই ৩০ সেন্টিমিটার। এটি ৪ ফুট উচ্চতা থেকে ফল পাড়তে পারে। বহন করতে পারে ১ কেজি ওজন। ফল পেড়ে তা আবার সংরক্ষণ করে নির্দিষ্ট ঝুড়িতে।
রোবটটিতে আরো নতুন নতুন ফিচার যুক্ত করে আগামী ১৬ ডিসেম্বর অনুষ্ঠেয় আন্তর্জাতিক রোবট অলিম্পিয়াডে যাচ্ছে সম্প্রতি ইন্টারন্যাশনাল রোবট ডি চ্যালেঞ্জে রোবট স্কলার ক্যাটাগরিতে স্বর্ণজয়ী রাফিহাত সালেহ চৌধুরি ও তার সতীর্থ তাফসির তাহরিম। ঢাকার একটি স্কুলে ক্লাস সেভেনে পড়ুয়া তাফসির রোবট ডি চ্যালেঞ্জে টেকনিক্যাল পুরস্কার জিতেছিলো। সে এখন এই রোবটটি দিয়ে মুরগীর ডিম পাড়ার সংবাদ প্রদান ও তা সংগ্রহ করার কারিগরি কাজ করছে।
নিজেদের উদ্ভাবন বিষয়ে রাফিহাত জানিয়েছেন, তাদের তৈরি রোবটটি গাছের ফল পাড়তে সক্ষম। তবে প্রতিযোগিতার স্বার্থে রোবটটির কারিগরি দিক নিয়ে এখনই সকল তথ্য প্রকাশ করতে রাজি হয়নি সে।
শুধু জানিয়েছে, আরডুইনো প্লাটফর্মে ইমেজ প্রসেসিং পদ্ধতিতে সে তার রোবটটিকে অবজেক্ট সনাক্ত করতে শিখিয়েছে। ফল পাড়ার কাজটি রোবটটি ভালোভাবেই করতে সক্ষম। এখন ঢাকায় বাসে তার সতীর্থ হ্যাচারি থেকে মুরগীর ডিম পাড়লে রোবটটি যেন মালিককে জানিয়ে দিতে পারে এবং তা সংগ্রহ করতে পারে সে কাজ করছে।
আলাপকালে জানাগেলো, দেশের বাইরে থেকে রোবো আর্ম ও পিক্সি ক্যামেরা সংগ্রহ করে তারা এই রোবট তৈরির কাজ শুরু করেছিলো। প্রথমে স্থানীয় একটি ওয়ার্কশপে ঝালাই করে রোবটের অবয়ব তৈরি করে। এরপর গিয়ার মোটর দিয়ে রোবো হ্যান্ডটি অ্যাসেম্বেল করে। অতঃপর প্রোগ্রামিংয়ের মাধ্যমে এটিকে সচল করার কাজ শুরু হয়। প্রোটোটাইপ এই কাজটি করতে ইতিমধ্যেই তাদের খরচ হয়েছে প্রায় ৪০ হাজার টাকার মতো।
এখন কেবল টমেটো ও আপেলের মতো ফল চিনে পাড়তে পারলেও অল্পদিনের মধ্যেই রোবো ফার্মটি বীজ রোপন ও পানি সেচের মতো কাজ করতে পারবে।
সব কাজ শেষ করেই আগামী ১৫ ডিসেম্বর বাংলাদেশের পতাকা জড়িয়ে এই রোবটটি নিয়ে তারা থাইল্যান্ডের চিয়াংমাইয়ে উড়াল দেবে।
প্রসঙ্গত, রাফিহাত সিলেট নগরীর ফাজিলচিস্তস্থ ‘সাইবারনেটিক্স রোবো একাডেমী সিলেটে’র নিয়মিত একজন প্রশিক্ষণার্থী । সে জালালাবাদ ক্যান্টনমেন্ট ইংলিশ স্কুলের ৮ম শ্রেণীর ছাত্র। তার বাবা খায়রুল আক্তার চৌধুরী শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে আইটি সেক্টরে কর্মরত আছেন।