এবার সন্তান জন্মাবে কৃত্রিম গর্ভে। গবেষণাগারে জন্ম হবে মানব শিশুর? না কোনও সায়েন্স ফিকশনের গল্প নয়। এটাই বাস্তব হতে যাচ্ছে আগামীতে! একটা শিশু যেমন ভাবে গর্ভে ধারণ করা যায় সেভাবেই গর্ভ ধারণ হবে। তবে সেটা মায়ের পেটে নয়। বরং গবেষণাগারে জন্ম হবে তার। আর এখানেই চমকের শেষ নয়। সন্তানের চোখের মণি কেমন হবে, সন্তানের গায়ের রঙ, বুদ্ধি, ইত্যাদি কেমন হবে সবটাই ঠিক করে দেয়া যাবে আগে থেকেই। কৃত্রিম এই আয়োজনে বাবা মা যেমন চাইবেন, তেমন ভাবেই তৈরি করা যাবে সন্তানকে।
এই কল্পবিজ্ঞানকে বাস্তবে আনতে যাচ্ছে বায়োটেকনোলজিস্ট হাশিম আল ঘাইলি। এজন্য বানানো হচ্ছে অভিনব একটি পরিকাঠামো; যেখানে কৃত্রিম গর্ভে বেড়ে উঠতে পারে একটি শিশু। নিজের ওয়েবসাইটে ঘাইলি জানিয়েছেন, তিনি এখন সায়েন্স কমিউনিকেটর এবং মলিকিউলার বায়োলজিস্ট বাই ট্রেড। একই সঙ্গে তিনি ছবিও তৈরি করেন এবং সেটার প্রযোজনাও করেন। এরইমধ্যেই কৃত্রিম গর্ভে সন্তান জন্মদান প্রকল্পের উদ্যোগ নিয়েছেন। যদিও গোটাটাই কল্পনার স্তরে আছে।
হাশিম আল ঘাইলির পরিকল্পনার নাম Ectolife। বলা হয়েছে, এটা পৃথিবীর কৃত্রিম গর্ভ। এখানে বাবা মায়েরা তাঁদের পছন্দ মতো শিশু ‘তৈরি’ করে নিতে পারবেন। বিজ্ঞানী জানিয়েছেন, গোটা পৃথিবীর ৫ বছরের গবেষণার উপর এই ভাবনা দাঁড়িয়ে আছে। এই গোটা পরিকাঠামো চলবে আন্তঃপরিচালন শক্তির মাধ্যমে। বায়ু ও সৌর শক্তিতে।
কৃত্রিম গর্ভধারণ পরিকল্পনা বাস্তবায়েনে তৈরি করা হবে ৭৫টি গবেষণাগার। আর এই সমস্ত গবেষণাগারে থাকবে ৪০০টি করে কৃত্রিম গর্ভ। সেখানে মায়ের গর্ভের মতো বেড়ে উঠবে এক একটি শিশু। সেই শিশুর শরীরে থাকবে তাঁর বাবা মায়ের ইচ্ছে মতো সমস্ত বৈশিষ্ট্য।
কীভাবে জন্ম হবে শিশু? এই কৃত্রিম গর্ভে শিশুটির পূর্ণ বিকাশ হয়ে গেলে একটা বোতাম টিপে দিলেই সেই গর্ভ থেকে বেরিয়ে আসবে শিশুটি। আর এক্ষেত্রে কোনও রকম শারিরীক জটিলতা, ব্যথা ছাড়াই একটা শিশুকে জন্ম দেওয়া যাবে। আবার কৃত্রিম গর্ভে থাকা সময়ে সেই অনুভূতিও নিতে পারবেন মা। এজন্য তাকে দেয়া হবে বিশেষ এআর এবং স্মার্ট চশমা। যার মাধ্যমে কৃত্রিম ভ্রুণে থাকা শিশুর নড়চড়া অনুভূব করতে পারবেন তিনি।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার একটি রিপোর্ট থেকে জানা গিয়েছে মায়ের নানান জটিলতার কারণে বহু শিশুর গর্ভেই জন্ম হয়ে যায়, জন্মের সময় নানান জটিলতা দেখা দেয়। শুধু তাই নয় এই প্রক্রিয়ায় শিশুর জন্ম হলে আগে থেকেই তার শরীরে কোনও সমস্যা থাকলে সেটা জানিয়ে দেওয়া যাবে। জিনগত সমস্যা থাকলে বলে দেবে এই সিস্টেম। কিন্তু এই ভাবনায় বাঁধা আছে বিজ্ঞানী হাশিম আল ঘাইলি। জানিয়েছেন এই পরিকাঠামো বাস্তবে করা সম্ভব। কিন্তু এটা করলে নানান নীতিগত দিক নিয়ে প্রশ্ন উঠবে। মানব ভ্রূণ নিয়ে পরীক্ষা করতে হবে নানান নীতি এবং নিয়ম মানতে হয়। ফলে এটার জন্য হয়তো এখনও বেশ কয়েক দশক অপেক্ষা করতে হবে।