ড্রোন শিল্পের সুবাদে পরিবহন যানের উল্লম্বভাবে উড্ডয়ন আর অবতরণের প্রযুক্তি নিখুঁত করে নিয়েছেন প্রকৌশলীরা; নিজেদের পরীক্ষামূলক যানেও এ প্রযুক্তি কার্যক্ষমতা যাচাই করে দেখেছে সিলিকন ভ্যালির স্টার্টআপ কোম্পানি আলেফ অ্যারোনটিক্স।
ক্যালিফোর্নিয়ার স্যান মাতিওর ড্রেপার ইউনিভার্সিটিতে গত ১৯ অক্টোবর সংবাদ সম্মেলন করে বাজারের প্রথম বিদ্যুৎচালিত উড়ুক্কু গাড়ি উৎপাদনের স্বপ্নের কথা জানালেন কোম্পানির প্রধান নির্বাহী জিম দুখোভনি। ২০২৫ সালে বাজারে আনার উচ্চাভিলাসী পরিকল্পনার কথা তুলে ধরে এর দামও আগাম জানিয়ে দেন তিনি। দাম ধরা হয়েছে তিন লাখ ডলার। ইতোমধ্যে নিজস্ব ওয়েবসাইটে প্রোটোটাইপ মডেলটির ‘প্রি-অর্ডার’ নেওয়া শুরু করেছে আলেফ অ্যারোনটিক্স। কোম্পানিটির প্রত্যাশার আগামী একশ বছরের জন্য বিশ্বের সকল ট্রাফিক জ্যামের সমাধান দেবে তারা।
একবার পুরা চার্জ নিয়ে ২০০ মাইল চলতে সক্ষম হলেও আলেফ একটানা উড়তে পারবে ১১০ মাইল। তবে আলেফের উড়ুক্কু গাড়ির ‘হাইড্রোজেন ফুয়েল সেল’ সংস্করণটি একটানা ৪০০ মাইল পর্যন্ত উড়তে পারবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন কোম্পানির সহ-প্রতিষ্ঠাতা ও প্রকৌশলী ওলেগ পেত্রোভ।
নকশা অনুযায়ী, আট প্রোপেলারে ভর করে আকাশে উড়বে ব্যাটারি নির্ভর এই উড়ুক্কু যান। ভেতরের ‘বাবল’-এ দু’জন যাত্রী বহন করতে পারবে এ বাহন। উল্লম্বভাবে উড্ডয়নের পর সামনের দিকে ওড়ার আগে এক পাশে ৯০ ডিগ্রি কাত হয়ে যাবে গাড়ি। আর যাত্রীকে অনুভূমিক বা মাটির সঙ্গে সমান্তরাল অবস্থায় রাখতে বিপরীত দিকে ঘুরবে গাড়ির ভেতরের বাবল।
আকারে ছোট প্রোটোটাইপে সাফল্য পেলেও মূল বাহনে এ প্রযুক্তির কার্যকর প্রয়োগের বেলায় দেখা দিচ্ছে নানা চ্যালেঞ্জ। এর প্রকৌশলগত চ্যালেঞ্জগুলো কোনোভাবেই ছোট নয়। তাছাড়া এ গাড়ি অনুমোদনে নীতি নির্ধারণী কর্তৃপক্ষকে রাজি করানোও কঠিন কাজ হবে বলে মনে করছে প্রযুক্তিবিষয়ক সাইট সিনেট।
এক প্রতিবেদনে তারা লিখেছে, আকাশে ব্যক্তিগত উড়ুক্কু যান আর ড্রোনের ছড়াছড়ি – এমন দৃশ্যপটে নিজেদের করণীয়গুলো নির্ধারণ করতে এখনও হিমশিম খাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের ‘ফেডারেল এভিয়েশন অথোরিটি এফএএ’র মত নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলো। কিন্তু আলেফ প্রধান দুখোভনির ভাষ্যে, “সব কাল্পনিক ভবিষ্যতের দৃশ্যপটে একই জিনিস উঠে আসে: একটা উড়ুক্কু গাড়ি। আমরা সত্যিই আগামী একশ বছরের জন্য বিশ্বের সকল ট্রাফিক জ্যামের সমাধান করতে পারব।”