পঞ্চম শিল্প বিপ্লবের জন্য প্রস্তুতি গ্রহণে শিক্ষার্থীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার। শিক্ষার্থীদের ‘সেইফ ইন্টারনেট’ বিষয়ে সচেতনতা গড়ে তোলার অংশ হিসেবে ইন্টারনেট সেবদাতাদের সংগঠন আইএসপিএবি’র আয়োজিত এক কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এই আহ্বান জানান মন্ত্রী।
রাজধানীর কুড়িলে আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মিলনায়তনে মঙ্গলবার বিকেলে এই কর্মশালয় উপস্থিত ছিলো বিশ্ববিদ্যলয়টির সহস্রাধিক শিক্ষার্থী।
এই শিক্ষার্থীসহ নতুন প্রজন্মকে উদ্দেশ্য করে বিজয় বাংলা সফটওয়্যারের জনক মোস্তাফা জব্বার বলেন, তোমরা যে শিক্ষা ও জ্ঞান নিয়ে এখন বড় হচ্ছো, আগামী দিনে এই জ্ঞানের বাইরে তোমাদের যেতে হবে। যে যে বিষয়েই পড়া লেখা করো না কেন চারপাশের ডিজিটাল ডিভাইস ব্যবহার ও কমিউনিকেশন দক্ষতা অর্জন করে নিজেকে প্রকাশ করার দক্ষতা অর্জন হবে। নিতে হবে বিশেষায়ত্ব জ্ঞান। চাকরি না করে, নিজের সাহসের ওপর দাঁড়াতে হবে। তা না হলে তুমি এই যুগের বাসিন্দা না হয়ে গোটেন বার্গের সময়েই আটকে থাকবে। আর দেশে কেউ যদি প্রোগ্রামিং দক্ষতা নিয়ে বড় হতে পারে তবে চাকরির কোনো অভাব হবে না।
দেশে ডিজিটাল রূপান্তরের বিস্ময়কর উন্নয়ন হয়েছে মন্তব্য করে সামনের জীবন বিষয়ে শিক্ষার্থীদের সতর্ক করেন মন্ত্রী।
তিনি আরো বলেন, ২০০৮ সালে ডিজিটাল বাংলাদেশ রূপকল্প ঘোষণার আগে ১৯৯৬ সালে ক্ষমতাসীন হওয়ার পর বছরে ১০ হাজার প্রোগ্রামার দরকরা ঘোষণা করেছিলেন। এজন্য তখনই তিনি বুয়েট ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ সম্ভাব্য সব বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্স বিষয়ের আসন সংখ্যা বাড়ান। এর ফলশ্রুতিতেই আজ আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয়ের শতকরা ৭০ শতাংশ শিক্ষার্থীই কম্পিউটার বিজ্ঞান প্রযুক্তি পড়ছে। মোবাইল ও ইন্টারনেট ব্যবহার বাড়ছে। দেশে ১৩ কোটি ইন্টারনেট গ্রহক ৩৮৪০ জিবিপিএস ব্যান্ডউইথ ব্যবহার করছে। তবে অসচেতনতার কারণে এখানে ছদ্মবেশী বন্ধু, স্প্যাম ও হ্যাকিং ঝুঁকি বাড়ছে। তাই অপরিচিত কোনো বন্ধু বা লিংক এড়িয়ে চলার পাশাপাশি লোভ সংবরণ করে টুফ্যাক্টর অথেন্টিকেশন চালু করলে ইন্টারনেট বা ডিজিটাল দুনিয়া নিরাপদ থাকার পরামর্শ দেন মন্ত্রী।
এআইইউবি উপাচার্য কারমেন জেড লামাগনা’র সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে আইএসপিএবি সভাপতি মো: ইমদাদুল হক ছাএছাএীদের উদ্দেশ্যে বলেন, ছাত্র থাকা অবস্থায় বিটিবিতে মোস্তাফা জব্বার স্যারের অনুষ্ঠান দেখে অনুপ্রাণিত হয়ে কম্পিউটার বিজ্ঞানে পড়াশুনা করে ইন্টারনেট সার্ভিস জগতে এসেছি। ১৯৯৬ সালে চাকরিতে প্রবেশ করি বর্তমানে উদ্যোগতা হয়েছি। সরকারী বা বেসরকারী প্রতিষ্ঠানগুলো সবাইকে চাকরি দিতে পারবে না। দক্ষতার মাধ্যমে উদ্যোগতা হতে হবে।
তিনি আরো বলেন, আমরা প্রথমে ভিস্যাট এর মাধ্যমে ইন্টারনেট শেখানোর জন্য সচেতনতাম‚লক অনুষ্ঠান করেছি এখন সাবমেরিন এর মাধ্যমে ব্রডব্যান্ড সেবার কোয়ালিটি বা ভাল মানের সেবা দেওয়ার জন্য কাজ করছি। দক্ষ জনশক্তি তৈরী করার জন্য আগ্রহ ছাত্রছাত্রী থাকলে আমরা দুই মাস অন্তর অন্তর টেনিং প্রোগ্রাম করব। আমাদের ২৯০০ লাইসেন্সধারী আইএসপি আছে কিন্তু দক্ষ লোকের খুব অভাব কোভিড-১৯ কালে দক্ষ জনবল তৈরীতে আমরা অনেকটা পিছিয়ে আছি। আপনাদের মাধ্যমে দক্ষ জনশক্তি তেরী করতে পারব বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন আইএসপিএবি সভাপতি।
কর্মশালয় স্বাগত বক্তব্যে সচেতনতা তৈরির মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের এই প্রযুক্তি দক্ষতার পাশাপাশি নিরাপদ রাখতে এ ধরনের কর্মশালা অব্যহাত রাখার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন আইএসপিএবি সাধারণ সম্পাদক নাজমুল করিম ভূঁঞা।
এসময় আরো বক্তব্য রাখেন এআইইউবি’র প্রকৌশল অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. এবিএম সিদ্দিক হোসেইন, নিজের বলার মতো একটা গল্পের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ইকবাল বাহার জাহিদ এবং আইএসপিএবি পরিচালক সাকিফ আহমেদ।