চূড়ান্ত যাচাই-বাছাই শেষে ৩১ সংগঠন ও ব্যক্তিকে জয় বাংলা ইয়ুথ অ্যাওয়ার্ডের জন্য মনোনীত করা হয়েছে, যাদের মধ্যে ১৫ সংগঠনের প্রতিনিধির হাতে সোমবার পুরস্কার তুলে দেন বঙ্গবন্ধুর দৌহিত্র ও সিআরআইয়ের ট্রাস্টি রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক। পুরস্কারপ্রাপ্ততের মধ্যে তিনটি পুরস্কারই ছিলো প্রাযুক্তিক উদ্ভাবন ও উদ্যোগ।
এরমধ্যে জলবায়ু পরিবর্তন ও উদ্ভাবন ক্যাটাগরিতে ২০১৩ সাল থেকে গেমিংয়ের মাধ্যমে শিক্ষামূলক তথ্য ছড়িয়ে দিয়ে েএই সম্মানা জিতেছেন টেক একাডেমির মোহাম্মদ শামস জাব্বার। একই ক্যাটাগরিতে গবেষণা ও উদ্ভাবন-ভিত্তিক সামাজিক উদ্যোগ; ২০১৫ সালে প্রতিষ্ঠিত ইকোভেশন বাংলাদেশের পক্ষে সানজিদুল আলম সেবন শান এবং ২০১৮ সাল থেকে উপকূলীয় অঞ্চলের প্রান্তিক কিশোরী-তরুণী ও নারীদের নিয়ে কাজ করা সংগঠন ‘স্টেপ এহেড’ প্রতিষ্ঠিতা শাহানা আফরিন দিনা পেয়েছেন জয় বাংলা ইয়ুথ অ্যাওয়ার্ড।
এছাড়াও পুরস্কার পেয়েছেন ধ্রুবতারা যুব উন্নয়ন ফাউন্ডেশনের অমিয় প্রপান চক্রবর্তী, আসমানী যুব নারী ফাউন্ডেশনের শিরিন আক্তার, অমল ফাউন্ডেশনের এসরাত করিম, থার্ড আইয়ের মাশরুর ইশরাক, ইকোভেশন বাংলাদেশের সানজিদুল আলম, বাংলাদেশের দুষ্প্রাপ্য ছবিসমগ্রের জন্য গিরিধর দে, স্টেপ এহেডের শাহানা আফরিন, মনের স্কুলের ফাইরুজ ফাইজাহ বিথার, ট্রান্সএন্ডের লামিয়া তানজিন, রিফ্লেক্টিভ টিনসের ইউসুফ ইবনে ইয়াকুব, জেন ল্যাবের রাতুল দেব, দিনের আলো হিজরা উন্নয়ন মহিলা সংস্থার আবু হাসান (জয়তা পলি), বাংলাদেশ চা সম্প্রদায় ছাত্র যুব পরিষদের রিগান কুমার কানু এবং মেধাবী কল্যাণ সংস্থার (এমকেএস) মো. নুরুল আলম।
পাশাপাশি বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন আঞ্জুমান মুফিদুল ইসলাম, মঙ্গল শোভাযাত্রার আয়োজক এবং জীব-বৈচিত্র সংরক্ষণ নিয়ে কাজ করা এলিজাবেথ ফারনি মনসুর ও রুবাইয়াত মনসুরকে বিশেষ সন্মাননা দেওয়া হয় এ বছর।
সোমবার সাভারের শেখ হাসিনা যুব উন্নয়ন কেন্দ্রে ইয়াং বাংলার আয়োজনে ‘জয় বাংলা ইয়ুথ অ্যাওয়ার্ড’প্রদান অনুষ্ঠানে পুরস্কার হস্তান্তর অনুষ্ঠানে তরুণদের হাতে আরো দায়িত্ব দেয়ার সময় এসেছে বলে মন্তব্য করে রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক ববি বলেন, জয় বাংলা ইয়ুথ অ্যাওয়ার্ডে তরুণ প্রজন্মের মানুষ যারা সমাজের জন্যে ভূমিকা রেখেছেন তাদেরকে পুরস্কৃত করা হয়েছে। আজকের এই দিনে আমরা স্মরণ করছি ১৯৭১-এর তরুণ প্রজন্মকে, যাদের সাহস ও ত্যাগের কারণে আমরা আজ এখানে এই অনুষ্ঠান করতে পারছি। ভিশন ২০২১ এর পর ২০৪১এর দিকেও আমরা এগিয়ে যাচ্ছি। সবই করতে পারছি তাদের ত্যাগের জন্য। তাদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা ও কৃতজ্ঞতা।
তিনি বলেন, এমন অনুষ্ঠানে নিজে কিছু বলার চেয়ে মনোনয়ন পাওয়া ও পাথ ফাইন্ডারদের বক্তব্য শোনা আরো বেশি আনন্দদায়ক। তাদের কর্মকান্ডের মধ্য দিয়ে আমরা অনুপ্রেরণা পাই। আজ জয়ীদের প্রতি আমাদের একটাই অনুরোধ আপনারা যেভাবে কাজ করেছেন সেটা চালিয়ে যাবেন। আপনাদের থেকে আমরা অনেক অনুপ্রেরণা ও সাহস পাই। আপনারা থামবেন না। আপনারাই আমাদের ভবিষ্যত।
তরুণদেরকে সুযোগ করে দিতে হবে উল্লেখ করে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের এই দৌহিত্র বলেন, তরুণ সমাজের হাতে সব তুলে দেব। তারা আমাদের ভবিষ্যত এটা শুধু মুখে বললেই হবে না। তাদের হাতে আরো দায়িত্ব দেয়ার সময় হয়েছে। ব্যবসা, রাজনীতি সবখানে তরুণদের সুযোগ করে দিতে হবে। ইয়াং বাংলা এতে সমর্থন দেবে ও পাশে থাকবে।
তিনি সিআরআই ও ইয়াং বাংলার টীমকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, করোনার মধ্যে সব চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করে আমাদের এই আয়োজন তারা দাঁড় করিয়েছেন। সেজন্য সবার প্রতি কৃতজ্ঞ। আমাদের জুরি বোর্ড ও স্পন্সরদের আন্তরিক ধন্যবাদ।
অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও প্রধানমন্ত্রীর তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা সেন্টার ফর রিসার্চ অ্যান্ড ইনফরমেশনের (সিআরআই) চেয়ারম্যান সজীব ওয়াজেদ জয়ের ধারণ করা ভিডিও বক্তব্য দেখানো হয়।
বিজয়ের ৫০ বছরে জয় বাংলা ইয়ুথ অ্যাওয়ার্ডের বিশেষ আয়োজনে বিজয়ী দলগুলোকে যাচাই বাছাইয়ের জন্য ছিল বিশেষ বিচারক প্যানেল। এই প্যানেলের সদস্য ছিলেন বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক ও সংসদ সদস্য মাশরাফি বিন মুর্তজা, ইয়াং বাংলার আহ্বায়ক ও সংসদ সদস্য নাহিম রাজ্জাক, ডান অ্যান্ড ব্রেডস্ট্রিটের সিইও জারা মাহবুব, ডেইলি স্টারের সিনিয়র করসপনডেন্ট পরিমল পালমা, তৃতীয় লিঙ্গের অধিকার নিয়ে আন্দোলনকারী ও টিভি উপস্থাপক তাসনুভা শিশির, জাতীয় পুরষ্কার বিজয়ী অভিনয় শিল্পী জয়া আহসান, বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ও উন্নয়ন বিষয়ক অর্থনীতিবিদ আতিউর রহমান, উইমেন ইন ডিজিটাল আচিয়া খালেদা নিলা, মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের প্রতিষ্ঠাকালীন ট্রাস্টি মফিদুল হক, সিলেট উইমেন চেম্বার অব কমার্সের প্রেসিডেন্ট শ্যামালতা রায়, চলচ্চিত্র পরিচালক রেজওয়ান শাহরিয়ার সুমিত এবং পরিবেশ ও বন্যপ্রাণী সুরক্ষা আন্দোলনকারী শাহরিয়ার সিজার রহমান।