দক্ষতাভিত্তিক বৈদেশিক কর্মসংস্থানের জন্য ২০২৫ সালের মধ্যে প্রত্যেক উপজেলায় একটি করে কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। উদ্যোগ বাস্তবায়নে প্রথমধাপে শুরু হয় দেশজুড়ে ৪০টি টিটিসি স্থাপনের কাজ। অনলাইনে যুক্ত হয়ে গত বছরের ২৮ জুলাই এই কাজ উদ্বোধন করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর বিদেশগামীরা যাতে নিজেদের দক্ষতা বৃদ্ধি করে বিদেশে যেতে পারে সেই লক্ষ্যে নাটোরের সিংড়ায় ৩৪ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণ করা হয়েছে এমনই একটি কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র। বৃহস্পতিবার দুপুরে নব নির্মিত টিটিসি ভবনের উদ্বোধন করেন স্থানীয় সংসদ সদস্য জুনাইদ আহমেদ পলক। সরকার লেখা-পড়ার পাশাপাশি কাজের সুযোগ করে দিতেই এই ধরনের প্রশিক্ষণ কেন্দ্র স্থাপন করছে বলে জানান তিনি।
পলক বলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশে ১৭ কোটি মানুষ সেবা পাচ্ছে। ফ্রিল্যান্সাররা ঘরে বসে কাজ করে আর্থিক স্বচ্ছলতা পেয়েছে। চলনবিলের সন্তানেরা এক সময় উচ্চ শিক্ষার জন্য ঢাকায় যেতে হতো। কিন্তু এখন পান্তা খেয়ে সিংড়ার বুকে উচ্চ শিক্ষা লাভ করতে পারছে। আর আজকে যারা তরুণ প্রজন্মের ছাত্র-ছাত্রী তারাই আগামী ২০৪১ সালে বাংলাদেশের নেতৃত্ব দেবে। তরুণরাই আগামী দিনে এমপি, মন্ত্রী, ডিসি হবে।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে ভাষা ও কারিগরি জ্ঞান থাকলে অনেকেই বিদেশে গিয়ে মন্ত্রী-এমপিদের চেয়ে বেশি আয় করতে পারেন উল্লেখ করে উপস্থিত তরুণদের কারগরি শিক্ষা গ্রহণে উদ্বুদ্ধ করে প্রতিমন্ত্রী বলেন, অনেক ছেলেমেয়ে ড্রাইভিং শিখে বিদেশে গিয়ে একজন এমপি-মন্ত্রীর চেয়ে বেশি টাকা উপার্জন করছেন। আমাদের সে সুযোগটা করে দিতে হবে।
নবনির্মিত কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র থেকে শুধু শিক্ষিতরাই নয়, স্বল্প শিক্ষিতরাও প্রশিক্ষণ নিয়ে কাজ করতে পারবেন বলে জানান পলক। বললেন, নতুন করে সিংড়া কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে ১৫ হাজার ছেলেমেয়ে বিদেশ যেতে পারবেন। এছাড়া ছয়টি ট্রেড-এ প্রতিবছর ১২ শিক্ষার্থী দক্ষ জনশক্তি হিসেবে গড়ে উঠবেন।
‘বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়তে আমরা প্রতিটি সন্তানকে সোনার মানুষে পরিণত করতে চাই। সিংড়ার পাঁচ লাখ জনগণের জন্য জননেত্রী একের পর এক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান উপহার দিয়েছেন। প্রাইমারি স্কুল, হাই স্কুল, মাদরাসা, কারিগরি কলেজ মিলে ৩৪৫টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে। আগামী ৫-১০ বছরের মধ্যে ৮৫ হাজার ছেলেমেয়ে কর্মজীবনে প্রবেশ করবে। এ কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র থেকে শুধু শিক্ষিতরাই নয়, স্বল্প শিক্ষিতরাও প্রশিক্ষণ নিয়ে কাজ করতে পারবেন’ -যোগ করেন পলক।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন জনশক্তি, কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরো’র মহাপরিচালক শহীদুল আলম।
(বাইট) উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন ৪০টি টিটিসি ও ১টি আইএমটি স্থাপন প্রকল্পের যুগ্মসচিব এবং প্রকল্প পরিচালক সাইফুল হক চৌধুরী, নাটোরের জেলা প্রশাসক শামীম আহমেদ, পুলিশ সুপার সাইফুর রহমান, পাবনা গণপূর্ত সার্কেলের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী দেবাশীষ চন্দ্র সাহা, নাটোর গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী অমিত কুমার দেব, সিংড়া পৌরসভার মেয়র জান্নাতুল ফেরদৌস, ইউএনও মাহমুদা খাতুন, টিটিসির ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ রবিউল ইসলাম, শেরকোল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ লুৎফুল হাবীব রুবেল সহ স্থানীয় নেতারা।