বৈশ্বিক উদ্ভাবন সূচকে ২০২২ সালে ১৪ ধাপ এগিয়ে ১৩২টি দেশের মধ্যে ১০২তম অবস্থানে উঠে আসে বাংলাদেশ। এর মধ্যে সাইটেবল ডকুমেন্ট (এইচ) সূচকে ১২.২ স্কোর পেয়ে বাংলাদেশের অবস্থান ৬৩তম। এছাড়া সফটওয়্যার ব্যবহারের ক্ষেত্রে ৭৫তম। কিন্তু ইন্টেলেকচ্যুয়াল প্রপার্টির ক্ষেত্রে স্কোর শূন্য এবং তালিকায় বাংলাদেশের অবস্থান ৯৪তম। পেটেন্ট ও ইউটিলিটি মডেল তৈরিতে বাংলাদেশের স্কোর শূন্য হলেও এক্ষেত্রে বাতিঘর হয়ে রয়েছে একটি নাম- ‘বিজয়’। ফলে প্রযুক্তির স্থানীয় করণে এই মেধাসত্ব সম্পদটি’র গুরুত্ব বিবেচনায় এর কেস স্ট্যাডি প্রকাশ করেছে আন্তর্জাতিক মেধাস্বত্ববিষয়ক সংস্থা ওয়ার্ল্ড প্রপার্টি রাইটস অর্গানাইজেশন (ডব্লিউআইপিও)।
কেস স্ট্যাডিতি- আশি’র দশকের শেষ ভাগে উদ্ভাবিত এই বাংলা স্ক্রিপ্ট রাইটিং ইন্টারফেস সিস্টেমটি’র জন্য উদ্ভাবক মোস্তাফা জব্বার এর প্রশংসা করা হয়েছে। তুলে ধরা হয়েছে ছাত্রাবস্থায় একজন সংবাদকর্মী হিসেবে এই দূরদর্শী পদক্ষেপের আদ্যোপান্ত। উল্লেখ করা হয়েছে, ১৯৬৯ সালে টাইপ রাইটারের মুনীর কি- বোর্ড (১৯৬৫ সালে মুনীর চৌধুরী এই কিবোর্ডটি উন্নয়ন করেন) থেকে ম্যাকিন্টোশ পিসি’র জন্য প্রথম তৈরি বাংলা কি-বোর্ড ‘শহীদলিপি’ (QWERTY কিবোর্ডের উপর ফোনেটিকভিত্তিক এই কি-বোর্ড তৈরি করেন যন্ত্রকৌশলী সাইফুদ্দাহার শহীদ) এর সীমবাদ্ধতা জয় করে উইন্ডোজের জন্য ‘শিফট’ নির্ভর সাবলীল একটি বাংলা কি-বোর্ড উদ্ভাবনের জন্মকথা।
এতে ডব্লিউআইপিও-কে দেয়া সাক্ষাৎকারে বিজয় কি-বোর্ড উদ্ভাবক মোস্তাফা জব্বার জানান, বিজয় বাংলা সফটওয়্যারটি প্রাথমিকভাবে ম্যাকিনটোস অপারেটিং সিস্টেমের জন্য তৈরি করা হলেও পরবর্তীতে এটি উইন্ডোজ, লিনাক্স এবং অ্যান্ড্রয়েড অপারেটিং সিস্টেমের জন্য প্রকাশ করা হয়। একটি ফন্ট পরিবারের বিনম্র সূচনা করে, বিজয় বাংলা সফ্টওয়্যার এখন ১১০ টিরও বেশি ফন্ট পরিবার হোস্ট করে। সফটওয়্যারটি ইউনিকোড (BDS 1520: 2018) এবং ASCII (BDS 1935) কোডিং সিস্টেমের সাথেও সামঞ্জস্যপূর্ণ। তাছাড়া, বিজয় বাংলা স্ক্রিপ্ট ইন্টারফেস সিস্টেমটিও অসমীয়া লিপির সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ। তিনি আরো জানান, বাংলা কি-বোর্ডের একটি নতুন লেআউট ও ইন্টারফেসসহ তৎকালীন কি- বোর্ডে বিদ্যমান সীমাবদ্ধতা কাটিয়ে উঠতে চেয়েছিলেন তিনি। সেই সঙ্কল্ট থেকে ১৯৮৮সালে বিজয় বাংলা সফ্টওয়্যারটির প্রথম সংস্করণ প্রকাশের সাথে দেড় বছর একটানা কাজ করে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জন করেন তিনি। সফ্টওয়্যারটি প্রথমে দেবেন্দ্র জোশী নামে একজন ভারতীয় প্রোগ্রামারের মাধ্যমে কোডিং করানো হয়েছিল, কিন্তু পরে নিজেই কীবোর্ড লেআউট এবং ফন্ট ডিজাইন করে বাংলাদেশের প্রোগ্রামারদের দিয়েই এই কাজটি করিয়ে নেন।
ডিজিবাংলা/ইহক
সূত্র: ডব্লিউআইপিও